সড়ক পাকাকরণে উপড়ে গেল অর্ধশত গাছ
মাওলা সুজন || রাইজিংবিডি.কম
নোয়াখালী প্রতিনিধি : নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার এলজিইডির আওতায় নলুয়া ভূঞারহাট-মিয়ারহাট সড়ক পাকা করতে গিয়ে সামাজিক বনায়নের অর্ধশত গাছ উপড়ে গেছে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে গাছগুলো উপড়ে পড়েছে বলে মনে করছে স্থানীয়রা।
বিষয়টির কিছুই জানে না স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ও বন বিভাগ কর্তৃপক্ষ। এলজিইডি কর্তৃপক্ষ নিয়মিত কাজের তদারকি না করার কারণে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কাজে অনিয়ম করছে বলে মনে করছে স্থানীয়রা।
গত কয়েক মাস ধরে উপজেলার ৩নং ধানসিঁড়ি ও ২নং সুন্দলপুর ইউনিয়নের অংশে নলুয়া ভূঞারহাট-মিয়ারহাট সড়কটির পাকাকরণের কাজ চলছে। প্রায় ছয় কিলোমিটারের এ সড়কের ইতোমধ্যে ভূঞারহাট থেকে উত্তরে দিকে দুই কিলোমিটার ও মিয়ারহাট থেকে দক্ষিণ দিকে দুই কিলোমিটারের মতো কাজ শেষ হয়েছে। বর্তমানে কাজ চলছে সড়কের মাঝ পথে নলুয়া গ্রামের অংশে।
সরেজমিন দেখা গেছে, সড়কের ভেতরে কেটে বালি ফেলা হয়েছে। সড়কের পাশের গাছগুলোর বেশিরভাগেরই শেকড় কাটা রয়েছে। ননা মিয়ার দোকানের পূর্ব পাশে কালভার্ট সংলগ্ন সামাজিক বনায়নের বহু গাছ উপড়ে পড়ে রয়েছে। গাছগুলোর মধ্যে রয়েছে কড়ই, নাটাই, মেহগনি ও বাবুল (স্থানীয় ভাষায়) গাছ।
স্থানীয় উপকারভোগীরা জানান, সড়কের পাকা করণের কাজ চলাকালে রাস্তার পাশের সামাজিক বনায়নের প্রায় সবগুলো গাছের শেকড় কাটা পড়েছে এবং গাছগুলো আগামী এক-দুই বছরের মধ্যে মরে যাবে। অপরদিকে, গত ১৫-২০ দিন পূর্বে ননা মিয়ার দোকানের পাশের কালভার্ট সংলগ্ন সড়কের মাটি কাটার সময় গাছগুলো উপড়ে পড়ে যায়। কিন্তু এ নিয়ে এলজিইডির মাথা ব্যথা নেই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার বিভাগের কবিরহাট উপজেলা প্রকৌশলী মো. আমিরুল ইসলাম বলেন, সড়ক করতে গিয়ে সামাজিক বনায়নের গাছ উপড়ে পড়ার বিষয়টি তিনি জানেন না। তবে খোঁজ নিয়ে তা বন বিভাগকে অবহিত করবেন।
স্থানীয়রা বলেন, সড়কের দুই পাশে কয়েক হাজার গাছ আছে। দেখা গেছে সড়ক পাকা করতে গিয়ে অসংখ্য গাছের বড় বড় শেকড় কাটা পড়েছে। আবার কোনো কোনো অংশে অনেকগুলো গাছ উপড়ে পড়ে গেছে।
বন বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা জানান, সড়কটির দুইপাশে সামাজিক বনায়নের আওতায় কয়েক হাজার গাছ লাগানো রয়েছে। উন্নয়ন বা কাঁচা সড়ক পাকাকরণের কাজ হাতে নিলে নিয়ম অনুযায়ী সড়ক কর্তৃপক্ষ বন বিভাগকে অবহিত করার কথা। তাহলে যে অংশের গাছ কাটার দরকার সেগুলো টেন্ডারের মাধ্যমে কাটার ব্যবস্থার পরই সে সড়কে উন্নয়ন কাজ করার কথা। কিন্তু এলজিইডি কর্তৃপক্ষ গাছ কাটা পড়ার বিষয়টি বন বিভাগকে জানায়নি। তাছাড়া সামাজিক বনায়নের উপকারভোগীরাও তাদের অবহিত করেননি।
জানতে চাইলে কবিরহাট উপজেলা বন কর্মকর্তা আনিছুর রহমান জানান, প্রথম দিকে তারা বিষয়টি জানতে না পারলেও পরে জানতে পেরেছেন। এখনই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
রাইজিংবিডি/নোয়াখালী/১০ জানুয়ারি ২০১৭/মাওলা সুজন/বকুল
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন