ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

রাজ্জাক আঙ্কেল আমার দায়িত্ব নিতে চেয়েছিলেন || অপু বিশ্বাস

অপু বিশ্বাস || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:০১, ২৪ আগস্ট ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
রাজ্জাক আঙ্কেল আমার দায়িত্ব নিতে চেয়েছিলেন || অপু বিশ্বাস

অপু বিশ্বাস : ২০০৫ সালে আমি তখন ক্লাস নাইনে পড়ি। বান্ধবীদের ইচ্ছায় লাক্স ফটো সুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশ নিলাম। বান্ধবীরাই টিফিনের টাকা দিয়ে স্কুলের সামনের একটি স্টুডিও থেকে ছবি তোলার ব্যবস্থা করেছিল। এরপর লেখাপড়া নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ায় সে কথা ভুলেও গিয়েছিলাম। যদিও পরে রিপ্লাই এসেছিল। কিন্তু হঠাৎ একদিন আমার এক মামা এসে বললেন, তুই কিছু ছবি তুলেছিস আমি দেখেছি। শাবনূরের বান্ধবীর চরিত্রে একটা মেয়ে লাগবে। তুই কাজ করবি?

মামার কথা শুনে আমি ভীষণ একসাইটেড! শাবনূর আপুকে বাস্তবে দেখব এবং তার সঙ্গে আমি কাজ করব! বিশেষ করে আম্মুর আমজাদ আঙ্কেলক ও রাজ্জাক আঙ্কেলকে দেখার খুব ইচ্ছে ছিল। আম্মুর ধারণা ছিল সিনেমায় কাজ করতে এলে রাজ্জাক আঙ্কেলকে দেখা যাবে। রাজ্জাক আঙ্কেলের খুব ভক্ত সে। ফলে মা এবং আমি মামার প্রস্তাবে রাজি হয়ে যাই। আমজাদ আঙ্কেল তখন ‘কাল সকালে’ বানাচ্ছিলেন। এটিই আমার প্রথম সিনেমা। কাজ শেষে আমি আবার বগুড়া ফিরে আসি। সিনেমার সঙ্গে তখনও আমার প্রেম হয়নি।

বগুড়া ফিরে পড়াশোনায় মনোযোগী হলাম। সামনে এসএসসি পরীক্ষা। ফলে সিনেমা নিয়ে আমার আর মাথা ব্যথা ছিল না। কিন্তু মানুষ ভাবে এক হয় আরেক। একদিন পরিচালক এফ আই মানিক ভাইয়ের ফোন পেলাম। তিনি ‘কোটি টাকার কাবিন’ সিনেমার জন্য নতুন নায়িকার খোঁজ করছিলেন। তিনি যখন আমাকে প্রস্তাব দিলেন আমি জানতে চেয়েছিলাম কে কে অভিনয় করবেন? তিনি যখন রাজ্জাক আঙ্কেলের নাম বললেন আমি শুনে অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। আম্মু প্রস্তাবে একবাক্যে রাজি হয়ে গেলেন। তিনি শুধু এক নজর রাজ্জাক আঙ্কেলকে দেখতে পারবেন সে কারণেই আমাকে অনুমতি দিয়েছিলেন। ডিপজল ভাইয়ের প্রযোজনায় এটি নির্মিত হয়। এ সিনেমায় আমার বাবার চরিত্রে অভিনয় করেন রাজ্জাক আঙ্কেল। প্রথম দিকে আমি শুধু আঙ্কেলকে দেখতাম। মুখের দিকে তাকিয়ে থাকতাম। শুটিং সেটে রাজ্জাক আঙ্কেল আমাকে বহুবার সাহস দিয়েছেন। কীভাবে ডায়ালগ থ্রো করতে হবে বুঝিয়ে বলেছেন। এরপর বেশ কয়েকটি সিনেমায় তার সঙ্গে কাজ করার সুযোগ হয়েছে। তিনি যে কিংবদন্তি এর পরিধি কতটা ছিল সে কথা বলার ভাষা আমার জানা নেই।

কিছুদিন আগে আমার পরিবারে একটা সমস্যা নিয়ে টেলিভিশনে তিনি কিছু কথা বলছিলেন। কথাগুলো এখনও আমার কানে বাজে। তিনি বলেছিলেন, ‘নায়কের বিয়ে, সন্তান হলে নায়ক পরে যায় না। আমিও বিয়ে করেই সিনেমায় নায়করাজ হয়েছি।’ এছাড়া তিনি আমার সমস্যার কথা শুনে বলেছিলেন, ‘অপুর দায়িত্ব আমি নেব।’ কথাগুলো শুনে আমার খুব ইচ্ছে হয়েছিল- এবারের কোরবানি ঈদে আঙ্কেলের পছন্দের কিছু রান্না করে তার বাসায় যাব। আমার ছেলে তার নাতির মতো। ওকেও চেয়েছিলাম সঙ্গে নিতে। তারপর আমরা একসঙ্গে খাব- এটাই ছিল পরিকল্পনা। আসলে ইচ্ছেটা পূরণ করতে পারলাম না। খুব খারাপ লাগছে।

অনুলিখন: রাহাত সাইফুল



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৪ আগস্ট ২০১৭/রাহাত/তারা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়