ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

সঙ্কটে কৌশল পাল্টেছে জঙ্গিরা

মাকসুদুর রহমান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:০৬, ২০ মার্চ ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সঙ্কটে কৌশল পাল্টেছে জঙ্গিরা

নিজস্ব প্রতিবেদক : কৌশল পাল্টেছে নব্য জেএমবির জঙ্গিরা। আগ্নেয়াস্ত্র-গোলাবারুদের সঙ্কটে জঙ্গিরা এখন আত্মঘাতীতে রূপ নিয়েছে।

এক্ষেত্রে ত্রিশাল থেকে ছিনিয়ে নেওয়া জেএমবি নেতা বোমারু মিজানসহ আরও কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছে বলে গোয়েন্দাদের কাছে তথ্য আছে। তবে জঙ্গিদের পেছনে পুলিশ লেগে আছে বলে শীর্ষ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে জঙ্গিবাদ শীর্ষক এক অনুষ্ঠান শেষে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) একেএম শহীদুল হক রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার পর পুলিশ ব্যাপক ধরপাকড় করে। পুলিশের অভিযানে অনেক জঙ্গি মারাও গেছে। এ কারণে অনেকদিন তারা নিয়ন্ত্রণে ছিল। কিন্তু এখন তারা আবার সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে। তবে তারা বড় ধরনের হামলার সক্ষমতা হারিয়েছে। নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত পুলিশ তাদের পেছনে লেগে আছে। একই সঙ্গে জঙ্গিদের পুরো নেটওয়ার্ক এখন পুলিশের জানা।’

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর কেন হামলা করছে জঙ্গিরা? এমন প্রশ্নের জবাবে পুলিশ প্রধান বলেন, ‘মনোবল ভাঙতেই জঙ্গিরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের টার্গেট করতে পারে। বরং এসব হামলার কারণে পুলিশসহ সরকারের সংস্থাগুলো আরও জোরালোভাবে জঙ্গিবিরোধী অভিযান পরিচলনা করছে।’

জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট নিবিড়ভাবে কাজ করে চলেছে সারাদেশে।

ইউনিটটির প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘জঙ্গিরা কোথা থেকে, কার কাছ থেকে অস্ত্র-গোলাবারুদ সংগ্রহ করছে, কীভাবে আসছে এবং কোথায়-কোথায় থাকতে পারে- তার সব তথ্য প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। এ কারণে এগুলো তারা আগের মতো সংগ্রহ করতে পারছে না। এ কারণে জঙ্গিরা কৌশল পাল্টে আত্মঘাতী হতে পারে বলে শঙ্কা করা হচ্ছে।’

যেকোনো সময় তারা বড় ধরনের হামলা করতে পারে কিনা? রাইজিংবিডির প্রশ্নের জবাবে মনিরুল বলেন, ‘তারা আর আগের মতো নাশকতা করতে পারবে না। কেননা প্রতিনিয়ত জঙ্গিবিরোধী অভিযানই নয়, নজরদারিতে আছে তারা।’

কাউন্টার টেররিজম সূত্রে জানা গেছে, গত বছর ২৭ ডিসেম্বর আশকোনার জঙ্গি আস্তানায় অভিযানের পর তদন্তে বেরিয়ে আসে জঙ্গিরা এখন সুইসাইডাল স্কোয়াড বা আত্মঘাতী হামলার পরিকল্পনা করছে। ওই সময় শরীরে বেঁধে রাখা আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণে জঙ্গিনেতা তানভীর কাদেরীর ছেলে শহীদ কাদেরী এবং পলাতক জঙ্গিনেতা রাশেদুর রহমান সুমনের স্ত্রী শাকিরা মারা যায়। প্রতিদিনই জঙ্গিরা হামলার জন্য কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছে বলে তথ্য থাকলেও এর মধ্যেই আত্মঘাতী জঙ্গিরা বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে বলে গোয়েন্দা তথ্য আছে। শুক্রবার আশকোনায় র‌্যাবের সদর দপ্তরের নিমার্ণাধীন কার্যালয়ে এক আত্মঘাতী ঢুকে পড়ে। এ সময় তার কোমরে বাঁধা বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। বড় ধরনের নাশককতার পরিকল্পনা হামলাকারীর ছিল বলে গোয়েন্দারা সন্দেহ করছে। পরদিন খিলগাঁও এলাকায় পুলিশের গুলিতে এক সন্দেহভাজন জঙ্গি নিহত হয়। এ সময় তারও কাছ থেকে তিনটি বোমাসহ কোমরে বেঁধে রাখা একটি বেল্ট উদ্ধার করা হয়। এছাড়া গত সপ্তাহে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে জঙ্গি আস্তানা থেকে ১৮টি সুইসাইডাল ভেস্ট উদ্ধার করা হয়। যেগুলো দিয়ে বড় ধরনের হামলার পরিকল্পনা জঙ্গিদের ছিল বলে পুলিশ কর্মকর্তারা সন্দেহ করছেন।

সরকারের একটি উচ্চ পর্যায়ের গোয়েন্দা সূত্র বলছে, ময়মনসিংহের ত্রিশাল থেকে ছিনতাই করে নেওয়া বোমারু মিজানই জঙ্গিদের বোমা তৈরি এবং হামলার সব কৌশল পরিচালনা করছে। তার সঙ্গে আরও ১৫ থেকে ২০ জন আছে। যারা দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে আছে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২০ মার্চ ২০১৭/মাকসুদ/মুশফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়