ঢাকা     বুধবার   ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৪ ১৪৩১

প্রকাশিত খবরে বিভ্রাটে পড়েছেন সাংসদ মোতাহার

আসাদ আল মাহমুদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৪৭, ৩০ জানুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
প্রকাশিত খবরে বিভ্রাটে পড়েছেন সাংসদ মোতাহার

নিজস্ব প্রতিবেদক, সংসদ থেকে: সংসদ সদস্য মো: মোতাহার হোসেন ( লালমনিরহাট-১) বলেছেন, তার নামে একটি গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হওয়ায় তিনি বিভ্রাটে পড়েছেন। এ জন্য তিনি নিজের নিরাপত্তা চেয়ে স্পিকারের সহায়তা ও প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

মঙ্গলবার জাতীয় সংসদের ১৯তম অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে তিনি এই অবস্থার কথা জানান।

জবাবে সভাপতির চেয়ারে বসা ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া নোটিশ দিতে বলেন। ওই সংসদ সদস্যের বক্তব্যের সঙ্গে সহমত প্রকাশ করে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমও ওই রিপোর্টার ও পত্রিকার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললেন।

সংসদ সদস্য মো: মোতাহার হোসেন বলেন, ‘একটি পত্রিকা তুচ্ছ, তাচ্ছিল্য করে আমার বিরুদ্ধে লিখছে। আমার নাকি ১০০ কোটি টাকার সম্পদ আছে। তারা যে ছবি দিয়েছে সেই ছবিতেই আছে একতলা বাড়ি অথচ তারা বলছে বিলাসবহুল বাড়ি। আমার এলাকায় আমার ‘এন্ট্রিতে’ (বিপরীতে) জামায়াত, বিএনপি, জাতীয় পার্টি এই তিনটা আছে। তার সঙ্গে আবার আমাদের যারা ভোট করার জন্য রেডি (প্রস্তুত) আছে তারা সুরসুরি দিচ্ছে।’

মোতাহার বলেন, ‘ইয়েলো জার্নালিজমে (হলুদ সাংবাদিকতায়) জড়িত সবাই না, হয়তো দুই এক শতাংশ জড়িত। আমি আইনের আশ্রয় নিয়েছি। আমি বঙ্গবন্ধুর ডাকে মুক্তিযুদ্ধ করেছি, মুক্তিযোদ্ধা হয়েছি, সেখান থেকে ফিরে সেনা কর্মকর্তা হই। এরপর দুইবার উপজেলা চেয়ার‌ম্যান হই, এমপি হই, হুইপ হই, মন্ত্রী হই, সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান হই। প্রধানমন্ত্রী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য করেছেন, জামুকার সদস্য করেছেন। এতো কিছুর পরেও আমাকে বলে আমি নাকি সিপাই ছিলাম, আমার বাড়ি নাকি ভারতে। আমি তো বিভ্রাটে পড়েছি। আমার স্ত্রী জিজ্ঞেস করে তুমি তো ১৯৭১ সালে ৯ মাস ভারতে ছিলে তখন তো আমার বিয়ে হয়নি, তখন ওই দিকে বিয়ে করছিলে নাকি, বাড়ি করছিলে নাকি? আমি তো বিভ্রাটে আছি। আবার তারা বলছে আওয়ামী লীগ হারলে নাকি আমি ওই বাড়িতে চলে যাবো।'

তারা লিখছে, `মোতাহার হোসেন টাওয়ার আছে সেটা এই গুলশানেই। আমি জানতাম না, পরে আমার ছেলে খোঁজ নিয়ে বলল হ্যাঁ আছে। ওই টাওয়ারের মূল্য ৬ কোটি বা ৭ কোটি টাকা হবে। এখন সেটা বুঝিয়ে দিলেই হয়, আর তো কিছু লাগে না। যিনি লিখেছেন তার উচিত এই টাওয়ার আমায় বুঝিয়ে দেওয়া।’

তিনি বলেন, ‘এরা এভাবে আমাকে পলুটেড (কুলষিত) করছে কে, আমার নিরাপত্তা কে দেবে। আপনি স্পিকার এই হাউজের অভিভাবক। আপনি পারেন নিরাপত্তা দিতে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ তিনি যেন কমিটি করে একটি তদন্তের মাধ্যমে সঠিক ব্যবস্থা নেন।’

তিনি বলেন, ‘আমরা রাজনীতি করি পেশায় নয়, নেশায়। বঙ্গন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে আমি তা করবই। তারা কার টাকায় রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে নেমেছে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিন।’

এরপর  সাংসদ শেখ সেলিম বলেন, ‘পত্রপত্রিকায় যে কথাগুলো লিখছে এ ব্যাপারে আপনি (স্পিকার) চাইলে ব্যবস্থা নিতে পারেন। শুধু তার একার নয়, অনেক সংসদ সদসস্যের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে কাল্পনিক তথ্য দিয়ে লিখে এলাকায় এবং দেশবাসীর কাছে সংসদ সদস্যদের ভাবমুর্তি নষ্ট করছে। সুতরাং বিশেষ অধিকার কমিটিতে তাকে (যিনি লিখেছেন) ডেকে জিজ্ঞেস করতে পারেন তিনি এই সত্যতা কোথায় পেলেন, না পেলে তার বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা, সেটা নিতে পারেন, আপনার অধিকার আছে। এজন্য ওই সংসদ সদস্যকে নোটিশ দিতে হবে। সংসদ সদস্য আপনি একটা নোটিশ দেন, আর স্পিকার আপনি সেইভাবে তাকে ডেকে ব্যবস্থা নেন। কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারলে ভবিষতে এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না।’

ডেপুটি স্পিকার এসময় বলেন, ‘নোটিশ দিলে আমরা বিবেচনা করে দেখবো এবং যথাযথ ব্যবস্থা নেবো। তবে আমরা রাজনীতি করি দেশের মঙ্গলের জন্য, মানুষের কল্যাণের জন্য। আমার জানা মতে আপনি (মোতাহার হোসেন) সেই ধরনের একজন রাজনীতিবিদ, দেশের জন্য রাজনীতি করেন, মানুষের কল্যাণের জন্য রাজনীতি করেন। আমাদের নেত্রী সকলকেই ভাল করে চেনেন এবং আমাদের বিস্তারিত তার কাছে আছে। তাই কে কি লিখলো আর লিখলো না ওতে কিছু যায় আসে না। ওই ধরনের ঠুনকো কথায় শঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।’




রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩০ জানুয়ারি ২০১৮/আসাদ/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়