ঢাকা     বুধবার   ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৪ ১৪৩১

এরশাদের মহাসমাবেশে নেতাদের নির্বাচনী শোডাউন

মোহাম্মদ নঈমুদ্দীন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:২৫, ২৪ মার্চ ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
এরশাদের মহাসমাবেশে নেতাদের নির্বাচনী শোডাউন

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় পার্টির নেতৃত্বাধীন সম্মিলিত জাতীয় জোটের মহাসমাবেশে নির্বাচনী শোডাউন করেছেন জাতীয় পার্টি ও জোটের নেতারা। নির্বাচনী এলাকা থেকে লোকজন নিয়ে মিছিল সহকারে সমাবেশে যোগ দেন তারা। দলবল নিয়ে উপস্থিত হয়ে মহাসমাবেশে শোডাউনের মধ্যদিয়ে আগামী নির্বাচনে টিকিট নিশ্চিত করতে পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সুনজরে পড়ার চেষ্টা করেছেন নেতারা।

হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মহাসমাবেশে সবচেয়ে বড় শোডাউন করেছেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি। তার নির্বাচনী এলাকা ঢাকা-৪ ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় ১৫ হাজার নেতাকর্মী পৌনে ১১টার দিকে দিকে সবুজ রংয়ের গেঞ্জি ও টুপি পড়ে লাঙ্গল কাঁধে বাদ্য বাজনা নিয়ে নান্দনিক সাজে বিশাল মিছিল সহকারে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশ করলে পুরো এলাকা জুড়েই উৎসবের আমেজ সৃষ্টি হয়। এ সময় জাতীয় পার্টির এক জ্যেষ্ঠ নেতার বক্তব্য থামিয়ে আবু হোসেন বাবলার মিছিলকে স্বাগত জানানো হয়। মিছিলে নেতৃত্ব দেন জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা সুজন দে, শেখ মাসুক রহমান, শ্যামপুর থানা জাতীয় পার্টির সভাপতি কাওসার আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম মোল্লা।

বিশাল মিছিল সোহরাওয়ার্দীর উদ্যানে রওয়ানা হলে পল্টন মোড়, জাতীয় প্রেসক্লাব ও মৎস ভবনসহ আশপাশে যানজটের সৃষ্টি হয়। যানজটের জন্য নগরবাসীর কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন এমপি বাবলা।

এর আগে সকাল ৯টা থেকেই শ্যামপুর ও কদমতলী থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে আবু হোসেন বাবলার অনুসারীরা রাজধানীর মুক্তাঙ্গনে সমবেত হয়। শতাধিক মিছিল আসে আবু হোসেন বাবলার নির্বাচনী এলাকা থেকে। হাজারো নেতাকর্মীর কাঁধে ছিল লাঙল, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, রওশন এরশাদ, রুহুল আমিন হাওলাদার ও আবু হোসেন বাবলার বিশালাকার ছবি সম্বলিত রং-বেরংয়ের ফেস্টুন।

 



সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি ছাড়াও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় পার্টির মহাসচিব এ বি এম রহুল আমিন হাওলাদার ও তার স্ত্রী নাসরিন জাহান রত্না হাওলাদার এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও মহিলা পার্টির সভানেত্রী সালমা ইসলাম, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি এস এম ফয়সল চিশতী ও সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম সেন্টু, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা এমপির শোডাউন চোখে পড়ে।

মহাসমাবেশে প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন, প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, এ টি ইউ এম তাজ রহমান, মশিউর রহমান রাঙ্গা, চট্টগ্রামের মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী, ইয়াহ্‌ইয়া চৌধুরী এমপি, ঢাকা জেলার ইসরাফিল খোকন, উপদেষ্টা রিন্টু আনোয়ার, নাজমা আখতার, ভাইস চেয়ারম্যান কুমিল্লার শফিকুল ইসলাম, ইকবাল হোসেন রাজু, যুগ্ম মহাসচিব জহিরুল আলম রুবেল, মোস্তাকুর রহমান মোস্তাক, যুগ্ম মহাসচিব টাঙ্গাইলের আশরাফ সিদ্দিকী, মহিলা পার্টির সেক্রেটারি অনন্যা হোসেন মৌসুমী, অ্যাডভোকেট সাহিদুর রহমান রিংকু, যুব সংহতির সভাপতি আলমগীর সিকদার লোটন, সেক্রেটারি ফখরুল আহসান শাহজাদা, যুব সংহতির দ্বীন মোহাম্মদ, শ্রমিক পার্টির আশরাফুজ্জামান খান, জাপার সরদার শাজাহান, চট্টগ্রামের এমপি মাহজাবিন মোর্শেদ, এমপি রুস্তম আলী ফরাজী, আমির হোসেন এমপি, পীর ফজলুর রহমান এমপি, ছাত্রসমাজের সভাপতি ইফতেখার আহসান ও সেক্রেটারি মিজানুর রহমান মিরু, জাপার কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য চট্টগ্রামের মাসুদুর রহমান মাসুদের অনুসারীরা শোডাউন করে মহাসমাবেশে নজর কাড়েন।

জোটের শরিক বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী তাদের চেয়ারম্যান মাওলানা এম এ মান্নান, মহাসচিব মাওলানা এম এ মতিনের নাম সম্বলিত প্ল্যাকার্ড ও দলীয় প্রতীক মোমবাতির ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে সমাবেশে আসেন। এ সময় তারা ইসলামী ফ্রন্ট ও মোমবাতি নিয়ে স্লোগান দেন।

তাছাড়া জাতীয় যুব সংহতি, জাতীয় ছাত্র সমাজ, জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক পার্টি, জাতীয় শ্রমিক পার্টি, জাতীয় কৃষক পার্টি, ওলামা পার্টির নেতাকর্মীরা আলাদা মিছিল সহকারে সমাবেশে যোগ দেন।

 



হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মহাসমাবেশে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়। প্রবেশমুখে তল্লাশি করে সবাইকে ঢুকতে দেওয়া হয় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। এ সময় কিছুটা ভোগান্তির শিকার হন নেতাকর্মীরা। সমাবেশে সারা দেশ থেকে আসা নেতাকর্মীদের মাঝে বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহ করা হয়। জাতীয় কৃষক পার্টির সভাপতি সাহিদুর রহমান টেপার ব্যক্তিগত উদ্যাগে নেতাকর্মীদের মাঝে খাবার পানির বোতল সরবরাহ করা হয়।

সাংবাদিকদের চরম ভোগান্তি : মহাসমাবেশে চরম ভোগান্তির শিকার হয়েছেন সাংবাদিকরা। অনেক সাংবাদিক নির্ধারিত মঞ্চে বসতে না পেরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে সংবাদ সংগ্রহ করেন। মাত্র কয়েকটি চেয়ার ছাড়া বাকি সব ছিল নেতাদের দখলে। আর যারা একটু বসার সুযোগ পেয়েছেন তারা মঞ্চে একটানা রোদে পুড়েছেন। এ সময় তৃষ্ণার্ত সাংবাদিকদের সামান্য পানিও জোটেনি।

হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের প্রেস উইংয়ের দায়িত্বশীল আব্দুর রহিম জাপা চেয়ারম্যানের লিখিত বক্তব্য নিয়ে একবার দেখা দিলেও জাতীয় পার্টির আর কাউকে চোখে পড়েনি। আশপাশেই ছিলেন না তাদের কেউ। জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশে মূলমঞ্চে তাদের ব্যস্ত দেখা গেছে। কোন সমস্যা হচ্ছে কি না, একটু জানতে চাননি এরশাদের প্রেস অ্যান্ড পলিটিক্যাল সেক্রেটারি সুনীল শুভ রায়ও। এত কিছুর পরও কষ্ট করে ভোগান্তির মধ্যেই সমাবেশ কাভার করেন সাংবাদিকরা। তবে মহাসমাবেশে সাংবাদিকদের জন্য পানি, দুপুরের খাবারের জন্য বরাদ্দ ছিল বলে জানা গেছে। সাংবাদিকদের দেখভাল না করায় দলের নেতারাই এই বাজেট নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। 



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৪ মার্চ ২০১৮/নঈমুদ্দীন/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়