কড়া পাহারায় যুব ক্রিকেটার পিনাক ঘোষ!

ইয়াসিন হাসান, কক্সবাজার থেকে : সচরাচর ফিক্সিং ইস্যুতে ক্রিকেটারদের কড়া পাহারায় রাখেন কোচ, ট্রেনার, ফিজিও কিংবা টিম ম্যানেজমেন্ট। দায়িত্বে থাকেন আইসিসির দুর্নীতি দমন ও নিরাপত্তা ইউনিট (আকসু)।

 

‘ভদ্র’ লোকের খেলা ক্রিকেটে কোনো প্রকারের দুর্নীতি কোনোভাবেই মেনে নেয় না আইসিসি। শাস্তিও পেতে হয়েছে ক্রিকেট বিশ্বে অলোড়ন তৈরী করা বিভিন্ন ক্রিকেটারকে। পাকিস্তানের পেসার মোহাম্মদ আমির শাস্তি ভোগ করে আবারও ক্রিকেটে ফিরেছেন। সালমান বাট কিংবা মোহাম্মদ আসিফের নিষেধাজ্ঞা শেষ হলেও এখনো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরতে পারেননি। বাংলাদেশের মোহাম্মদ আশরাফুল ফিক্সিংয়ে জড়িয়ে ক্যারিয়ার থেকে মূল্যবান বেশ কয়েকটি বছর বিসর্জন দিচ্ছেন। তারা সবাই কড়া পাহারায় থেকেও ফিক্সিংয়ে জড়িয়ে ভুল পথে পা বাড়িয়েছেন।

 

বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ক্রিকেটার পিনাক ঘোষকেও কড়া পাহারায় রেখেছে টিম ম্যানেজমেন্ট। উঠতি এ ক্রিকেটার আবার ফিক্সিংয়ে জড়িয়ে পড়লেন না তো! চোখ কপালে উঠার উপক্রম। কিন্তু সেরকম কিছুই হয়নি প্রতিভাবান এ ক্রিকেটারের সঙ্গে।

 

ফাস্ট ফুডের মোহ এতটাই বেশি পিনাকের যে, তাকে কড়া নজরদারিতে রাখা হয়েছে। ‘নো ফাস্ট ফুড’- ঘোষিত এ বার্তা প্রতিবারই মনে করিয়ে দিচ্ছেন কোচ, ট্রেনার কিংবা ফিজিও। বর্তমান দলের সঙ্গে থাকা পরামর্শক স্টুয়ার্ট ল’ও এ থেকে বাদ পড়েননি।

 

টিম ম্যানেজমেন্টের দাবি, প্রতিভাবান এ ক্রিকেটারকে কোনোভাবেই হারাতে চায় না বিসিবি। এ জন্য কড়া পাহারায় রাখা হয়েছে তাকে। ‘চোর-পুলিশের’ খেলায় চোর চুরি করবে এটাই স্বাভাবিক! পিনাকের ক্ষেত্রেও তা হয়েছে। লুকিয়ে ফাস্ট ফুড খেতে গিয়ে ধরা পড়েছেন। কিন্তু মোহ কাটিয়ে উঠতে পারছেন না।

 

পিনাক বলেন, ‘পাহারা আমার জন্যে সব সময়ই থাকে। কোচ, ট্রেনার, সবাই অনেকভাবে আমাকে পাহারা দেওয়ার চেষ্টা করে। স্যান্ডউইচ, বার্গার, চিকেন খেতে দেয় না। চুরি করে মাঝে মাঝে খেয়ে ফেলি। মাঝে মাঝে ধরাও খাই। চুরি করে যখন খাই তখন যদি এসে পরে লুকাতে গিয়ে ধরা খাই। জিজ্ঞেস করে, ‘কি খাচ্ছিস দেখি?’ তখনই দেখিয়ে দেই।’

 

২০১৫ সালের জুন-জুলাইয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা সফর করেছেন পিনাক ঘোষ। ওই সফর দিয়ে লাইমলাইটে আসেন পিনাক। সে সময় তার ফিটনেস নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল অনেকেই। স্বাস্থ্যবান হওয়ার কারণে শতভাগ সামর্থ্য না দেওয়ার কথা নিজ থেকেই জানিয়েছিলেন পিনাক। তবে তার দাবি, ধীরে ধীরে হাই লেভেলে ক্রিকেট খেলার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করছেন। এ জন্য টিম ম্যানেজমেন্টকে ধন্যবাদ না দিয়ে পারেননি পিনাক, ‘আসলে আমার ফিটনেস কম। হাই লেভেলে ক্রিকেট খেলতে যেই ধরণের ফিটনেস দরকার তা এখনো আমার হয়নি। আমাদের ফিটনেস ট্রেনার তুষার স্যার আমাকে নিয়ে বেশ কাজ করেছেন। আমার থেকেও বেশি কষ্ট উনি আমার জন্য করেছেন। আমার ব্যাটিং পাল্টে দিয়েছেন আমাদের কোচ বাবুল স্যার (মিজানুর রহমান)। নেটে আমাকে নিয়ে আলাদা করে কাজও করেছেন। এগুলো আমার খুব উপকার হয়েছে।’

 

ফাস্ট ফুডের মোহ কাটিয়ে উঠতে পারছেন না পিনাক। তবে ভাত খাওয়া প্রায় ছেড়েই দিয়েছেন! কিন্তু সৌম্য-তামিম ইকবালদের সঙ্গে খেলতে হলে যে তাকে স্যান্ডউইচ, বার্গার, চিকেন ছাড়তেই হবে! কড়া পাহারার পাশাপাশি কড়া শাসন পেলে হয়তো তাও ছেড়ে দেবেন ১৭ বছর বয়সি এ উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান।

 

 

 

 

রাইজিংবিডি/কক্সবাজার/২৯ জানুয়ারি ২০১৬/ইয়াসিন/আমিনুল