ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

তানিয়া-সাদেকা হত্যা : স্বামীসহ চারজনের ফাঁসি বহাল

মেহেদী হাসান ডালিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৩৫, ২৪ জানুয়ারি ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
তানিয়া-সাদেকা হত্যা : স্বামীসহ চারজনের ফাঁসি বহাল

নিজস্ব প্রতিবেদক : স্ত্রী তাহমিনা শারমিন তানিয়া হত্যা মামলায় ব্যবসায়ী স্বামী জাহিদ হোসেন জুয়েলসহ তিনজনের ফাঁসি বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।

এদিকে দুই দশক আগে ১৯৯৭ সালে নওগাঁয় স্ত্রী সাদেকা বানুকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় স্বামী মাহবুবুল আলমেরও ফাঁসি বহাল রেখেছেন আদালত।

তানিয়া হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অন্য দুজন হলেন- স্বামী জাহিদের গাড়িচালক শাহীন আলম ও ভাড়াটে খুনি মিজানুর রহমান। এ মামলার তিন আসামিই কারাগারে আছেন।

মঙ্গলবার আসামিদের করা আপিল খারিজ করে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে তিন বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল খোন্দকার দিলীরুজ্জামান। আসামিদের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান।

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০০৭ সালের ২৭ জানুয়ারি রাজধানীর পূর্ব গোড়ানের বাসা থেকে ব্যবসায়ী জাহিদ স্ত্রী তানিয়াকে নিয়ে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে যান। স্ত্রী তানিয়াকে  হত্যা করাতে ভাড়াটে খুনি মিজান  ও গাড়িচালক শাহিনকে এক লাখ টাকা দেওয়ার চুক্তি করেন।

পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা কুয়াকাটার একটি হোটেলে ওঠে। ৩০ জানুয়ারি কুয়াকাটা থেকে ফেরার পথে রাত ১১টার দিকে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার ভাড়াটে খুনি মিজান ও গাড়িচালক শাহিন গাড়ির ভেতরে তানিয়াকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে। হত্যার সময় এই দম্পত্তির ১০ মাসের শিশুসন্তান জায়মান সঙ্গে ছিল।

এ ঘটনায় পরের দিনই অর্থাৎ ৩১ জানুয়ারি তানিয়ার ভাই রায়হান গফুর বাদি হয়ে জাহিদ ও কাশেমের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও দুজনকে আসামি করে কলাপাড়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

তদন্ত শেষে  একই বছরের ৩০ এপ্রিল পুলিশ জাহিদ, শাহিন ও মিজানের নামে এ মামলার অভিযোগপত্র দেয়। এর মধ্যে আসামিরা গ্রেপ্তার হয়ে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।

বিচার শেষে পটুয়াখালীর জেলা ও দায়রা জজ আদালত এই তিন আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন।

এ রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা হাইকোর্টে আপিল করেন। ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিল শুনানি শেষে হাইকোর্ট ২০১২ সালের ৮ জুলাই তিনজনের মৃত্যুদণ্ডাদেশই বহাল রাখেন।

পরে আসামিরা হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে যান। শুনানি শেষে মঙ্গলবার আপিল বিভাগ তাদের আপিল খারিজ করে তিনজনের ফাঁসি বহাল রাখেন।

এদিকে দাম্পত্য কলহের জেরে ১৯৯৭ সালের ২৭ এপ্রিল সাদেকার নিজ বাড়িতে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয় স্বামী মাহবুব। এ সময় সাদেকার ছোট বোন চিৎকার শুরু করলে প্রতিবেশীরা এসে মাহবুবকে ধরে ফেলে এবং সাদেকাকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে দুদিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাদেকার মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় সাদেকার বাবা অছিম উদ্দিন বাদি হয়ে মান্দা থানায় মাহবুবকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। পরবর্তীতে মামলাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে বিশেষ ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়। 

মামলার বিচার শেষে ২০০৩ সালের ২২ সেপ্টেম্বর মাহবুবকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন নওগাঁর নারী ও শিশু আদালত-৩। এ রায়ের বিরুদ্ধে আসামির আপিল এবং ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শেষে ২০০৭ সালের ২০ মে মাহবুবের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখেন।

পরে এ রায়ের বিরুদ্ধে আসামি আপিল বিভাগে যান। মঙ্গলবার আপিল বিভাগ মাহবুবের আপিল খারিজ করে মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৪ জানুয়ারি ২০১৭/মেহেদী/মুশফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়