ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

মাগুরায় ধান কাটার শ্রমিক মিলছে না

মো. আনোয়ার হোসেন শাহীন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৩:৩৮, ২২ মে ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
মাগুরায় ধান কাটার শ্রমিক মিলছে না

মো. আনোয়ার হোসেন শাহীন, মাগুরা : মাগুরায় ধান কাটা শ্রমিকের একদিনের মজুরি ৭০০ টাকা। আবার খাবারের তালিকায় চলবে না পাঙ্গাস, সিলভার কার্প, তেলাপিয়া মাছ।

তালিকায় রাখতে হবে ভালো ভালো খাবার। বাড়িতে থাকতে হবে টিভি। রাতে শোবার জন্য অবশ্যই দিতে হবে মশারি ও ফ্যান।

মাঠের পাকা ধান কেটে বাড়িতে আনতে হলে গৃহস্থকে এ ব্যবস্থা করতে হবে ধান কাটা শ্রমিকদের জন্য। এসব বলছিলেন মাগুরা সদরের বেল নগরের কৃষক আলতাফ হোসেন।

তিনি বলেন, এক মণ ধানের দামে একদিনের ধান কাটা শ্রমিক মিলছে না। এ কারণে সময় মতো তারা ধান কেটে ঘরে তুলতে পারছেন না।

রোববার বিকেলে মাগুরার নান্দুয়ালী ‘মানুষ বিক্রির হাটে’ ধান কাটা শ্রমিকদের সঙ্গে গৃহস্থদের চলছিল এমনই কথাবার্তা বা দর কষাকষি। মাগুরার মাঠে-মাঠে এখন পাকা বোরো ধান। আবহাওয়া খারাপ হয়ে যেকোনো সময় হতে পারে ঝড় বা ভারী বর্ষণ। মাঠ থেকে ধান কেটে বাড়ি আনতে গিয়ে গৃহস্থরা পড়েছেন বিপাকে। এ সুযোগে বিভিন্ন জেলা থেকে মাগুরার মানুষ বিক্রির হাটে আসা কৃষি শ্রমিকেরা নিচ্ছেন বাড়তি মজুরি। সঙ্গে সঙ্গে গৃস্থদের কাছে থেকে আদায় করে নিচ্ছেন ভালো খাওয়া ও আরাম-আয়েশে থাকার ব্যবস্থা।


সদর উপজেলার শত্রুজিৎপুর এলাকার গৃহস্থ নাসির উদ্দিন, শালিখার আনসার উদ্দিন জানান, ৬০০ টাকা দিয়ে জন (ধানকাট শ্রমিক) কিনেছেন। তবে তাদের তেলাপিয়া, সিলভার কার্প, পাঙ্গাস মাছ খেতে দিলে হবে না। বিড়ি, সিগারেট ও চাহিদা মতো সন্ধ্যার চা-নাস্তাও দিতে হবে। রাতে টিভি দেখার বব্যস্থা করতে হবে। তবে সবচেয়ে বড় শর্ত রাতে শোবার জন্য অব্যশই দিতে হবে মশারি ও ফ্যান।

গৃস্থরা বলেন, মাঠে পাকা ধান, আকাশে মেঘ। যে কারণে শ্রমিকদের সব শর্ত মেনে নিতে হচ্ছে। তবে গৃহস্থের দুঃখ এতকিছুর পরেও ধানের মণ ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা।

নাটোর, রাজশাহী, সিরাজগঞ্জ, পাবনা থেকে আসা করিম উদ্দিন, শাহিন, তুজাম, মোকলেছসহ একাধিক শ্রমিক বলেছেন, তারা অনেক টাকা বাস ভাড়া দিয়ে মাগুরায় এসেছেন। তা ছাড়া প্রচণ্ড রোদে পানি-কাদার মধ্যে ধান কাটা অনেক কষ্টের কাজ। তাই তারা ৭০০ টাকার কমে রাজি হচ্ছেন না। আর এখন মওকার সময় ৬০০-৭০০ টাকা দৈনিক হাজিরা না নিলে অন্য সময় তো ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হতে হয়।

শ্রীপুরের কাজলী থেকে শ্রমিক কিনতে হাটে এসেছেন মোবারক হোসেন। তিনি জানান, শুকনো চিকন ধান প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকায়। মোটা ভেজা ধান বিক্রি হচ্ছে ৭০০-৮০০ টাকা দরে। এক মণ ধানের দামে একজন শ্রমিকের একদিনের মজুরির পয়সাও হচ্ছে না।

মাগুরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক পার্থ প্রতিম সাহা বলেন, মাগুরায় ধান প্রধান ফসল। এ বছর ৩২ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে। যে কারণে ভরা মৌসুমে কৃষি শ্রমিকের মূল্য বেড়েছে। তবে সরকার ভর্তুকি দিয়ে নানা কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহ করছে। আগামীতে এ সমস্যা দূর হবে।




রাইজিংবিডি/মাগুরা/২২ মে ২০১৭/মো. আনোয়ার হোসেন শাহীন/এসএন

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়