ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

বহু জাতি মুসলিম না হয়েও রোজা রাখেন : অধ্যাপক শামসুল আলম

আবু বকর ইয়ামিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:২২, ১০ জুলাই ২০১৫   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বহু জাতি মুসলিম না হয়েও রোজা রাখেন : অধ্যাপক শামসুল আলম

অধ্যাপক শামসুল আলম

রোজা মানুষকে অশ্লীলতা, বহু বদ অভ্যাস থেকে মুক্ত রাখে। রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও স্বাস্থ্যবিজ্ঞানে রোজার গুরুত্ব অনন্য। পৃথিবীর অনেক দেশে, এমন বহু জাতি আছে, যারা মুসলিম না হয়েও রোজা পালন করেন। কিন্তু মুসলমানদের মধ্যে অনেকে আছেন, যারা ইফতারকে উৎসব বানিয়ে নিয়েছে- এ সব কথা বলছিলেন ইসলামি চিন্তাবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক ড. অধ্যাপক শামসুল আলম। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রাইজিংবিডির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক আবু বকর ইয়ামিন

 

রাইজিংবিডি : কেমন আছেন?

শামসুল আলম : আলহামদুল্লিাহ, ভালো আছি। 

 

রাইজিংবিডি : রোজা কী?

শামসুল আলম : ধন্যবাদ আপনাকে। আল্লাহপাক রাব্বুল আলামিন রোজা ফরজ করে যে আয়াতটি নাজিল করেছেন, সেই আয়াতটি হলো- ‘ইয়া আইয়ুহাল লাজিনা আমানু কুতিবা আলাইকুমুস সিয়ামু কামা কুতিবা আলাল লাজিনা মিন কাবলিকুম লাআল্লাকুম তাত্তাকুন।’ অর্থাৎ- ‘হে বিশ্বাসীগণ তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমনিভাবে পূর্ববর্তীগণের উপর ফরজ করা হয়েছিল। আশা করা যায়- তোমরা ফরহেজগারী অর্জন করতে পারবে।’ এ আয়াতটি থেকে বুঝা যায় যে-  পূর্ববর্তী জাতির ওপরও রোজা ছিল। ‘রোজা’ শব্দটি ফারসি শব্দ থেকে এসেছে। রোজা মানে উপবাস। তবে শুধু উপবাস করলে আমরা রোজার মাধ্যমে যে তাকওয়া অর্জন করতে চাই, সেটাতো হবে না। ‘সাওম’ শব্দ যদি বলি, যেটা কোরআনের শব্দ, সাওম মানে বিরত থাকা। সাওমের মাধ্যমে আমরা চারপাশের অশ্লীলতা থেকে, কুটিলতা থেকে, বিভিন্ন বদ অভ্যাস থেকে, পাপাচার থেকে বিরত থাকতে পারি। ইসলামে রমজানের রোজাটা মূলত ফরজ। চাঁদ দেখার সঙ্গে এর সংখ্যা ২৯ দিনও হতে পারে, ৩০ দিনও হতে পারে। আররি ১২ মাসের মধ্যে রোজার মাসের গুরুত্ব বেশি। মূল কারণটা হলো কুরআনুল হাকিম। কুরআন নাজিল হয়েছে এ মাসে। আমরা দেখি- যে কুরআন নাজিলের কারণে মুহাম্মদ (সা.) এত সম্মানিত হয়েছেন, হেরা গুহাকে আমি পৃথিবীর অন্য গুহার চেয়ে বেশি চিনি, বদর রাত্রিকে আমরা সবচেয়ে শ্রেষ্টত্ব এবং মহিমান্বিত মনে করি, কারণ একটাই, কুরআন নাজিল। তার মানে কুরআনকে আমাদের অনুসরণ করতে হবে। কুরআনকে আমাদের জীবনে বাস্তবায়ন করতে হবে। কুরআন কেন্দ্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। রোজার ব্যাপারে এটাই হলো মূল কথা।

 

রাইজিংবিডি : শরিয়তের দৃষ্টিতে রোজার গুরুত্ব কেমন?

শামসুল আলম : অনেক গুরুত্ব। প্রথমে তো বললাম ফরজ ইবাদতের মধ্যে অন্যতম হলো রোজা। তার মানে কোনো প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তি শরীয় ওজর বা কারণ ছাড়া রোজা ছেড়ে দিতে পারবেন না। দ্বিতীয়ত, রোজা আমাদের সামাজিক ও মানসিক জীবনে বিরাট পরিবর্তন আনতে পারে। অন্য ইবাদত দ্বারা এটি সম্ভব না। এর স্পেশালিটি হলো এই, রাসুল (সা.) এর হাদিসে আছে, আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘আসসাওমু লি ওয়া আনা আজজি বিহী’। অর্থাৎ- ‘রোজা বান্দা আমার জন্য রাখে। এর প্রতিদান আমি নিজ হাতে দেব।’ অন্য ইবাদতের চেয়ে রোজার গুরুত্ব বেশি। রোজা এমন এক ইবাদত, গুনাহ মাফের জন্য রোজা এক বসন্ত অর্থাৎ মৌসুম। বর্ণিত আছে- একবার ঈদের মাঠে হযরত ওমর (রা.) ইমামতি করবেন। কিন্তু তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে সাহাবায়ে কেরামগণ খোঁজ করে দেখলেন- তিনি ঘরের দরজা বন্ধ করে ভেতরে বসে কাঁদছেন। সাহাবায়ে কেরামগণ কান্নার কারণ জিজ্ঞেস করলে ওমর (রা.) বলেন, তোমরা কি সে হাদিসের কথা জান না? রাসুল (সা.) একবার মিম্বারে উঠে তিনবার আমিন বলেছিলেন। সাহাবীগণ মহানবী (সা.) কে জিজ্ঞেস করলেন- আজকে এমনটি করলেন কেন? উত্তরে রাসুল (স) বললেন, জিবরাঈল (আ.) এসেছিলেন আমার কাছে। আমি প্রথমে মিম্বারে উঠার পর জিবরাঈল (আ.) বললেন-  যে ব্যক্তি রমজান পেল, আর গুনাহ মাফ করাতে পারল না, তার জন্য আল্লাহর লা’নত (অভিশাপ)। আমি বলেছিলাম আমিন। যারা বাবা-মাকে পেল, কিন্তু তাদের খেদমত করে জান্নাত নিশ্চিত করতে পারল না, তার জন্য আল্লাহর লা’নত। আমি বলেছি আমিন। যারা মুহাম্মদ শুনে সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলে না, তার জন্য আল্লাহর লা’নত। আমি বলেছি আমিন। হাদিস থেকে বুঝা যাচ্ছে- যে রোজার গুরুত্ব কতটা বেশি। তাছাড়া শত শত হাদিস এবং কুরআন আছে রোজার ফযিলত এবং গুরুত্ব সম্পর্কে। রাসুল (স) বলেছেন, প্রত্যেক বিষয়ে যাকাত রয়েছে। মালের যেমন যাকাত রয়েছে। তেমনিভাবে শরীরের যাকাত হলো সাওম বা রোজা। দীর্ঘক্ষণ আলোচনার পরও রোজার গুরুত্ব বলে শেষ করা যাবে না। পৃথিবীর বহু দেশ বা জাতি মুসলমান না, কিন্তু সাওম পালন করে। কারণ এর শারীরিক যে উপকারিতা উপবাস যাপনের ফলে, এটি বিশাল। বিশেষ করে রাশিয়ার কথা বলা যায়, তারা থেরাপি পালন করে। তার মানে পেটকে তারা বিশ্রাম দেয়। যার মাধ্যমে পেটের কার্যক্ষমতা আরো বাড়ে, ক্রিয়াশীলতা বৃদ্ধি পায়। এটি বিরাট ব্যাপার। সুতরাং ধর্মীয়, অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, স্বাস্থ্য বিজ্ঞানের দিক থেকে রোজা অনন্য। এর গুরুত্ব অপরিসীম। সেটি বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না। 

 

রাইজিংবিডি : রোজা কখন ফরজ হয়েছে?

শামসুল আলম : রোজা তো ফরজ হয়েছে মূলত রাসুল (সা.) এর মাদানী জীবনে। দ্বিতীয় হিজরীতে সালাত ফরজের পরপরই এটি ফরজ হয়েছে। রাসুল (সা) মিরাজে যাওয়ার পর এসবের নির্দেশনা পেয়েছিলেন। মূলত মাদানী জীবনে রোজা ফরয হয়েছে।

 

রাইজিংবিডি : রোজা না রাখার ব্যাপারে শরিয়তের দৃষ্টিভঙ্গি কী?

শামসুল আলম : রোজাতো ফরজ। এটি না রাখলে কবিরা গুনাহ হবে এবং এর বিধান হচ্ছে কেউ রোজা ভেঙে ফেললে তাকে কাজা করতে হবে, কাফফারা দিতে হবে। কাফফারা অনেক কঠিন। একাধারে ৬০টি রোজা রাখতে হবে। সেটি সক্ষম না হলে ৬০ জন মিসকিনকে পেট ভরে দু’বেলা খাওয়াতে হবে। অথবা একজন ব্যক্তিতে ৬০ দিন খাওয়ানো। অথবা দাসমুক্ত করে দেওয়া। আসলে ব্যাপারটা অনেক কঠিন।

 

রাইজিংবিডি : পূর্ববর্তীগণের উপর রোজার কেমন বিধান ছিল?

শামসুল আলম : আমরা আগের আয়াত দ্বারাই বুঝতে পেরেছি যে পূর্ববর্তী লোকদের উপর রোজা ফরয ছিল। তারাও রোজা পালন করেছেন। এটা সব জাতির মধ্যেই ছিল। হয়ত ব্যাপারটা অন্যরকম ছিল। রাখার পদ্ধতিটা অন্যরকম ছিল।

 

রাইজিংবিডি : ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে দ্রব্যমূল্যের মাত্রা বা ক্রয়-বিক্রয় কেমন হওয়া উচিত?

শামসুল আলম : ধন্যবাদ আপনাকে। চমৎকার একটি প্রশ্ন। খুবই জীবনধর্মী।  প্রাত্যহিক জীবনে আমরা যেটার সম্মুখীন হই। এটা খুবই দুঃখজনক যে- আমরা জানি যে অন্যান্য দেশে রোজাদারদের সম্মানার্থে জিনিসপত্রের দাম কমিয়ে দেয়। মানুষদের ডেকে ডেকে ইফতার করায়। আরব বিশ্বে এটি বেশি লক্ষ্যণীয়। এছাড়া ভারতেও এটি দেখা যায়, যেখানে অধিকাংশ হিন্দু জনগোষ্ঠী। দুঃখজনক হলেও বাংলাদেশে অধিকাংশ ব্যবসায়ী মুসলমান। তারা মনে হয় যেন রমজান মাসের জন্য অপেক্ষা করে। কীভাবে মুসলমানদের টাইট দেওয়া যাবে। অতি বেশি মুনাফা অর্জন করা যাবে। এটা খুবই দুঃখজনক। এটা অমার্জনীয়। আল্লাহ এটি ক্ষমা করবেন না। এটা বান্দার হক। আল্লাহ চাইলে তার হকসমূহ মাফ করে দিতে পারেন। কিন্তু বান্দার হক বান্দা না করলে তিনি মাফ করবেন না। এটা আমরা মানতেই পারি না যে- কিভাবে সম্ভব? রমজান মাসে মানুষ বেশি মূল্য নিতে চাচ্ছে। মজুদদারি করছে। অতি মুনাফা, লাভ করতে চাচ্ছে। মিথ্যা কথা বলছে, কসম করে বিক্রি করছে। এগুলোতো রমজান ছাড়া এমনিতেই হারাম। অথচ ব্যবসায়ীর কত মর্যাদার কথা আল্লাহ বর্ণনা করছেন। সত্যবাদী, সৎ ব্যবসায়ীরা কিয়ামতের দিন নবীদের সঙ্গে থাকবেন, শহীদদের সঙ্গে থাকবেন, সিদ্দিকীনের সঙ্গে থাকবেন। তাহলে ওইরকম ব্যবসায়ী হতে হবে। কেমন ব্যবসায়ী হতে হবে- আরেক হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, ব্যবসায়ীদের কিয়ামতের মাঠে পাপিষ্ট হিসেবে ধরা হবে। তবে তারা নয়, যার ব্যবসায় তাকওয়া অবলম্বন করেছেন, সততা অবলম্বন করেছেন, কল্যাণধর্মী কাজ করেছেন। বিধায় সৎ ব্যবসা না করলে আল্লাহর দরবারে তাদের কঠিনভাবে ধরা হবে।

 

রাইজিংবিডি : ইফতার সম্পর্কে কিছু বলুন।

শামসুল আলম : ইফতার তো একটা বড় নিয়ামত। আমরা যে শুধু সারাদিন উপবাস করব, এটাই মূল উদ্দেশ্য না। বরং আল্লাহ চান আমরা এক সময় খাওয়া-দাওয়া করি। পরিতৃপ্ত হই। এ জন্য ইফতারের বিধান রেখেছেন। অন্যান্য জাতিদের মাঝে এরূপ বিধান ছিল না। অনেকে ক্রমাগত দু’দিন, চারদিন পর্যন্ত ইফতার না খেয়ে, সেহরি না খেয়ে রোজা রাখতেন। এটা বৈজ্ঞানিকও না, আবার ইসলামও এটাকে সমর্থন করে না। রাসুল (সা.) বলছেন, ইফতারি খাওয়া সুন্নত। ইফতারি খাওয়ার ব্যাপারে ঢিলামি করা যাবে না। আজান হয়ে গেছে, সূর্য ডুবে গেছে,  ইফতারি খেতে হবে। রাসুল (সা.) বলেছেন, রোজাদারদের জন্য দু’টি আনন্দের খবর। একটি হলো ইফতারের সময় আনন্দ লাগে। সারাদিন উপবাসের পর সন্ধ্যায় খেতে বসে। আরেকটি হলো- তার প্রভু, তাকে সাক্ষাৎ দেবেন। বিশাল ব্যাপার। ইফতারির বেশ ফযিলত রয়েছে। যা বলে শেষ করা যাবে না।

 

রাইজিংবিডি : রোজায় স্বাস্থ্যের উপকারিতা কী?

শামসুল আলম : বিশাল উপকারিতা। যাদের গ্যাস্টিক আছে, তাদের অনেকের সঙ্গে আমি কথা বলেছি। ব্যক্তিগত জীবনেও দেখেছি। অন্য সময়ে উপবাস যাপনে যে গ্যাস হয় পেট খালি হয়ে গেলে, যে সমস্যা হয়, আলহামদুলিল্লাহ, রোজায় কেন জানি গ্যাস হয় না। এমনিভাবে- যাদের ডায়বেটিস আছে, হৃদরোগ আছে, অনেকেই আগের চেয়ে সুস্থ হয়ে যায়। কারণ বিধান তো আল্লাহ দিয়েছেন। আল্লাহ হলেন দুনিয়ার সবচেয়ে বড় শাফায়াতকারী। অর্থাৎ রোগ থেকে মুক্তিদানকারী। রোজায় মানুষ আগের চেয়ে আরো অনেক বেশি সুস্থ হয়। তার শরীর আরো ঝরঝরা হয়ে যায়। কিন্তু আমাদের মুসলমানদের মাঝে এমন কিছু লোককেও খুঁজে পাই, যাদের রমজানের আগে ওজন কম থাকে, রমজানে ওজন বেড়ে যায়। এটি খুবই দুঃখজনক এবং হতাশাজনক। তারা ইফতারকে একটা উৎসব হিসেবে নিয়েছে।

 

রাইজিংবিডি : রমজানে খাওয়া-দাওয়া কেমন হওয়া উচিত?

শামসুল আলম : এমনিতেই ইসলামি বিধানে খাওয়া-দাওয়া পরিমিত হওয়া উচিত। অতিরঞ্জিতও না, আবার কমও খাওয়া যাবে না। শরীরটাকে ঠিক রাখতে হবে। আমরা জানি যে খাওয়া-দাওয়া অবশ্যই করতে হবে। তবে পরিমিতভাবে। সুস্থ  থাকতে হবে। কারণ সুস্থ একজন ঈমানদার, অসুস্থ একজন ঈমানদারের চেয়ে উত্তম। আমরা জানি যে ১৭ রমজানে বদর যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এ থেকে বুঝা যায় আগের মুসলমানরা রোজার মাসে ইসলামের জন্য যুদ্ধ করেছেন। এতটুকু শক্তি-সামর্থ রাখতে হবে, যাতে করে নিজে সুস্থ শক্তিমান থাকা যায়। তবে অপব্যয়, অপচয় অবশ্যই করা যাবে না।

 

রাইজিংবিডি : রাজনীতিতে শান্তি, শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় রোজার গুরুত্ব কী?

শামসুল আলম : আমরা যদি অন্য ইবাদত বাদ দিই, শুধু রোজাটুকু ঠিকভাবে রাখতাম, সাওম ঠিকভাবে পালন করতে পারতাম, তাহলে শুধু রাজনীতি নয়,  আমাদের সর্বক্ষেত্রে যে অস্থিরতা, যে বিশৃঙ্খলা, অবশ্যই আমরা এর একটি সমাধান পেতাম। যদি সত্যিকারের সাহাবায়ে কেরামের মতো সাওম পালন করতে পারতাম,  সমস্যা অনেকাংশে সমাধান হয়ে যেত। সাওমই তো আমাদের বলছে- যদি কেউ তোমাদের সঙ্গে ঝগড়া করতে আসে, বলো ‘ইন্নি সায়েমুন’ অর্থাৎ আমি রোজাদার, আমি তোমার সঙ্গে ঝগড়া করতে পারব না। বিধায় ঝগড়াঝাটি, বিদ্বেষ, মিথ্যা মামলা, অপপ্রচার, ক্ষমতার লোভ- এসব ইসলামের সঙ্গে আসলে যায় না। রোজা যদি আমরা রোজার মতো পালন করতে পারতাম, অবশ্যই আমাদের রাজনৈতিক জীবনেও একটা স্বস্তি চলে আসত। আরো সুন্দর ঈদের প্রত্যাশা আমরা করতে পারতাম।

 

রাইজিংবিডি : রাষ্ট্রীয়ভাবে এটি বাস্তবায়নে আরো বেশি উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন মনে করেন কি?

শামসুল আলম : অবশ্যই, অবশ্যই। ইদানিংকালে টেলিভিশন চ্যানেল অনেক বেড়েছে। অনেক প্রোগ্রাম বেড়েছে। এটিকে শুধু প্রোগ্রামে সীমাবদ্ধ না রেখে, আমাদের চরিত্র গঠনে, সুন্দর জাতি গঠনে আলোচনা এবং বিষয়গুলোকে সেভাবে রাখা উচিত। এটা খুবই ইফেকটিভ হয়, কার্যকরী হয়। আমাদের রাষ্ট্রীয় জীবনে, আমাদের রাজনৈতিক জীবনে রোজা বিরাট ভূমিকা রাখতে পারে। এই যে ইফতার পার্টি হচ্ছে, সব  রাজনৈতিক দলের নেতারা এক সঙ্গে এসে খাচ্ছেন, এটা বিরাট সহমর্মিতার ব্যাপার। রাসুল (সা.) বলেছেন, এটা হলো সহমর্মিতার মাস। সেটিকে আমরা বিরাটভাবে কাজে লাগাতে পারি।

 

রাইজিংবিডি : হালাল-হারামের গুরুত্ব কেমন?

শামসুল আলম : রাসুল (সা.) বলেছেন- তোমরা যেগুলো হারাম, সেগুলো ভক্ষণ কর না। হিসাব করলে দেখা যায়- হালালে অনেক অনেক বরকত রয়েছে এবং পরিশুদ্ধ, উপাদেয়। প্রত্যেকটা হারামের মধ্যে শরীরের জন্য ক্ষতিকর জিনিস রয়েছে। তার মানে কুরআন, সুন্নাহ যে বিষয়গুলোকে হালাল করেছে, আপনি গবেষণা করে দেখবেন, এর কোনোটার মধ্যে ক্ষতিকর কিছু নেই। আবার হারাম করেছেন যে বিষয়গুলোকে, সেগুলো সর্বসম্মতিক্রমে শরীরের জন্য ক্ষতিকর। আপেক্ষিক হয়ত কিছুক্ষণ ভালো লাগতে পারে, তবে ফাইনালি ক্ষতিকর। 

 

রাইজিংবিডি : আপনাকে ধন্যবাদ।

শামসুল আলম : আপনাকেও ধন্যবাদ।

 

 



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১০ জুলাই ২০১৫/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়