ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

ইউনিসেফ, ব্র্যাক ও ভিশন গ্রুপের সমঝোতা স্মারক

মিথুন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৩৪, ৩১ আগস্ট ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ইউনিসেফ, ব্র্যাক ও ভিশন গ্রুপের সমঝোতা স্মারক

নিজস্ব প্রতিবেদক : ‘ব্রেস্ট ফিডিং ইন দ্য ওয়ার্কপ্লেস ইনিশিয়েটিভ’ (বিএফডব্লিউআই) এর মাধ্যমে কর্মক্ষেত্রে শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর অভ্যাসের পক্ষে প্রচারণা ও পরিস্থিতির উন্নয়নে ইউনিসেফ, ব্র্যাক ও ভিশন গ্রুপ একটি সমঝোতা স্মারক সই করেছে।

 

দেশের দ্বিতীয় তৈরি পোশাক (আরএমজি) প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে ভিশন গ্রুপ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।

 

বুধবার ইউনিসেফের ফান্ডরেইজিং অ্যান্ড পার্টনারশিপ অফিসার (কমিউনিকেশন) জাহিদুল হাসান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

 

বাংলাদেশ ডেমোগ্রাফিক হেলথ সার্ভে ২০১৪ অনুসারে, দেশে শূন্য থেকে ছয় মাস বয়সী প্রতি দুইজন শিশুর মধ্যে মাত্র একজনকে  পরিপূর্ণভাবে বুকের দুধ খাওয়ানো হয়। এই অবস্থা থেকে উন্নতি প্রয়োজন। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশ অনুযায়ী, ছয় মাসের কম বয়সী সব শিশুকেই পরিপূর্ণভাবে বুকের দুধ খাওয়ানো উচিৎ।

 

আগামী তিন বছরের মধ্যে ভিশন গ্রুপের সঙ্গে এই সহযোগিতা পৌঁছে যাবে প্রায় এক  হাজার ৬৯৭ জন নারী কর্মীর কাছে। বিশেষ করে অন্তঃসত্ত্বা নারী, বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন এমন মা, নবজাতক ও ছোট বাচ্চাদের কাছে। এই কাজে অর্থায়ন হবে বিল অ্যান্ড মেলিন্ডাগেটস ফাউন্ডেশনের উদার সমর্থনের মাধ্যমে।

 

ভিশন গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. এ কে এম হামিদ বলেন, বুকের দুধ একটি শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশ লাভে সহায়তা করে। তা ছাড়া বুকের দুধ মা ও শিশুকে নিজেদের মধ্যে একটি অনন্য বন্ধনের অভিজ্ঞতা দেয়, যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি শিশুর মানসিক, আবেগগত ও সামাজিক বিকাশে ও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।

 

তিনি আরো বলেন, আমরা বিশ্বাস করি সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ানো উৎপাদনশীলতার পথে কোনো বাধা নয়। তাই ব্র্যাক ও ইউনিসেফের সহায়তায় ভিশন গ্রুপে কর্মরত মায়েদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়টি চিহ্নিত করতে পারাটা আমাদের জন্য একটি অসাধারণ সুযোগ। এর মাধ্যমে আমরা সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি এই শিল্পে দক্ষ কর্মজীবী মায়েদের ধরে রাখতে পারবো।

 

ব্র্যাকের মাধ্যমে ইউনিসেফ সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ানোর বিষয়ে সহায়তা প্রদানের ওপর কারিগরি সহায়তা প্রদান করবে। পাশাপাশি এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের জ্ঞানের উৎকর্ষ সাধন এবং নারীকল্যাণ কর্মকর্তা ও স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের (চিকিৎসক ও নার্স) সক্ষমতা জোরদার করবে। একই সঙ্গে কর্মজীবী নারীদের জন্য নবজাতক ও ছোট বাচ্চাদের খাওয়ানোর বিষয়ে পরামর্শ (কাউন্সেলিং) প্রদান করবে।

 

ইউনিসেফ বাংলাদেশ প্রতিনিধি অ্যাডওয়ার্ড বেগবেদার বলেন, ‘শিশুরা হচ্ছে সমাজ এবং উন্নয়নের কেন্দ্র। তারা ভবিষ্যতের ভোক্তা, কর্মী এবং ব্যবসায়িক নেতা। শিশুদের পেছনে বিনিয়োগ করে যা অর্জন করা যায় তা অন্য সব ক্ষেত্রের চেয়ে অনেক বেশি।’

 

তিনি বলেন, ‘এই সহায়তা প্রদান মা ও শিশু উভয়ের জন্যই সঠিক কাজ। বুকের দুধ শুধু শিশুমৃত্যু হারই কমায় না, শৈশবকালীন অসুস্থতা ও অসংক্রামক অনেক রোগও প্রতিরোধ করে। এটি শিশুর মস্তিষ্ক গঠনে সহায়তা করে এবং মাতৃস্বাস্থ্যের সুরক্ষা দেয়। ভালো অর্থনৈতিক ধারণা তৈরি করে। যেসব নারী কর্মক্ষেত্রে সহায়তা পায় তারা তাদের নিয়োগকর্তাকে মূল্যায়ন করে, উৎপাদন বৃদ্ধিতে নেতৃত্ব দেয়, কাজে সন্তুষ্ট ও অনুগত থাকে।’

 

এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে অংশীদারী প্রতিষ্ঠান ব্র্যাক সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ানোর বিষয়ে কর্মজীবী মায়েদের মধ্যে অভ্যাস বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে। পাশাপাশি শিশুকে ছয়মাস বয়স পর্যন্ত পরিপূর্ণভাবে বুকের দুধ খাওয়ানো অব্যাহত রাখতে উৎসাহ দেবে।

 

ব্র্যাকের স্বাস্থ্য পুষ্টি এবং জনসংখ্যা প্রকল্পের পরিচালক ড. কাওসার আফসানা বলেন, ‘শহরের বস্তিবাসী, পোশাককর্মী এবং অভিবাসী মানুষের পুষ্টি ও স্বাস্থ্যগত অবস্থার উন্নয়নে ব্র্যাকের স্বাস্থ্য পুষ্টি এবং জনসংখ্যা প্রকল্প একটি গুরুত্বপূর্ণ প্লাটফরম হতে পারে।

 

কমিউনিটিভিত্তিক পুষ্টি নিশ্চিত করতে ব্র্যাকের সফল অভিজ্ঞতা রয়েছে এবং এখন শহর এলাকায় বিশেষ করে কর্মক্ষেত্রে পুষ্টিহীনতা চিহ্নিত করতে ব্র্যাকের সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে।’

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩১ আগস্ট ২০১৬/মিথুন/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়