ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

মাশরাফির হ্যাটট্রিক আর শান্তর সেঞ্চুরিতে আবাহনীর জয়

ইয়াসিন হাসান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:২৪, ৬ মার্চ ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
মাশরাফির হ্যাটট্রিক আর শান্তর সেঞ্চুরিতে আবাহনীর জয়

ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। জিতেছেন ম্যাচসেরার পুরস্কারও। ছবি: জনি সোম

ক্রীড়া প্রতিবেদক, ফতুল্লা থেকে : মাশরাফি বিন মুর্তজার শর্ট বল পুল করলেন শাহরিয়ার নাফীস। ১২১ রান নিয়ে ব্যাটিং করা শাহরিয়ারের শট মিড উইকেট দিয়ে চলে যেত বাউন্ডারির বাইরে। কিন্তু উড়ে এলেন সানজামুল ইসলাম। দুর্দান্ত, অসাধারণ এক ক্যাচ নিলেন।

আবাহনীকে হারাতে তখন ৫৭ রানে দূরে ছিল অগ্রণী ব্যাংক। কিন্তু সানজামুলের ওই ক্যাচই আবাহনীকে ফেরাল ম্যাচে। মাশরাফির বোলিং এবং সানজামুলের ওই ক্যাচেই শেষ অগ্রণী ব্যাংকের জয়ের স্বপ্ন। বৃথা যায় শাহরিয়ারের ১২১ রানের ম্যারাথন ইনিংস।



ফতুল্লায় আজ টস জিতে ব্যাট করতে নেমে আবহনী ৬ উইকেটে করে ২৯০ রান। জবাবে অগ্রণী ব্যাংক আটকে যায় ২৭৯ রানে। ১১ রানের দুর্দান্ত জয় দিয়ে ওয়ালটন ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে ফের জয়ে ফিরল শিরোপা প্রত্যাশীরা।

ম্যাচসেরা নির্বাচিত হয়েছেন আবাহনীর হয়ে সেঞ্চুরি করা নাজমুল হোসেন শান্ত। তার ১৩৩ রানের ইনিংসে আবাহনী পায় জয়ের ভিত। শাহরিয়ার নাফীস জবাব দিয়েছিলেন সেঞ্চুরি দিয়েই। কিন্তু আবাহনীর জয়ের দিন শেষ হাসিটা হাসলেন শান্ত।

আবাহনীর ইনিংসকে একাই টেনেছেন শান্ত। ১২৩ বলে ১১ চার ও ৩ ছক্কায় সাজান ক্যারিয়ার সেরা ১৩৩ রানের ইনিংস। এনামুল হক বিজয় দলীয় ৩৯ রানে আউট হওয়ার পর ব্যাটিংয়ে আসেন শান্ত। ইনিংসের শেষ পর্যন্ত ক্রিজে থেকে অপরাজিত থাকেন বাঁহাতি টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৬ রান করেন মোহাম্মদ মিথুন। দুজন পঞ্চম উইকেটে ১৪০ রানের জুটি গড়েন। আল-আমিনের বলে ইনিংসের শেষ ওভারে আউট হন মিথুন। এর আগে মোসাদ্দেক ১৯, নাসির ২৫, সাইফ হাসান ২৪ ও বিজয় ২৩ রান করে আউট হন।



বোলিংয়ে একটা পর্যায়ে ভালো অবস্থানেই ছিল অগ্রণী ব্যাংক। ৩৫.২ ওভারে তারা ১৪৭ রানের খরচে তুলে নেয় ৪ উইকেট। এরপরই পাল্টে যায় আবহানীর ব্যাটিং। শেষ ৮৮ বলে তারা তোলে ১৪৩ রান। আল-আমিন ৫৫ রানে এবং সালমান ৪০ রানে ২টি করে উইকেট নেন।

২৯১ রানের লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা ভালো হয়েছিল অগ্রণী ব্যাংকের। ৫১ রানের জুটি গড়েন আজমীর আহমেদ ও শাহরিয়ার। ১৩তম ওভারে এ জুটি ভাঙেন সানজামুল। ৬৩ রানে সায়মন আহমেদকে হারায় অগ্রণী। এরপরই পাল্টে যায় তাদের ব্যাটিং। পাকিস্তানি রাজা আলী দারকে সঙ্গে নিয়ে শাহরিয়ার তৃতীয় উইকেটে ১৪৬ রানের জুটি গড়েন। এ জুটিতে জয়ের পথে এগিয়ে যেতে থাকে অগ্রণী। আগের ম্যাচে ৯৯ রানে আউট হওয়া শাহরিয়ার এবার তুলে নেন সেঞ্চুরি। ৬৯ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করা বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান সেঞ্চুরি পান ১০২ বলে। তাকে সঙ্গ দিয়ে রাজাও ৬২ রান যোগ করেন।



শেষ দশ ওভারে অগ্রণীর জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৯৩ রান। আবাহনীর প্রয়োজন ছিল জুটি ভাঙার। ৪২তম ও ৪৪তম ওভারে কাজটা করে দেন সবুজ ও মাশরাফি। সবুজ রাজা আলী দারকে ফেরান উইকেটের পেছনে ক্যাচ বানিয়ে। আর ৪৪তম ওভারে মাশরাফির বলে শাহরিয়ারের দুর্দান্ত ক্যাচ দেন সানজামুল। তাতেই পথ অনেকটা সহজ হয়ে যায় আবাহনীর। পরবর্তীতে মাশরাফি নেন জাহিদ জাভেদের উইকেটও।

ধীমান ঘোষ একপ্রান্তে চেষ্টা করে গিয়েছিলেন। কিন্তু মাশরাফির নিখুঁত বোলিংয়ে আর পারেনি অগ্রণী। শেষ ৬ বলে ১৩ রান দরকার ছিল অগ্রণীর। দ্বিতীয় ও তৃতীয় বলে মাশরাফি একে একে তুলে নেন ধীমান (২৭ বলে ৪৬) ও আব্দুর রাজ্জাকের উইকেট (১১ বলে ১২)। এর আগে ক্যারিয়ারে একাধিকবার হ্যাটট্রিকের সুযোগ তৈরি করলেও পারেননি।



এবার হয়েছে ঠিকই, শফিউল ইসলামকে আউট করে মাশরাফি পূর্ণ করেন হ্যাটট্রিক। শর্ট বল পুল করতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ দেন শফিউল। পঞ্চম বলে আবারো উইকেট মাশরাফির। ফজলে রাব্বী পুল করতে গিয়ে টপ এজ হন। উইকেটরক্ষক মিথুন অসাধারণ দক্ষতায় বল তালুবন্দি করেন।

প্রথম ৬ ওভারে ২২ রানে মাশরাফি ছিলেন উইকেটশূন্য। পরের ৩.৫ ওভারে ২২ রানে মাশরাফির শিকার ৬ উইকেট। ২০১৩ সালে প্রিমিয়ার লিগ লিস্ট ‘এ’ মর্যাদা পাওয়ার পর অষ্টম হ্যাটট্রিকের ঘটনা এটি। এবারের আসরের তৃতীয়। আর বাংলাদেশের প্রথম বোলার হিসেবে চার বলে ৪ উইকেটের স্বাদ পেলেন মাশরাফি।



রাইজিংবিডি/ফতুল্লা/৬ মার্চ ২০১৮/ইয়াসিন/পরাগ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়