ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

পাঁচ উদ্যোগ জিপি অ্যাকসেলেরেটরে নির্বাচিত

মনিরুল হক ফিরোজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:২৬, ৭ মে ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
পাঁচ উদ্যোগ জিপি অ্যাকসেলেরেটরে নির্বাচিত

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ডেস্ক : দেশের প্রতিভাবান তরুণদের নতুন উদ্যোগকে কাজের জায়গা, পরিবেশ, প্রশিক্ষণ ও মেন্টরশিপ দিয়ে এগিয়ে নেওয়ার প্রোগ্রাম গ্রামীণফোন অ্যাকসেলেরেটরের (জিপিএ) পঞ্চম ব্যাচে পাঁচ উদ্যোগ নির্বাচিত হয়েছে।

আজ জিপি হাউজে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে গ্রামীণফোন অ্যাকসেলেরেটর (জিপিএ)-এর পঞ্চম ব্যাচকে চার মাসব্যাপী কর্মসূচিতে স্বাগত জানানো হয়। পঞ্চম ব্যাচে নির্বাচিত পাঁচ উদ্যোগ হলো-

সার্চ ইংলিশ : একটি ইরেজি ভাষা শিক্ষা প্ল্যাটফর্ম, যা ১০ লাখ সদস্যকে ফেসবুক, ওয়েবসাইট এবং ওয়েবিনারের মাধ্যমে তাদের ইংরেজি ভীতি কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করছে।

সিওয়ার্ক মাইক্রোজব লিমিটেড : এটি একটি ক্রাউড সোর্সড মাইক্রো জব প্ল্যাটফর্ম, এখানে নিয়োগকারীগণ, কন্ট্রিবিউটরদের জন্য কাজ দিয়ে থাকে। বর্তমানে সিওয়ার্ক গুগুল প্লে তে বাংলাদেশে সপ্তম স্থানে আছে এবং এর মাসিক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৫ হাজার।

অনুসার্ভার : এটি একটি অ্যাপ-ক্লাউড হাইব্রিড যা অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলফোনকে ক্ষুদ্র সার্ভারে পরিণত করে বিভিন্ন এসএমএস ও কলভিত্তিক সেবা প্রদানে সহায়তা করে। এই সেবা বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে সামান্য খরচে তাদের গ্রাহকসেবা ও বিপণন সেবা প্রদান করতে দেয়।

ডিজিটাল মানুষ : এটি একটি সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের জন্য লিড জেনারেটর ও মানুষকে সেবা প্রদানকারীর সঙ্গে যুক্ত করে। বর্তমানে তারা বাংলাদেশের বৃহত্তম লিড জেনারেশন সেবা প্রদানকারী। তারা দেশের ৫টি শহরের ১৭০টি এলাকায় এবং ভারতের একটি শহরে কাজ করছে।

পার্কিংকই : এটি গাড়ি চালকদের অব্যবহৃত পার্কিং খুঁজে পেতে সাহায্য করে এবং এর মাধ্যমে বাড়ির মালিকরা তাদের অব্যবহৃত পার্কিং ভাড়া দিয়ে অর্থ আয় করতে পারে।

অনুষ্ঠানে গ্রামীণফোনের সিইও মাইকেল ফোলি্ বলেন, ‘বাংলাদেশে অনেক তরুণ প্রতিভা আছে যাদের সাফল্য লাভের জন্য সামান্য সহযোগিতা দরকার। জিপি অ্যাকসেলেরেটর হচ্ছে সেই সহযোগিতা।’

পঞ্চম ব্যাচের জন্য জিপি অ্যাকসেলেরেটর দুই সপ্তাহে ১ হাজারের বেশি আবেদন পেয়েছিল। একটি কঠিন বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ৩৫টি স্টার্টআপকে দুই দিনব্যাপী বুট ক্যাম্পে আমন্ত্রণ জানানো হয় এবং এদের মধ্যে থেকে ১৫টি স্টার্টআপকে নির্বাচন করা হয় আরো আরো যাচাই, মুখোমুখি সাক্ষাতকার এবং পিচ প্রেজেন্টেশনের জন্য। তীব্র প্রতিযোগিতার পর এই পাঁচটি প্রতিশ্রুতিশীল স্টার্টআপকে জিপি অ্যাকসেলেরেটরের পঞ্চম ব্যাচের জন্য নির্বাচন করা হয়।

গ্রামীণফোনের চিফ স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড ট্র্যান্সফরমেশন অফিসার কাজী মাহবুব হাসান বলেন, ‘এই অ্যাকসেলেরেটর প্রোগ্রাম খুব কমসময়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত স্টার্টআপ মেন্টরশিপ প্রোগ্রামে পরিণত হয়েছে। এটা সম্ভব হওয়ার কারণ হচ্ছে, প্রোগ্রামের মেন্টর এবং অংশগ্রহণকারীরা কখনোই তাদের লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হয়নি। নতুন এই ব্যাচ এখন পর্যন্ত দেখা ব্যাচগুলোর মধ্যে সবচেয়ে সেরা এবং আমি অপেক্ষায় আছি এটা দেখতে যে তারা এই প্রোগ্রাম শেষ করার পর কতটা সাফল্য অর্জন করে।’

জিপি অ্যাকসেলেরেটর একটি উদ্ভাবনী প্ল্যাটফর্ম যেখানে, প্রতিটি ব্যাচের স্টার্টআপদের চার মাসব্যাপী আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় বিশেষজ্ঞ দ্বারা কারিকুলামভিত্তিক মেন্টরশিপ প্রদান করা হয়। নির্বাচিত প্রতিটি স্টার্টআপ ৮% ইকুইটির বিপরীতে ১৫ হাজার ডলার সিড ফান্ড হিসেবে দেয়া হয়। এছাড়াও তাদের ১১ হাজার ২০০ মার্কিন ডলার মূল্যের অ্যামাজন ওয়েব সার্ভিস (এডব্লিউএস) ক্রেডিট এবং চার মাসব্যাপী জিপি হাউজে কাজ করার জন্য বিশাল জায়গা দেয়া হয়ে থাকে।

চার মাসের এ্ই প্রোগ্রামে অংশগ্রহণকারীরা স্থানীয় ও বিদেশি মেন্টর, খাত বিশেষজ্ঞ এবং পেশাজীবিদের কাছ থেকে টার্ম শিট, মূল্যায়ন, আর্থিক মডেলিং ও ব্র্যান্ডিং এর মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো শিখতে পারে। একই সঙ্গে এই প্ল্যাটফর্ম সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের পরিচয় করিয়ে দিতে পারে। নির্বাচিত প্রতিটি স্টার্টআপ যে সহায়তা দেয়া হয় তার বাজামূল্য প্রায় ৬৫ লাখ টাকা।

২০১৫ সালে চালু হওয়া এই কর্মসূচির মাধ্যমে এর আগে আরো ২১টি স্টার্টআপকে সহায়তা দেয়া হয়েছে। বিভিন্ন ব্যবসায়িক খাত থেকে আসা জিপি অ্যাকসেলেরেটরের আগের স্টার্টআপগুলো এখন বেশ সাফল্য অর্জন করেছে। এসব স্টার্টআপ মাত্র ছয় মাসে গড়ে তাদের কোম্পানির মূল্য ৪ গুণ বৃদ্ধি করেছে। ১২টি চালু কোম্পানির মধ্যে দুটি ইতোমধ্যেই তাদের মূল্যমান ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে।

জিপি অ্যাকসেলেরেটরের প্রধান মিনহাজ আনোয়ার বলেন, ‘মাত্র দুই বছরেরই জিপি অ্যাকসেলেরেটর বাংলাদেশের স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমে একটি মানদণ্ড হয় উঠেছে।’

অ্যাকসেলেরেটর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান স্টার্টআপ ঢাকার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুস্তাফিজুর আর খান বলেন, ‘আমাদের ব্যাচগুলো তাদের উদ্ভাবনের জন্য স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন এবং তাদের ব্যবসায়ের সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে নতুন মানদন্ড তৈরি করেছে। আমাদের বিশ্বাস নতুন ব্যাচটি এই প্রোগ্রামের মান আরো উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।’




রাইজিংবিডি/ঢাকা/৭ মে ২০১৮/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়