ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

উজান স্রোতের সান্তিয়াগো

আঁখি সিদ্দিকা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৪৪, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
উজান স্রোতের সান্তিয়াগো

ছবি: বাংলা উইকিপিডিয়া

আঁখি সিদ্দিকা : মা’য়ের আলগোছ আদরে একটু একটু করে বেড়ে ওঠা আমি’র নতুন বইয়ের ভাঁজে তখনও কল্পনার ডানা। বিভাগীয় শহর হলেও মফস্বলীয় ছায়াঘেরা পাড়ার প্রায় বই শেষ করে কখন ষষ্ঠ শ্রেণীতে ওঠা হবে আর বড় আপুদের হাতে উঁকিঝুকি দিয়ে দেখা বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের লোগোওয়ালা বই পড়তে পারবো, এমন ভাবনায় ছোট্ট আঁখি দু’টির ঘুম যেন আসতে চাইতো না। দেখতে না দেখতে প্রাইমারীর চৌকাঠ পেরিয়ে হাইস্কুলের সেই মাহেন্দ্রক্ষণ উপস্থিত হলো। আর চোখ চকচক করে উঠলো নতুন বইয়ের লোভে। তারপর পাঁচটি বছর কে পায় আমাকে! কল্পনা আর বইয়ের পাতায় পাতায় দিনলিপি লেখা দিনগুলোর সঙ্গে জড়িয়ে গেলো একটি নাম- আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ।

দেখিনি তাকে কেমন তিনি! কেমন মানুষ! তারও কি আমার মতো পিপাসা পায়? সেও আমার মতো না ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখে? কতটা স্বপ্ন দেখলে আমার মতো এতো দূরের একটি মানুষের কাছে নতুন নতুন বই পৌঁছে দেয়; সব বইয়ে কত না মজার কথা, স্মৃতি, ভাবনা! আমার নিভৃত, খেলতে না-পারা জীবন বড় একাকী। একলা আমি অনেকটাই বন্ধুহীন। বন্ধু বলতে মা। মা-ই বই তুলে দিলেন আমার হাতে। আর ষষ্ঠ শ্রেণীতে ত্রিশ টাকা। বললেন, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের স্কুলসদস্য হতে। আরও বলে দিলেন, আগামী ১৫দিন আমি বরাদ্দকৃত টিফিনের ২টাকা পাবো না। মন্দ কি! সেবা প্রকাশনীর দোকানে যে আমি লুকিয়ে ৩ টাকা করে রেখে দুটি বই নিতাম। পুরোটা চেপে গেলাম মায়ের কাছে। সাত ক্লাশে প্রথম হওয়ার জন্য পুরস্কার পেলাম- ‘বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ও আমি’। পড়ি আর ভাবি- এভাবে হয় না কি? অবিশ্বাস্য! মা বললেন হয়। এই ঘটনা পৃথিবীতে এই প্রথম যে, কেউ বই নিয়ে আন্দোলন করছেন, সংগঠন করছেন। আমাদের বাড়িতে টিভি ছিলো না, টিপু সুলতান দেখতে কাজলদের বাড়ি যেতাম। শর্ত ছিলো সব পড়া রাত ৯টার মধ্যে শেষ করতে পারলেই কেবল দেখতে নিয়ে যাবে মা। টিপু সুলতানের ফাঁকে কোনো এক অনুষ্ঠানের বিজ্ঞাপনে এক পলক দেখালেন মা তারও প্রিয় ব্যক্তিত্ব আবদুল্লাহ আবু সায়ীদকে। খেলাধুলায় না থাকলেও সৃজনশীলতা আর মননশীলতায় একটু এগিয়ে থাকা আমি স্কুল বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র্রের প্রথম পুরস্কার পেয়ে গেলাম অষ্টম শ্র্রেণীতে। আমার মনে পড়ে অনেকগুলো বই নিচ্ছি আমি সেই মানুষটির কাছ থেকে, যাকে কেবল আমি স্বপ্নেই দেখেছি। সারা রাত ঘুম হলো না। হাত পা ঠান্ডা। প্রথম স্পর্শ। প্রথম এত্তোগুলো বই! আর হাত উঁচিয়ে একজন মানুষের সেই প্রদীপ উঁচিয়ে রাখার গল্প: ‘তোমাদের মশালগুলো যেন পলকের জন্যেও না নেভে’। একটা আমি দশটা আমি হয়ে গেলাম। সেদিন মনে হয়েছিলো আমি কি পারবো একটি মানচিত্র বদলাতে?

একজন লেখক বাবা সারাদিন লেখেন, আর ছোট্ট ছেলেটি তার লেখার টেবিলের পাশে বসে খুনসুটিতে মেতে ওঠে। বাবা কি একটা বড় কাগজে দেখেন আবার গোল করে রেখে দেন। তো বাবা একদিন কাজে বাইরে গেছেন। ছেলেটি সেই গোল কাগজটি খেলতে খেলতে ছিঁড়ে ফেললো। বাবা ফিরে এসে ছেলেকে খুব বকলেন। ছেলেটি মন খারাপ করে ঘুমিয়ে পড়লো। বাবা রাগ করে আবার বাইরে গেলেন। ছেলেটি উঠে কাগজটি জোড়া লাগানোর চেষ্টা করলো। বাবা ফিরে এলে ছেলে কাগজটি বাবার হাতে তুলে দিলো। বাবা অবাক! কি করে সম্ভব হলো এই দুঃসাধ্য! এ তো বাংলাদেশের মানচিত্র। এতোটুকু ছেলের মানচিত্রের কোথায় কী, কি করে বুঝলো? বাবা জানতে চাইলে ছেলেটি মানচিত্রের উল্টো পাশ ঘুরিয়ে দেখালো। সেখানে একটি মানুষের ছবি ছিলো। মানুষটিকে ছেলেটি রোজ দেখে, কোথায় নাক, কোথায় চোখ, কোথায় পা, কোথায় হাত। সেগুলো একপাশে জোড়া লাগিয়েছে, অন্যপাশের মানচিত্র জোড়া লেগে গেছে। কি আর্শ্চয একটি মানুষ তৈরিতে একটি মানচিত্র তৈরি হয়ে গেলো!

সেই স্কুল মাঠে প্রায় হাঁ হয়ে এই গল্প শুনতে শুনতে আমি সত্যি স্বপ্নের সমান বড় হয়ে উঠলাম। তারপর আর দেখা হয়নি, আর শুনিনি সেই মন্ত্রমুগ্ধ কথা! কেবল পড়ে যাওয়া। জীবন অনেক দূর এগিয়ে গেলেও, নিজেকে চেনা, জানা, বোঝা অনেকটা্ হলেও নিজের বোধের মুখোমুখি কোথাও যেন তৃষ্ণায় গলা বুজে আসতে চাইতো। চিন্তার জানালায় ততোদিনে মরিচা ধরার জোগাড় হয়ে যাওয়ার পথে। ছুটছি কেবল। বাঁচতে হবে। বেঁচে থাকার লড়াইয়ে ডানা ভাঙ্গা পাখির মতো ছটফটে আমি তখন অফিস ডেস্কে লুকিয়ে পত্রিকা পড়তে পড়তে চোখ আটকে গেলো সাদাকালো একটি বিজ্ঞাপনে: পাঠচক্র-২০০৮ বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র। আর দেরি নয়, মরচেগুলো ঘষে উঠাবার সিরিষকাগজ পেয়ে গেলাম যেন। ছুটে গেলাম। সাক্ষাৎকারে মাহমুদ হাশিম নামের একজন সমন্বয়কারী আর সেই মানুষটি সামনে। স্পষ্ট মনে আছে সেই দিন। অফিস ঠিকানায় আমার টিকে যাবার চিঠিও গেলো বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের গোছানো সুন্দর ছোট্ট খামে। আমি এক স্বপ্ন রাজ্যে ঢুকে পড়লাম যেন। স্বপ্ন আমাকে নতুন করে স্বপ্ন দেখালো যেন। অটুট বন্ধুত্ব। ভালোবাসা। আর সেই অসম্ভবকে সম্ভব করে তোলা প্রিয় মানুষটির প্রায় রোজ কথা শোনা। ক্লাসের বাইরেও পেলাম তার অপার স্নেহের ছায়া। ছায়াবৃক্ষ মানুষটি আলীবাবা চল্লিশ চোরের সেই চিচিং ফাঁক গল্পের মতো একটি জগত আমার সামনে খুলে দিলেন। শক্তিশালী সেই দৈত্যটি যেমন একটি ঘড়ায় আটকে ছিলো, আর জেলে তার ঘড়ার মুখটি খুলে দিলে সে বের হয়ে নিজের বড়ত্ব দাবি করে বাইরের আলোয় নিজেকে মুক্ত করলো। তেমনি স্যার যেন সেই জেলের মতো আমার মনের ঘড়ার দরজা আলগোছে খুলে দিলেন। এলো বন্ধুত্বের হাওয়া। এলো নানান বইয়ের চিন্তার আদান প্রদান। যে বইগুলো আমি একভাবে ভাবতাম, সেই একই বই অন্যজন অন্যভাবে ভাবছে। গন্তব্যহীন সেই জগতে আমার কেবল এক দঙ্গল বন্ধু নিয়ে ছুটে চলা শুরু হলো। আজ এখানে তো কাল সেখানে। বিষণ্নতা হৈ হৈ করে বেরিয়ে গেলো, হতাশারা গাল ফুলিয়ে পেছনের দরজা দিয়ে পালালো। আমি হয়ে উঠলাম একজন পাগল! স্যার উপাধি দিলেন ‘শ্রেষ্ঠ পাগল’।আর বন্ধুরাও তাতে সায় দিলো। ‘দি ওল্ড ম্যান অ্যান্ড দি সী’ পড়ার সময় সেই বৃদ্ধ সান্তিয়াগো’র চরিত্রে যেন আমি আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যারকে দেখতে পেলাম। অতিরিক্ত কবিতা পাঠের দ্বারা বিনষ্ট মানুষটি মাত্র ৩৫ টাকা নিয়ে তার যাত্রা শুরু করেছিলেন। তারই বন্ধুপ্রতিমের বাড়িতে গিয়ে ছাগলের রুমে ঘুমিয়েছিলেন, আর সারা দেশ হেঁটে কখনও সাইকেলে চেপে, কখনও ট্রেনে, কখনও গাড়িতে যেখানে খোঁজ পেয়েছেন, কেউ তাকে সহযোগিতা করতে চাইছে; চলে গেছেন সেখানে, একা। যুগের দাবির উত্তর দিতে গিয়ে সমুদ্রসমান বা তার চাইতেও বেশি নিগ্রহতার শিকার হতে হয়েছিলো তাকে। উনবিংশ শতাব্দী ধরে বাঙালির যেমন চলছিলো ধর্মের যুগ, উনিশ শতকের মাঝামাঝি থেকে বিশ শতকের চল্লিশের দশক পর্যন্ত যেমন চলছিল কবিতার যুগ, সাতচল্লিশ থেকে একাত্তর পর্যন্ত যেমন ছিল আমাদের জাতীয়তাবোধের যুগ, তেমনি একাত্তরের পর থেকে আমাদের চলছিল সংগঠনের যুগ। সেই যুগের দাবিতেই পুরো একটা আস্ত যৌবন থেকে আজ পর্যন্ত লড়াই করে চলেছেন এই অভাগা দুর্বল স্বাস্থ্যের বাঙালির জন্য, এই মানুষটি। স্বয়ম্ভূ ঈশ্বরের মতো জাগিয়ে রেখেছেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র। জাতীয় সমৃদ্দির কুচকাওয়াজে এই দুর্বল জাতি এ কারণে আজ পা মিলিয়ে হাঁটছে। নানান টানাপোড়েনে স্রোতে নিজেকে ভাসিয়ে না দিয়ে তার বিপরীতে হাল ধরে টেনে নিয়ে গেছেন গুন। আজও তার শক্ত হাত উষ্ণতা দেয় স্বপ্নপিপাসু সকল মানুষকে। নিষ্ফলা নয় সুফলা এক মাঠের সন্ধান দিতে চান রোজদিন এই কৃষক সান্তিয়াগো। বিস্ময়কর, অবিশ্বাস্য, দিপান্বিত এক শিল্পরূপ তার তিলতিল করে গড়ে তোলা এই সংগঠন। চারদিকে ছোঁক ছোঁক স্বার্থলিপ্সু অসুস্থ মানুষের ভিড়ে বনলতার মতো দু’দণ্ড শান্তি যে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র্রের ছাদের হাওয়া দেয় তা স্বীকার্য আজ সর্বজনে। ভেতরে ভেতরে আপাদমস্তক একজন কবি’র দেখা পেয়েছিলাম প্রথম এই বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে। তার আগে কবি মানেই আমার কাছে স্বপ্নচারণ পুরুষ বা নারী্। কবিরা অন্য কেউ। ঠিক বুঝি মানুষ না বা অন্যরকম মানুষ। একটু বোকা থাকার কারণেই বোধহয় ভাবনাগুলো ছিলো খ্যাপাটে। সেই কবি পড়ে গেলেন, বলে গেলেন তার কবিতার কথা । রাত যে গড়িয়ে মধ্যরাতে ঠেকেছে হুশ নেই কারও। না শ্রোতার না কবির। সেই শুভক্ষণে তার শব্দাবলীর একখানি দলিল তার স্বহ্স্তে লিখিত স্বাক্ষর নিয়ে আমার দু’হাতের ফাঁকে এসে পড়লো।

 

ঝলমল করে উঠলো-

                …আমার রক্তের মধ্যে

বাঙলার নাগেশ্বর নিয়েছে জন্ম;

চোখ বুজে কান পেতে আমি তাঁর পাতার শব্দ শুনি; বুঝি

হাওয়ার আদরে তারা নড়ে চড়ে;

বুনো নাকে সে গাছের ফুলেদের ঘ্রাণ পাই;

সে ফুলেরা আমার কবিতা।

শব্দাবলীর দলিল ‘মৃতময় ও চিরহরিৎ’ হাতে যে সাবলীল হেসে যাচ্ছিল শিশুর মতো আকণ্ঠ তার কবিতায় গলা কাঁপছিল যেন এই মাত্র কবিতায় চুবিয়ে আনা কোনো এক রাজাপুত্র।

     ‘লোকটাকে অনেকদিন দেখেছি জনাকীর্ণ রাস্তায়–

                তার সেই একাকী সাইকেল।

                ………………………………

                ক্ষিপ্র বেড়ালের মতো বেরিয়ে যায় তার সেই

                আশ্চর্য সাইকেল।

                স্বপ্নের মধ্যেও রক্তের ভেতর শুনি তার সেই উল্লসিত সাইকেলের

                বিরতিহীন মুখর শব্দ।

                অনুভব করি দুটো লম্বাটে ঝুলন্ত ক্লান্ত পা

                নিদ্রাহারা।

                                [আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ]


আশ্চর্য সাইকেলে চড়ে এলেন আমাদের উজান সোতের সান্তিয়াগো পৃথিবীর বিশাল গ্লোবটার বুকের ওপর। দিন রাত একই গতিতে ছুটে বেড়ালেন নিদ্রাহীন। কখনও দোয়েলের দেশে, খুব পাশে, বট পাতার আড়ালে, কখনও দূরে, বিস্রস্ত মাটিতে, নৌকার গুলইয়ে বসে অলস দুপুরে, ক্ষমাহীন ইঞ্জিনের ক্রোধ ঠেলে বেরিয়ে এলেন। আবহমান বাংলার কণ্ঠস্বরে কণ্ঠ রেখে জোর গলায় বললেন – ‘জাগো বাহে, কোনঠে সবাই’। ব্যথিত সাতাশকে পেছনে ফেলে রুপালি আকাশে পাখা মেললেন রক্তদীর্ণ শঙ্কার শিকার কবি আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ।

অনুচ্চকিত আজন্মের আঙ্গুলের ট্রিগার ছড়িয়ে দিলেন আরও তার লিখে যাওয়া বইয়ের ভাঁজে। বিস্রস্ত জার্নালের মমতায় ওড়ালেন ভালোবাসার সাম্পান। বহে জলবতী ধারা আবার নিষ্ফল হয়নি একবারের জন্যেও নিষ্ফলা মাঠের কৃষকে। উপস্থাপক স্যারকে আমি না চিনলেও চিনে নিলাম উপস্থাপক জীবনে। আমার আশাবাদে আশা রাখলাম একজন সংগঠক বাঙালী স্যারের উত্তরসূরী হয়ে। স্যার প্রায়ই মহাভারত থেকে একটি কথার রেফারেন্স টেনে বলতেন: ‘উত্তম গুরু তখনই যখন তার শিষ্যরা তাকে ছেড়ে চলতে পারে’। খুব সাহস নিয়ে হাশিম ভাই আমাকে মনে করিয়ে দিলেন সেদিন কথায় কথায়, স্যার কি উত্তম গুরু হয়ে গেলেন, আমরা যে বড় তাকে ছাড়াই চলছি। হয়তো হাশিম ভাইয়ের কথাই ঠিক। তিনি কেবল দিয়ে চলেছেন আমাদের। রেখেছেন অতি যত্নে তার প্রতিভাময় আঙ্গুলের ছায়ায়। প্রথম সমুদ্র দেখা এই আঙ্গুল ধরে। সবাই যখন সমুদ্রে নেমে হৈহৈ করছে, আর আমি বোকার মতো সমুদ্রের পাশে এতোটুকু হয়ে বসে আছি, কোথা থেকে এগিয়ে এলো এই আঙ্গুলগুলো। বললেন, চলো তুমিও নামবে। আমি একজন বড় সমুদ্রের হাত ধরে বিশাল সমুদ্রের বুকে পা রাখলাম। সেই বোধ ভাষাতীত। ভাব যেখানে গভীর ভাষা বোধহয় সেখানে অচল। গড়গড় করে সবাই যখন পাহাড়ে উঠে যাচ্ছিলো, এই মানুষটি দাঁড়িয়ে থাকলেন আমার জন্য, আমি উঠতে পারবো না বলে। তখন পাংশু মুখখানি দেখে বললেন, শুরু করা যাক। প্রথম পাহাড় দেখার সঙ্গে সঙ্গে সেই পাহাড়ে ওঠা আজও আমায় মাথা উঁচু রাখতে শিখিয়েছে। অপূর্ব সবুজের মুগ্ধতায় আমার ভিজে যাওয়া চোখগুলো কবি বন্ধু স্যারের জন্য আরও একবার ভেসেছিলো জীবনের গানে।

নিঃশব্দে বয়সের অন্ধকারে কি ক্ষয়ে যাবেন উজান স্রোতের সান্তিয়াগো? কখনোই তা হবে না। পাতারা নিঃশব্দে খসে যায়। উদ্যত বল্লমে চিরযৌবনের স্বপ্নস্নায়ু জীবনের মিছিলেই থাকবেন  প্রদীপ উঁচিয়ে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯/তারা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়