ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

এ নৈরাজ্য বন্ধ হওয়া প্রয়োজন

এনএ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:১৯, ৭ ডিসেম্বর ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
এ নৈরাজ্য বন্ধ হওয়া প্রয়োজন

সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচলের ক্ষেত্রে নৈরাজ্য বন্ধ হচ্ছে না কিছুতেই। রাজধানীতে চলাচলকারী অটোরিকশা ও ট্যাক্সি ক্যাবের ভাড়া নিয়ে কোন শৃংখলা নেই। চালকরা যে যেভাবে পারছেন ভাড়া নিচ্ছেন যাত্রীদের কাছ থেকে। এ নিয়ে জনমনে ক্ষোভ, হতাশা দিন দিন বাড়ছে। বিভিন্ন সময়ে কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে ভাড়া নির্ধারণ করে দেওয়া হলেও তার বাস্তবায়ন হয় না। যাত্রীরা অটোরিকশাচালকদের কাছে অনেকটা জিম্মি হয়ে আছেন।

 

শুধু অটোরিকশা বা ক্যাব নয়, সামগ্রিকভাবে রাজধানীতে গণপরিবহনে কোনো শৃংখলা নেই। ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্যতো আছেই। গণপরিবহন হওয়া উচিৎ এমন- নির্দিষ্ট সময় অন্তর নির্ধারিত স্টপেজে বাস আসবে আবার যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যাবে। যাত্রী যতজনই থাক দেরি করা যাবে না। কিন্তু দেখা যাচ্ছে মহানগরে লক্কড়-ঝক্কড় বাস-মিনিবাস চলছে দেদারসে। চালকরা ঠাসাঠাসি করে যাত্রী তুলছেন। ভাড়া আদায় করছেন ইচ্ছেমতো। এদিকে পরস্পরের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে গাড়ি চালাতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটাচ্ছেন। কখনো ফুটপাতে উঠে যাচ্ছে বাস, চাপা দিয়ে মানুষ মারছে। কখনো সড়কের মাঝে রেলিং ভেঙে আইল্যান্ডে উঠে পড়ছে।

 

সম্প্রতি বেসরকারি সংস্থা যাত্রী কল্যাণ সমিতি তাদের এক পর্যবেক্ষণে বলেছে ৮৬ শতাংশ অটোরিকশাচালক চুক্তি ভিত্তিতে গাড়ি চালাচ্ছেন। তারা এ ব্যাপারে যাত্রীদের বাধ্য করছেন। সরকার-নির্ধারিত ভাড়া যা-ই থাক না কেন, যাত্রীদের চুক্তি অনুযায়ী ভাড়া মেটাতে হয়। কেউ কেউ মিটারে গেলেও ভাড়ার সঙ্গে বকশিশ দাবি করছেন ৯৭ শতাংশ। ৮২ শতাংশ চালক যাত্রীদের পছন্দের গন্তব্যে যেতে রাজি হচ্ছেন না।

 

এই সমিতি সায়েদাবাদসহ ৪০টি এলাকায় এক পর্যবেক্ষণে ২ হাজারেরও অধিক অটোরিকশার ওপর জরিপ চালিয়ে এ তথ্য পেয়েছে। বছর খানেক আগে চালক-মালিকদের চাহিদা মেনে ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়ানো হলেও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। এর ফলে ভোগান্তিতে পড়ছেন যাত্রীরা। আবার চাহিদার তুলনায় অটোরিকশা কম থাকায় বেশি ভাড়ায় গন্তব্যে যেতে বাধ্য হচ্ছেন যাত্রীরা।

 

তবে এর পাল্টা বক্তব্য আছে চালকদের। কর্তৃপক্ষ প্রতিদিনের জমা ৯০০ টাকা নির্ধারণ করে দিলেও মালিকেরা তার দ্বিগুণ আদায় করছেন তাদের কাছ থেকে। এছাড়া বিভিন্ন জায়গা থেকে যাত্রী ওঠানোর জন্য ১০ থেকে ২০ টাকা হারে চাঁদা দিতে হয়। ফলে মিটারে গেলে তাঁদের পোষায় না।

 

কিন্তু এ অবস্থা আর কতদিন চলবে? আর কতকাল ভুগতে হবে নাগরিকদের। গণপরিবহন ক্ষেত্রে এ নৈরাজ্য বন্ধে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। কোন চালক মিটারে না গেলে তার নিবন্ধন বা রুট পারমিট বাতিল করার বিধান রয়েছে। বাস্তবতা হচ্ছে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তা কার্যকর হয় না।

 

বিআরটিএকে এসব বিষয়ে কড়া নজর দেওয়া প্রয়োজন। রুট পারমিট বাতিলের পাশাপাশি জেল-জরিমানার ব্যবস্থাও করতে হবে। আর যেসব মালিক দ্বিগুণ হারে জমা আদায় করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। বাস-মিনিবাসগুলো যেন নির্ধারিত স্টপেজ ছাড়া যাত্রী না তোলে, গন্তব্য অনুযায়ী নির্ধারিত হারের বেশি ভাড়া যাতে আদায় না করে সেসব বিষয় নিশ্চিত করা প্রয়োজন। বেপরোয়া গাড়ি চালকদের বিরুদ্ধে নিতে হবে কঠোর ব্যবস্থা।

 

 

রাইজিংবিডি/৭ ডিসেম্বর ২০১৬/এনএ/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়