ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

ইতিহাসের পুনর্বিচার ও বাঙালির রেনেসাঁস || স্বকৃত নোমান

স্বকৃত নোমান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:২৫, ১০ জুলাই ২০১৫   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ইতিহাসের পুনর্বিচার ও বাঙালির রেনেসাঁস || স্বকৃত নোমান

অলংকরণ : অপূর্ব খন্দকার

কেন যেন ইতিহাসে মুখ গুঁজে পড়ে থাকতে ইচ্ছে করে। সমকালকে যতই আকড়ে ধরে রাখতে চাই, যতই ভবিষ্যত নিয়ে স্বপ্ন দেখতে চাই, পারি না। কে যেন আমাকে কানে কানে বলে যায়, বর্তমানে নয়, ভবিষ্যতে নয়- তোমার স্থান অতীতে। শুধু অতীতে নয়, সুদূর অতীতে। তুমি জাতিস্মর। কবি ইকবাল বলেছিলেন, ‘লাভ ছেড়ে ইচ্ছে করে ক্ষতির দায়ে পড়ব কেন/ভবিষ্যতের চিন্তা ছেড়ে অতীত তরে কাঁদব কেন?’ তার এই উক্তি আমার কাছে ভুল বলে মনে হয়। আমার কেবলই ইচ্ছে করে অতীতের জন্য বসে বসে বিলাপ করতে। অনার্যের সেই কুটিরটির জন্য আমার বুকের ভেতর বয়ে যায় শোকের যুমনা। আমি স্বপ্নের ভেতর দেখতে পাই বুদ্ধের বোধিবৃক্ষ, কবিরের জীর্ণ কুটির। মন আমার পড়ে থাকে হরপ্পা-মাহেঞ্জোদারোর অলিগলিতে। আমার বসতি যেন মথুরায়। কে জানে, হয়ত তক্ষশিলায়। কেন যেন নিজেকে বিন্দুসার, অশোক কি শ্রীগুপ্তের প্রজা বলে মনে হয়। ইচ্ছে করে ইতিহাসের নায়কদের মহানায়ক হিসেবে বর্তমানে হাজির করতে। ইতিহাসের ভেতর ডুবে থাকতে থাকতে... ডুবে থাকতে থাকতে আমি হয়ে পড়ছি বর্তমান-বিস্মৃত এক অকাট মূর্খ।

ইতিহাসের কানাগলিতে হাঁটতে গিয়ে বিস্ময়ের সঙ্গে আবিষ্কার করি বাংলার সেই সমৃদ্ধির কাল।  গুটিপোকা থেকে রেশম, তাঁত ও মসলিন দখল করেছিল সমগ্র ভারত, তুরস্ক, সিরিয়া ও আরবদেশের বাজার। সব রকমের শস্য, মাংস, চিনি ও তুলোর জন্য বিখ্যাত ছিল এই জনপদ। চীনা জাহাজ ‘জাঙ্ক’ যে বাংলা থেকে পণ্য নিয়ে যেত সে কথাও তো স্বীকার করেছেন পর্তুগীজ পর্যটক বারবোসা। বড় বিলাসী জীবন ছিল বাঙালি বণিকদের। এই কারণেই বুঝি সওদাগরে রূপান্তরিত হয় মঙ্গলকাব্যের সাধু! তার সপ্তডিঙা ভাগীরথী পার হতে চায় না। কী দরকার পার হওয়ার? কোথাও না গিয়ে ঘরে বসেই তো এ দেশের বণিকরা সব ধন ও মোক্ষ লাভ করতে পারতেন। কিন্তু হায়, দিল্লির সুলতানের দু’বার বাংলা অভিযান, চট্টগ্রাম নিয়ে ত্রিপুরা ও আরাকান রাজাদের কাড়াকাড়ি, আহোম ও উড়িষ্যার রাজাদের আক্রমণ, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার রাজ্যগুলির উত্থান, পর্তুগীজদের বাংলায় অনুপ্রবেশ ও বঙ্গোপসাগর দখল, শেরশাহ ও মুঘলদের গৌড় দখল, মুঘলদের বাংলা বিজয়- সব মিলিয়ে বাণিজ্যজাত লাভ বাঙালি বণিকদের হাত থেকে চলে যায়। ভাগ্যান্বেষণে বিদেশ থেকে একদা মানুষ আসত এই বাংলায়, আর এখন বাংলা থেকে বিদেশ যায়! ইতিহাস বুঝি এভাবেই তার নিষ্ঠুর গতিপথ বদলায়।

ভাগ্যান্বেষণে যে বৃটিশরা এই দেশে এসেছিল, তারা আমাদের কাছ থেকে নিয়েছে অনেক, কিন্তু দিয়েছে কি কম? মোটেই না।  তুর্ক, আফগান, মোগলের পরে নতুন এই বিদেশিরা এসে এ দেশে নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা করল। এই বিদেশিরা সুদূর ইউরোপ থেকে সওদাগরি জাহাজে চড়ে আসে। সঙ্গে আনে ইংরেজি ভাষার বইপত্র। গঙ্গার ঘাটে নামিয়ে দেয় সেসব বই। নাটক উপন্যাস কাব্য প্রবন্ধ। রাজনীতি অর্থনীতি দর্শন বিজ্ঞান সন্দর্ভ। ইংরেজদের ঘরে ঘরে ক্লাবে ক্লাবে বইপত্র জমে উঠে। বাঙালিরাও কি ক্রমে ক্রমে জমতে থাকা এসব বইয়ের প্রতি আকৃষ্ট হয়নি? নিশ্চয়ই হয়েছে। রামমোহন কি হননি? মাইকেল হননি? বঙ্কিম হননি? বিবেকানন্দ বা অরবিন্দ হননি? রবীন্দ্রনাথও কি হননি? ইংরেজ কর্তৃক ভারত শাসনকে কে বলেছিলেন ‘বিধাতার আশীর্বাদ’? রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাস করতেন পূর্ব আর পশ্চিম পরস্পরের পরিপূরক, মহামানবের সাগরতীরে তাদের মিলন হবে। তিনিই তো বলেছেন, ‘পশ্চিমে আজি খুলিয়াছে দ্বার, সেথা হতে সবে আনে উপহার/দিবে আর নিবে, মিলাবে মিলিবে, যাবে না ফিরে এই ভারতের মহামানবের তীরে/এসো হে আর্য, এসো অনার্য, হিন্দু-মুসলমান, এসো এসো তুমি ইংরাজ, এসো এসো খৃস্টান.../আজি ভারতের মহামানবের সাগরতীরে।’

হ্যাঁ, মিলন উভয়ের হয়েছিল- ভারত মহাসাগরের তীরে, কলকাতা নগরে। ওই বিদেশিদের আগমনের মধ্য দিয়েই আমাদের রেনেসাঁস, রেফরমেশন ও এনলাইটেনমেন্ট ঘটেছিল উনিশ শতকে। হ্যাঁ, ঘটেছিল। খানিকটা হলেও। কেউ গায়ের জোরে অস্বীকার করতেই পারেন ঘটেনি। এ কথা বোঝার ব্যাপার যে, আমাদের রেনেসাঁস আমাদের মতোই, ইউরোপের মতো নয়। ‘ইউরোপীয় রেনেসাঁসের সঙ্গে আমাদের রেনেসাঁস হুবহু নকল নয়’- এ কথা আমি বলছি না, বলছেন মহামতি অন্নদাশঙ্কর রায়। তিনি বলছেন, ‘দেশ অনুসারে কাল অনুসারে রেনেসাঁসের ধরন ভিন্ন।’ এই ভিন্ন রেনেসাঁসের স্পিরিট কাজ করেছিল এ দেশেও। সেজন্যই এ দেশেও রাজতন্ত্র তথা সামন্ততন্ত্রের পতন হলো। দেশীয় রাজ্যের বিলোপ, জমিদারীর বিলোপ অনায়াসে সম্পন্ন হলো। তবে পুরোহিত তন্ত্রের পতন হলো না। তার বদলে হয়েছে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রের প্রবর্তন আমাদের সুদীর্ঘ ইতিহাসে এই প্রথম। ক্ষমতা হস্তান্তরের পূর্বে গান্ধীজীকেই বলতে শোনা যায়, ‘আমাদের রাষ্ট্র হবে ধর্মনিরপেক্ষ বা সেকুলার।’ নিরীশ্বরবাদীদের তিনি আশ্রয় দিতে আরম্ভ করলেন। তিনিও উপলব্ধি করতে পারলেন যে, সত্যের অপর নামই ভগবান। নিরীশ্বরবাদীও সত্যের সাক্ষাৎ পেতে পারেন। নয়তো তিনি তাঁর শিষ্যকে বলতেন না, ‘কে জানে, তোমার নিরীশ্বরবাদ হয়ত আমার ঈশ্বরবাদের চেয়ে নিকৃষ্ট নয়। হয়ত উৎকৃষ্ট।’

গান্ধীজীর এই যে উপলব্ধি, এটা ওই বিদেশিদের প্রভাবে হয়নি, ইউরোপীয় রেনেসাঁসের প্রভাবে হয়নি- এ কথা নিশ্চিতভাবে কে বলবে? ‘মেঘনাদবধ’ লেখার জন্য মাইকেলকে ‘অডিসি’ অনুপ্রাণিত করেনি, সে কথাও তো নিশ্চিতভাবে বলা যায় না। কেরী সাহেবের সহযোগিতায় কোম্পানি আমলের রাজকর্মচারীদের জন্য প্রতিষ্ঠিত ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ হয়ে ওঠে বাংলা হিন্দি উর্দু প্রভৃতি ভার্নাকুলারের গদ্যসাহিত্যের আঁতুড়ঘর- এ কথাও তো অস্বীকার করতে পারি না। সংস্কৃতি সাহিত্য একসময় অতি জীবন্ত ছিল, কিন্তু কালক্রমে তার অবস্থা হয় জীবন্মৃতের মতো। তার কাছ থেকে পাওয়ার যা ছিল তা ক্রমে নিঃশেষিত হয়, কিন্তু ইংরেজির মারফত পাওয়া ইউরোপীয় সাহিত্য দর্শন ইতিহাস প্রভৃতির ভাণ্ডার অফুরন্ত। আমরা এই অফুরন্ত ভাণ্ডার থেকে কি নিইনি? আমরা কি শেক্সপীয়রকে নেইনি? তারাও কি আমাদের রবীন্দ্রনাথকে নেয়নি?

তাদের ভাষা ইংরেজির মাধ্যমেই তো আমাদের ‘গীতাঞ্জলি’ পৌঁছে গেছে বিশ্বপাঠকের দরবারে। ইংরেজদের আগে মুসলিমদের সঙ্গে আমাদের মিলন ঘটেছিল। সেই মিলনও আমাদেরকে কিছু কম দেয়নি। শাসনতান্ত্রিক দিক থেকে না হলেও জ্ঞানতাত্ত্বিক দিক থেকে আমরা তাঁদেরও কাছে কৃতজ্ঞ বৈকি। না, আমি অকৃতজ্ঞ নই। আর ইংরেজরা? ইংরেজরা লুটেরা বটে, সন্দেহ নেই। কিন্তু আমি তাদেরকে একতরফা লুটেরা বলে এই ‘মহামিলনকে’ খর্ব করতে রাজি নই। তারা সম্পদ লুট করেছে, হয়ত দুঃশাসনও করেছে, নেয়ার বেলায় প্রচুর নিয়েছে, কিন্তু দেয়ার বেলায় কিন্তু একেবারে কম দেয়নি। কেউ যদি বলেন ইংরেজরা না এলেও আমরা শেক্সপীয়রকে পেয়ে যেতাম, তন্ত্রমন্ত্রে ভর করে তার রচনা হাওয়ায় চড়ে আমাদের সাক্ষাতে আসতেন- আমি তাঁর সঙ্গে বিতর্কে যেতে চাই না। কেউ যদি বলেন, বেন্টিঙ্ক উদ্যোগ না নিলেও কোনো না কোনোভাবে, অলৌকিকভাবে হলেও, সতীদাহ প্রথা রদ হয়ে যেত- তাঁর সঙ্গেও বিতর্ক করার প্রশ্নই ওঠে না। কেউ যদি বলেন, ‘গীতাঞ্জলি’ ইংরেজিতে ভাষান্তরিত না হলেও রবীন্দ্রনাথ নোবেল পেয়ে যেতেন, আমি তাঁর সঙ্গেও বিতর্ক করতে রাজি নই। শাসন নয়, আমি শুধু জ্ঞানের পারষ্পরিক বিনিময়টাকে বুঝতে চাচ্ছি। মিলনটাকে বুঝতে চাচ্ছি। এই মিলনের প্রয়োজন ছিল। এই মিলন আমাদের দরজা-জানালাকে উন্মুক্ত করে দিয়ে গেছে। এ কথা কেউ বলার পর তাকে যদি কেউ উপনিবেশের দালাল সাব্যস্ত করতে চান, তাহলে সবার আগে রামমোহন, মাইকেল, বঙ্কিম, বিবেকানন্দ, অরবিন্দ, রবীন্দ্রনাথ এবং অন্নদাশঙ্করকেও সাব্যস্ত করতে হবে।

আগেই বলেছি, এই দেশে রেনেসাঁস এসেছিল তো ইংরেজদের মাধ্যমেই। পুরোপুরি না হোক, সেই রেনেসাঁসে আমরা কিছুটা হলেও তো উজ্জীবিত হয়েছি। রেনেসাঁসের মাধ্যমে আমরা কিছুটা হলেও মুক্তি পেয়েছি শাস্ত্রের হাত থেকে, দেবতার হাত থেকে, গুরুর হাত থেকে, পুরোহিতের হাত থেকে, রাজার হাত থেকে, সামন্তের হাত থেকে, কুসংস্কারের হাত থেকে, কুপ্রথার হাত থেকে, অসাম্য-জাতপাতের হাত থেকে। রেনেসাঁস আমাদের কুপমণ্ডুকতা থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি দিয়েছে। এ কথা বলতে কোনো দ্বিধা করছি না, ইংরেজরা একটা জাদুর কাঠি নিয়ে এ দেশে এসেছিল। সেই কাঠির ছোঁয়ায় আমাদের শত বছরের ঘুম ভেঙে গেছে। আমাদের অচলায়তনটাকে ভেঙে দিয়েছে। বহু বর্বরতা থেকে আমাদের মুক্ত করেছে। ঔপনিবেশিক শাসনের পজেটিভ দিক নিয়ে একবার এক সাক্ষাৎকার নেয়ার সময় অফ দ্যা রেকর্ডে আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যার প্রায় এ ধরনের কথা বলেছিলেন। আহাম্মকির কারণে তখন পাত্তা দেইনি। এখন মনে হচ্ছে তিনি ঠিকই বলেছিলেন।

সতীদাহ প্রথার মতো ভয়াবহ একটা বর্বরতাকে বেন্টিঙ্ক রদ করেছিলেন। সুলতানরা, মোগলরা যেটা করতে পারেননি সেটা বেন্টিঙ্ক করতে পেরেছেন। বেন্টিঙ্কটা কে? সাদা চামড়ার একজন ইংরেজ। ইউরোপীয় এনলাইটেনমেন্ট তার মধ্যেই মূর্ত হয়েছিল। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন আমাদের এই প্রথা বর্বর। জনমত তার বিরুদ্ধে ছিল। কিন্তু তিনি জনমতের তোয়াক্কা করেননি। ক্ষমতার সুপ্রয়োগ করে এই অমানবিক প্রথাকে আইন করে বন্ধ করেছেন। সিপাহী বিদ্রোহ বলি বা জনতার বিদ্রোহ, ওই বিদ্রোহের পেছনে কিন্তু বেন্টিঙ্কের এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্তটাও একটা কারণ ছিল। হ্যাঁ, কারণ ছিল। দায়িত্ব নিয়েই বলছি এ কথা। ওই সিপাহী-জনতাদের মধ্যে যারা হিন্দু তারা সতীদাহ প্রথা রদের সিদ্ধান্তকে সহজভাবে নিতে পারেননি। এটাকে তারা ধর্মের ওপর আঘাত মনে করেছেন। তাদের বিদ্রোহের অসংখ্য কারণের মধ্যে এটাও একটা কারণ ছিল। সুতরাং সিপাহী বিদ্রোহ নিয়ে একতরফা গৌরবের কিছু আছে বলে মনে করি না।

শুধু সতীদাহ প্রথা নয়, ভারতীয় হিন্দুদের ইংরেজ-বিরোধিতার কারণ আরো ছিল। ইংরেজি শিক্ষার প্রশ্নে, উপবীত ত্যাগের প্রশ্নে, জাতিভেদের প্রশ্নে, নারীর অধিকারের প্রশ্নে, অসবর্ণ বিবাহের প্রশ্নে, বহুবিবাহের প্রশ্নে ইংরেজদের সঙ্গে হিন্দুদের বিরোধ লেগেছিল। হিন্দুরা তাদের প্রাচীন প্রথাকে, যে প্রথা অমানবিক, আঁকড়ে ধরে রাখতে চেয়েছে, আর ইংরেজদের মধ্য দিয়ে আসা এনলাইটেনমেন্ট হিন্দুদের এই প্রধাসিদ্ধ অর্গলটা ভাঙতে চেয়েছে, কিছুটা ভেঙে দিয়েছে।

একইভাবে কট্টরপন্থীরা ইংরেজদের বিরুদ্ধে যে জেহাদ ঘোষণা করেছিল, তার পেছনেও কিন্তু স্বার্থগত, ধর্মগত, গোঁড়ামিগত অনেক কারণ ছিল। তারা মূলত মুসলমানি মোগল শাসনের বদলে খ্রিস্টান ইংরেজ শাসন মেনে নিতে পারেননি। এনলাইটেনমেন্টকে যেসব অগ্রসর হিন্দু গ্রহণ করে মুসলমানদের পেছনে ফেলে সামনে এগিয়ে যাচ্ছিল, তাদের এই অগ্রযাত্রা পুরাতনকে আঁকড়ে ধরে রাখা এসব কট্টরপন্থী মৌলবিরা মেনে নিতে পারছিলেন না। তাই তারা ইংরেজদের বিরুদ্ধে, ইংরেজদের মাধ্যমে আলোকের ছোঁয়াপ্রাপ্ত হিন্দুদের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করেছেন। সুতরাং তাদের সেই জেহাদ নিয়েও একতরফা গৌরবের কিছু নেই।

মনে হচ্ছে, ইংরেজদের মাধ্যমে আসা যে রেনেসাঁসটা বিকশিত হওয়া শুরু করেছিল এ দেশে, তা মধ্যপথেই থেমে গেছে। রেনেসাঁস পূর্ণ হওয়ার আগেই কাউন্টার রেনেসাঁসের চর্চাটা শুরু হয়ে গেছে। রেনেসাঁসের সেই উদ্ভাসনটা যদি আরো কিছুদিন জারি থাকত, তাহলে আমরা শিক্ষায় ও চিন্তায় আরো অনেকদূর হয়ত এগিয়ে যেতে পারতাম। যেমন এগিয়ে গেছে পশ্চিমের দেশগুলো। জারি না থাকার পেছনে হিন্দুদের যেমন হাত ছিল, তেমনি হাত ছিল মুসলমানদেরও এবং নিশ্চিতভাবেই ইংরেজদেরও।


লেখক : কথাসাহিত্যিক


রাইজিংবিডি/ঢাকা/১০ জুলাই ২০১৫/তাপস রায়

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়