ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

সবার জন্য পেনশন সুবিধার উদ্যোগ

মোহাম্মদ নঈমুদ্দীন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৪৮, ৭ জুন ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সবার জন্য পেনশন সুবিধার উদ্যোগ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : সরকারি পেনশন কার্যক্রমের বাইরে বেসরকারি পর্যায়ে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক খাতে কর্মরত সব কর্মজীবী মানুষের জন্য সার্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালুর উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে সবার জন্য পেনশন সুবিধা চালুর এই প্রস্তাব দেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

এমন প্রস্তাবনা দিয়েই বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে তিনি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করেন।

সার্বজনীন পেনশন সুবিধার কথা ঘোষণা করে অর্থমন্ত্রী বলেন, এবার বাস্তবায়ন হয়তো সামান্য শুরু হবে। সার্বজনীন পেনশনে পেনশন সবার জন্য সমান হবে। সার্বজনীন পেনশনে সব পেনশনার পেনশনের জন্য কন্ট্রিবিউট করবেন; শুধু যারা গরিব তারা ছাড়া সবাই। এক্ষেত্রে গরিবের সীমারেখা নির্ধারণ করতে হবে খাদ্যে নিম্নতম ক্যালোরিসীমা ঠিক করে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশের মোট বয়স্ক জনসংখ্যার মধ্যে পেনশনভোগীর সংখ্যা অতি সামান্য। শুধু সরকারি কর্মচারী এবং কতিপয় বেসরকারি সংস্থার কর্মচারীরা সর্বমোট প্রায় ৭ থেকে ৮ লাখ পরিবার বর্তমানে নিয়মিত পেনশন পেয়ে থাকেন। অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীদের বাইরে হতদরিদ্র ৩৫ লাখ লোক মাসিক ৪০০ টাকা হারে বয়স্ক ভাতা পাচ্ছেন, যা মোট বয়স্ক জনসংখ্যার এক-চতুর্থাংশ মাত্র।

তিনি বলেন, তাদের ভাতার পরিমাণও মানসম্মত জীবনধারণের পক্ষে যথেষ্ট নয়। লক্ষণীয় যে, জনমিতির স্বাভাবিক ধারায় এক সময় উন্নত দেশের মতো আমাদের দেশেও বয়স্ক জনগোষ্ঠীর অনুপাত বাড়বে। তখন স্বাভাবিক বাজেট বরাদ্দের আওতায় তাদের সহায়তা প্রদান করা দুরূহ হয়ে পড়বে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা অর্থনেতিক প্রবৃদ্ধির সুফল সবার কাছে পৌঁছাতে চাই, কমাতে চাই বৈষম্য। তাই, বিদ্যমান সরকারি পেনশন কার্যক্রমের বাইরে বেসরকারি পর্যায়ে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক খাতে কর্মরত সব কর্মজীবী মানুষের জন্য সার্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু করতে চাই।

তিনি বলেন, প্রস্তাবিত ব্যবস্থার আওতায় সরকার পরিচালিত স্কিমে নিবন্ধন করে একজন কর্মজীবী মাসিক ভিত্তিতে নির্দিষ্ট পরিমাণ চাঁদা জমা করবে। প্রযোজ্য ক্ষেত্রে তার নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষও একটা নির্দিষ্ট অঙ্ক সংশ্লিষ্ট কর্মজীবীর পেনশন হিসাবে জমা করবে। হতদরিদ্র শ্রমজীবীদের ক্ষেত্রে তাদের অংশের অতিরিক্ত হিসেবে সরকার পূর্বঘোষণা অনুযায়ী নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ ওই হিসাবে জমা করবে। এ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে গঠিত তহবিল বিনিয়োগ থেকে প্রাপ্ত আয় সার্বজনীন পেনশন তহবিলে জমা হতে থাকবে। ক্রমপুঞ্জিভূত চাঁদা ও আয়ের পরিমাণের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি অবসরকালে মাসিক পেনশনপ্রাপ্ত হবেন।

তবে সার্বজনীন পেনশন প্রবর্তনের জন্য মৌলিক কাঠামোগত সংস্কার প্রয়োজন হবে, যা সময় ও ব্যয়সাপেক্ষ ব্যাপার। সরকারি কর্মচারী ও জনগণের মধ্যে সুযোগের ন্যায্যতা ও সামঞ্জস্য বিধান করার জন্য উপযুক্ত কর্মপরিকল্পনা, ধারাবাহিক কৌশলগত পরিবর্তন, প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো সৃজন, কারিগরি সক্ষমতা ও যথাযথ নীতি-কৌশল প্রণয়ন করা প্রয়োজন। সার্বিক বিষয় বিবেচনায় নিয়ে বেসরকারি পর্যায়ে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক কাজে নিয়োজিত সকল কর্মজীবী মানুষের জন্য একটি টেকসই সার্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা প্রবর্তনের কাজ এ অর্থবছরেই শুরু করার আশা রাখি। অন্ততপক্ষে কয়েকটি নির্দিষ্ট এলাকায় পরীক্ষামূলক উদ্যোগ হিসেবে সার্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু করার ইচ্ছা আছে- বলেন অর্থমন্ত্রী।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৭ জুন ২০১৮/নঈমুদ্দীন/মুশফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়