ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

লেখকের অটোগ্রাফ-এক

স্বপ্নবাজ সুমন্ত আসলাম

ফাতমা খান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৫৬, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৪   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
স্বপ্নবাজ সুমন্ত আসলাম

সুমন্ত আসলাম

ফাতমা খান
ঢাকা, ৮ ফেব্রুয়ারি : সুমন্ত আসলাম। এখনকার তরুণ পাঠকের কাছে ‘প্রিয় লেখক’ নাম এটি। দু’চোখ ভরা স্বপ্ন তার। দেশ, জাতি, সমাজ, মানুষ সবাইকে নিয়েই তিনি স্বপ্ন দেখেন। সবার ভালো থাকার স্বপ্ন দেখেন। অনেক ভালোবাসা নিয়ে স্বপ্ন দেখেন। আর, সে সব স্বপ্নের বীজ তিনি বপন করেন পাঠকের মনেও। তাইতো কাছের বন্ধুরা তাকে বলে স্বপ্নবাজ।

লেখালেখির শুরু সম্পর্কে জানান, ‘লেখালেখির শুরু ঢাকায় আসার পরে। ‘মৌচাকে ঢিল’ (যায় যায় দিনেরও আগে প্রকাশ হত) শিরোনামের পত্রিকায় গল্প ছাপা হত। সেই গল্প পড়ে এবং সেবা প্রকাশনীর কিশোর পত্রিকা পড়ে পড়ে মনে হলো আমিও গল্প লিখতে পারবো। এটা ১৯৯৬ সালের দিকের কথা। তখন ভোরের কাগজের পাঠক ফোরাম ছিলো। সেই পাঠক ফোরামে ভালো লেখার জন্য ১০০ টাকার প্রাইজবন্ড পুরস্কার দেয়া হতো। আমি পরপর কয়েকবার সেই পুরস্কার পেয়ে গেলাম। তখন মনে হলো আমার লেখা মানুষ পছন্দ করবে। সুতরাং, লেখালেখিটা করাই উচিৎ। মূলত সেই থেকেই শুরু। আর প্রথম বই প্রকাশ হয়েছিলো সময় প্রকাশন থেকে। ছোটগল্পের বই ‘স্বপ্নবেড়ি’।”

সুমন্ত তার পেশা সম্পর্কে জানান, লেখালেখিই এখন তার পেশা। নেশাও। কারণ, এই কাজটাকে অনেক উপভোগ করেন তিনি। এক সময় জড়িয়ে পরেন সাংবাদিকতায়। দেশের জনপ্রিয় একটি সংবাদপত্রে কাজ করেছেন দীর্ঘদিন। এখনও কাজ করছেন সংবাদপত্রেই। তার মতে সাংবাদিকতার সবচেয়ে ভালো দিক হচ্ছে, এই পেশায় থেকে মানুষের অনেক উপকার করা সম্ভব। অনেক পেশার মানুষের পক্ষেই যা করা সম্ভব হয় না।

নতুনদের সম্পর্কে তিনি বলেন, এখনকার তরুনদের যে বিষয়টি হয়েছে তা হচ্ছে তারা ইচ্ছে করলেই বই বের করে ফেলতে পারছেন। ফলে এর মর্মটা অনুধাবন করতে পারছেন না। বিষয়টা হয়েছে কি, আমি যদি ইচ্ছে করলেই আকাশ ছুঁতে পারি তবে তো আমার আকাশ ছোঁয়ার আনন্দই থাকবে না। এখনকার লেখকদের ক্ষেত্রেও বিষয়টি এমনই হয়েছে।

তবে, নতুনদের লেখা পরতে আমার ভালো লাগে। আর একটা ব্যাপার হচ্ছে আমি যে লেখাই পরি না কেন যদি প্রথম অংশটা পরে আমার ভালো লাগে তবে আমি সম্পূর্ণ লেখাটাই পড়ি। সেটা যার লেখাই হোক আর যে কোন ধরণের লেখাই হোক না কেন।

এবারের মেলায় তার লেখা বই প্রকাশ হচ্ছে মোট নয়টি। যার মধ্যে তিনটি উপন্যাস, দু’টি কিশোর উপন্যাস, রম্য-বিদ্রুপ আর গল্পের বই একটি করে এবং দু’টি সমগ্র।

এবারের মেলা প্রসঙ্গে তিনি রাইজিংবিডিকে বলেন, আসলে প্রত্যেকটা জিনিস প্রথম যখন শুরু হয় তখন একটু সমস্যা হয়। সমস্যাটা এবারের বইমেলার ক্ষেত্রেও হচ্ছে। কারণ, এই বছরেই প্রথমবারের মত বইমেলা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্প্রসারিত করা হয়েছে। সুতরাং, মানুষে এই বিষয়টির সঙ্গে স্বাভাবিকভাবেই মানিয়ে নিতে একটু সময় লাগবে। যেমন, এবারের সমস্যা হচ্ছে পাঠক প্রথমেই ঢুকে যদি শাহবাগ থেকে ঢোকে তাহলে ডানদিকে ঢুকছে, আর যদি দোয়েল চত্বর থেকে আসে তাহলে আগে বামদিকে ঢুকছে। অর্থাৎ, তারা পুরানো অভ্যাসমত বাংলা একাডেমিতেই আগে ঢুকছে। কিন্তু ঢুকেই তারা প্রথমে একটু হোঁচট খাচ্ছে। একাডেমি প্রাঙ্গনে অন্যান্য প্রকাশনাগুলো কোথায়? বিশেষ করে নামী প্রকাশকগুলো কোথায়? তখন তারা বুঝতে পারছে যে মেলাটা ওইদিকে চলে গেছে। সোহরাওয়ার্দীতে চলে গেছে। এই বিষয়টার সঙ্গে মানুষ অভ্যস্থ হয়ে গেলে আশা করা যায় আর কোন সমস্যা হবে না। প্রথম চারদিনে আমি এমনটাই দেখেছি। কিন্তু তারপর থেকে আবার খেয়াল করলাম, লোকজন ঠিকই আবার সোহরাওয়ার্দীতে ঢুকেছে। তো এইটা হচ্ছে চারদিনের অভ্যাসের একটা ব্যাপার। সবমিলিয়ে এই ব্যাপারটা মনে হয় অনেকটাই কেটে গেছে। আর একটা ব্যাপার, মেলাটা দু’ভাগ হওয়ার ফলে কোন প্রভাব পরেছে কিনা। আমার মনে হয় কোন প্রভাবই পরেনি। কারণ, এপাশ থেকে

সবমিলিয়ে ভালোই লাগছে। সবচেয়ে বড় কথা, স্টলগুলোকে এত চমৎকারভাবে সাজানো হয়েছে, একদিক দিয়ে পাঠক ঢুকলে যেকোন রাস্তা দিয়েই বের হোক না কেন প্রতিটা স্টল তার দেখা হয়ে যাবে। এটা বাংলা একাডেমিতে কোনভাবেই সম্ভব ছিলো না।   

জানালেন তার বাসায় এখন একটা লাইব্রেরি আছে সাড়ে তিন হাজার বইয়ের সংগ্রহ। তার স্বপ্ন সেখানে আর সারা দেশেই এমন লাইব্রেরি করার। ইতোমধ্যেই এই স্বপ্নের বাস্তবায়নের কাজ শুরু  করেছেন বলেও জানান তিনি। লাইব্রেরিকে ঘিরে এখন অনেক ব্যস্ততা। এ বিষয়ে কিশোর পাঠকদের  জন্য একটি চমক নিয়ে আসছেন তিনি। যার জন্য পাঠকদের অপেক্ষা করতে হবে আগামী স্বাধীনতা দিবস পর্যন্ত।

 

 

রাইজিংবিডি / ফাতমা খান / রাশেদ শাওন

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়