ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

মেগা ৬ প্রকল্পে বিনিয়োগ করছে জাপান

হাসান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:২৭, ২৭ জুন ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
মেগা ৬ প্রকল্পে বিনিয়োগ করছে জাপান

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশের ছয়টি বৃহৎ প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে জাপান। এ লক্ষ্যে আগামী ২৯ জুন বুধবার ঢাকা-টোকিওর মধ্যে আনুষ্ঠানিক চুক্তি স্বাক্ষর হবে।

 

প্রকল্পগুলো হচ্ছে- যমুনা রেলসেতু নির্মাণ প্রকল্প, আন্তঃসীমান্ত সড়ক নেটওয়ার্ক উন্নয়ন প্রকল্প (বাংলাদেশ), ঢাকা মাস রেপিড ট্রানজিট উন্নয়ন প্রকল্প (দ্বিতীয়), মাতারবাড়ী আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কয়লা ভিত্তিক প্রকল্প-২, এনার্জি ইফিসিয়েন্সি অ্যান্ড কনজারভেশন প্রমোশন ফিনান্সিং প্রকল্প ও দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন প্রকল্প।

 

৩৭তম সরকারি উন্নয়ন সহায়তা (ওডিএ) ঋণ প্রকল্পের আওতায় এ ছয়টি প্রকল্পের ব্যাপারে চুক্তি করবে বাংলাদেশ ও জাপান।

 

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

 

ইআরডির অতিরিক্ত সচিব কাজী শফিকুল আজম ও বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানি রাষ্ট্রদূত মাসাতো ওয়াতানাবে নিজ নিজ পক্ষে এ নোট বিনিময়ে স্বাক্ষর করবেন।

 

এ ছাড়া ইআরডির অতিরিক্ত সচিব কাজী শফিকুল আজম ও জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) মুখ্য প্রতিনিধি মিকিও হাতায়দা নগরীর এনইসি সম্মেলন কক্ষে দুপুর ২টায় ঋণ চুক্তিতে স্বাক্ষর করবেন।

 

যমুনা রেলসেতু নির্মাণ প্রকল্প : বাংলাদেশ রেলওয়ে বঙ্গবন্ধু সেতুর সমান্তরালে যমুনা নদীর ওপর ৪.৮ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলসেতু নির্মাণ করবে। আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক বাধাসমূহ অতিক্রমের লক্ষ্যে আন্তঃসীমান্ত সড়ক নেটওয়ার্ক উন্নয়নে চলতি বছরের ২৬ এপ্রিল জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (একনেক) নির্বাহী কমিটির সভায় আন্তঃসীমান্ত সড়ক নেটওয়ার্ক উন্নয়ন প্রকল্পের (বাংলাদেশ) অনুমোদন দেওয়া হয়।

 

বিশেষভাবে যমুনায় রেলসেতু নির্মাণ প্রকল্পে গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী ২০১৪ সালের মে মাসে জাপান সফরে গিয়েছিলেন। সেই সময় প্রকল্পটির বিষয়ে দুদেশের মধ্যে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছিল। প্রকল্পের তাৎপর্য ও গুরুত্বের কথা বিবেচনা এবং বিদ্যমান বঙ্গবন্ধু সেতুর ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে জাইকা ঋণ দিতে সম্মত হয়।

 

আধুনিক সকল সুযোগ-‍সুবিধার সমন্বয়ে নির্মিত হবে রেলসেতুটি। বঙ্গবন্ধু সেতু ইস্ট (বিবিই) স্টেশন এবং বঙ্গবন্ধু সেতু ওয়েস্ট (বিবিডাব্লিউ) স্টেশন স্বয়ংক্রিয় কম্পিউটার বেইজড ইন্টারলিংকিং (সিবিআই) সিগনালিং সিস্টেম থাকবে। সেতু বরাবর গ্যাস ট্রান্সমিশন পাইপলাইনও থাকবে। যেটি সম্পূর্ণভাবে নির্মিত হলে উত্তর বঙ্গ, পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের কাছে আশীর্বাদ হিসেবে ধরা দেবে বলে মনে করছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।

 

ক্রস বর্ডার রোড নেটওয়ার্ক উন্নয়ন প্রকল্প : সাম্প্রতিক সময়ে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে অর্থনৈতিক নীতিমালার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে উচ্চ সম্ভাবনাময় অর্থনৈতিক জোন তৈরির সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এই অঞ্চলের প্রায় ১ দশমিক ৭ বিলিয়ন জনগোষ্ঠী তাদের আর্থ-সামাজিক সমৃদ্ধির ব্যাপারে আশাবাদী। দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে উন্নয়নের প্রবৃদ্ধিও এগিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে আন্তঃঅঞ্চলীয় বাণিজ্যের পরিমাণ এখনো আগের মতোই কম। এই কারণে আন্তঃঅঞ্চলীয় যোগাযোগ অক্ষুন্ন রাখতে সড়ক অবকাঠামোর উন্নয়ন এবং যথাযথ তত্ত্বাবধান গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে বিবেচিত।

 

বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রায় ৭০ শতাংশ সড়কপথ এবং এশিয়ান হাইওয়ের মতো আন্তর্জাতিক সড়কপথ বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করেছে। অথচ দেশের বিভিন্ন সেক্টরে বিশেষ করে কাস্টমস ও সীমান্ত ব্যবস্থাপনায় অপর্যাপ্ত সুবিধা ব্যবস্থার কারণে অভ্যন্তরীণ এবং সীমান্ত এলাকার জরাজীর্ণ রাস্তা ও সেতুর দুরবস্থার জন্য আন্তর্জাতিক সড়কগুলোতে সঠিকভাবে চলাচল সম্ভব হয় না। সে জন্যই এই অঞ্চলের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সমন্বিত প্রয়াসের মাধ্যমে আঞ্চলিক ট্রানজিট যানবাহন চলাচলের পরিকল্পনা করা হয়েছে এবং বিভিন্ন স্থায়ী-অস্থায়ী অবকাঠামোর উন্নয়ন ও সংরক্ষণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এ লক্ষ্যে গ্রহণ করা হয় ক্রস বর্ডার রোর্ড নেটওয়ার্ক ইম্প্রুভমন্টে বা আন্তঃসীমান্ত সড়ক নেটওয়ার্ক উন্নয়ন প্রকল্প।

 

এটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৪৭২ কোটি ৯২ লাখ ৮৪ হাজার টাকা। এর মধ্যে সিংহভাগ অর্থের যোগান দিচ্ছে জাপান।

 

বিআরটি : ঢাকা মাস রেপিড ট্রানজিট উন্নয়ন প্রকল্প (দ্বিতীয়) বা বিআরটি প্রকল্পটি রাজধানী ঢাকার যানজট নিরসনের লক্ষ্যে গৃহীত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার ঢাকায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আনুষ্ঠানিকভাবে মাস রেপিড ট্রানজিট (এমআরটি) উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন করেন। এই প্রকল্পেও জাপান অর্থ সহায়তা দিতে যাচ্ছে।

 

এ ছাড়া মাতারবাড়ী আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের উদ্দেশ্য হচ্ছে বাংলাদেশে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা। বাংলাদেশে জ্বালানি ব্যবহারের দক্ষতা বৃদ্ধি হচ্ছে এনার্জি ইফিসিয়েন্সি অ্যান্ড কনজারভেশন প্রমোশন ফিনান্সিং প্রকল্পের লক্ষ্য।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৭ জুন ২০১৬/হাসান/সাইফুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়