রোকেয়ার কবিতা: অনালোচিত অধ্যায় নিয়ে আলোচনা
|| অঞ্জন আচার্য ||
রোকেয়ার সবচেয়ে অনালোচ্য অধ্যায় তাঁর কবিতা। এর কারণ হয়ত তাঁর কোনো কবিতাগ্রন্থ প্রকাশিত হয়নি জীবদ্দশায়। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত কবিতাগুলোর মধ্যে যা যৎসামান্য পাওয়া যায়, তা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় পাঠককে। এ যাবৎ প্রাপ্ত প্রকাশিত সেই কবিতাগুলো পত্রিকার নাম উল্লেখপূর্বক কালক্রমিক সাজালে দাঁড়ায়- ‘বাসিফুল’, নবনূর, ফাল্গুন ১৩১০; ‘শশধর’, নবনূর, চৈত্র ১৩১০; ‘প্রভাতের শশী’, মহিলা, বৈশাখ ১৩১১; ‘পরিতৃপ্তি’, মহিলা, জ্যৈষ্ঠ, ১৩১১; ‘নলিনী ও কুমুদ’, নবনূর, আষাঢ় ১৩১১; ‘স্বার্থপরতা’, মহিলা, আষাঢ় ১৩১১; ‘কাঞ্চনজঙ্ঘা’, নবনূর, পৌষ ১৩১১; ‘কাঞ্চনজঙ্ঘা’, মহিলা, পৌষ ১৩১১; ‘প্রবাসী রবিন ও তাহার জন্মভূমি’, মহিলা, মাঘ ১৩১১; ‘সওগাত’, সওগাত, অগ্রহায়ণ ১৩২৫; ‘আপীল’, সাধনা, ফাল্গুন ১৩২৮; ‘নিরুপম বীর’, ধূমকেতু, আশ্বিন ১৩২৯ বঙ্গাব্দ।
তবে রোকেয়া-গবেষকদের মতে রোকেয়া গদ্যসাহিত্য রচনায় যতখানি স্বতঃস্ফূর্ত ছিলেন, ততটাই নিষ্প্রভ ছিলেন কবিতা রচনায়। গদ্য ‘মতিচূর’, ‘অবরোধ-বাসিনী’, উপন্যাস ‘পদ্মরাগ’, রূপকধর্মী ইংরেজি রচনা Sultana’s Dream সহ বাংলা ও ইংরেজি প্রবন্ধ, ছোটগল্প ও রস-রচনা প্রভৃতি সাহিত্যকর্মে রোকেয়ার যে পরিচিত অবয়ব দেখা যায়, কবিতায় সেই রূপটি প্রায় নেই বললেই চলে। কবিতায় তিনি ভিন্নরকম। প্রতিবাদী ও নারীবাদী মনুষটিকে এখানে প্রায় পাওয়াই যায় না। কবিতায় তিনি যেন কুসুম-কোমল অথবা শত আঘাতের পরে যেন এক আত্মসমর্পণকারী নারী; প্রণীত প্রার্থনায় যে প্রণত। তাঁর যাবতীয় দুঃখ-যাতনার আশ্রয়স্থল। তাঁর অস্ফূট কথামালা মূলত প্রকাশ পেয়েছে তাঁর কবিতার মধ্য দিয়ে। যেমন, ‘বাসিফুল’ কবিতায় দেখা যায় কোনো এক পিসিমা তার অকালমৃত ভ্রাতৃপুত্রতুল্যের স্মৃতি রোমন্থনে শোকাতুর। মৃতের প্রতি কী এক অমোঘ টানে বন্দি। আকুলতায় বারবার কাছে পেতে চায় হারিয়ে যাওয়া পরম স্নেহের মানুষটিকে, স্মৃতিময় সেই দিনগুলো ক্রমাগত দংশন করে যেন। কিয়দংশ উদ্ধৃত করা যেতে পারে-
“পিসিমা! তোমারি তরে এনেছি এ-ফুল।”
সেই কথা পুনরায় শুনিতে পরাণ চায়-
কোথা সে বালক মোর প্রেমের পারুল?
...
সেই কথা শুনিতে এ পরাণ ব্যাকুল।
বাজে কি স্বরগ-পুরে গন্ধর্বের বীণা-সুরে
“পিসিমা! তোমারি তরে এনেছি এ-ফুল?”
...
পাব না প্রাণের ধন, পাব না সে ফুল।
আর শুনিবে না প্রাণ সমাহিত করিবারে
অমন স্বরগ-শিশু, বিশ্বে যে অতুল?
...
শুধু স্মৃতি-কুঞ্জে ফুটে আছে “বাসি ফুল”
সে মুখের স্মৃতি-সুখ ভরিয়ে রেখেছে বুক,
অঙ্কিত সে চিরতরে, হইবে না ভুল।
‘শশধর’ কবিতায় দেখা যায়, কবির চাঁদের সাথে দীর্ঘ আলাপন। চাঁদকে কবি নিজের সাথে তুলনা করেছেন। একান্ত বন্ধু ভেবে চাঁদকে কবি বলছেন-
‘কি ভাবিছ শশধর! বসি’ নীলাসনে?
কি রেখেছ শশধর! হৃদয়ে গোপনে?
লু’কাতে পারোনি তাহা প্রভূত যতনে, আহা!
দেখা যায় কালো ছায়া ও চাঁদ-বদনে!
কি ভাবিছ শশধর! বসি যোগাসনে?’
‘প্রভাতের শশী’ কবিতায় দেখা যায় সকালে দৃশ্যমান ম্লান চাঁদের সাথে কথা বলছেন কবি। সুন্দর সকাল হওয়ার পরও রাতের ঝলমলে চাঁদ কেন এমন শুকনো মুখো হয়ে আছে, তা-ই জানতে চান তিনি। তাই চাঁদকে উদ্দেশ্য করে বলেন-
‘সুপ্রভাত! কেন শশি! বিষণ্ন বদন
কোন সুগভীর ভাবে হয়েছ মগন?
সারারাত জেগে এবে নিশাশেষ ভাগে
ঘুমে ঢুলুঢুলু মরি! নিষ্প্রভ নয়ন।’
সেই কবিতার শেষ প্যারাটিতে প্রকাশ পেয়েছে কবির চলমান কর্ম-স্বপ্ন। তাই তিনি লিখেন-
‘আর ভাই শশধর! এই আশীর্ব্বাদ কর,
পর দুঃখে পারি যেন করিতে রোদন,
জাগি দীর্ঘ শশি! দুঃখীর শিয়রে বসি
ঢালি যেন শান্তি সুধা তোমার মতন।’
‘পরিতৃপ্তি’ কবিতাটি ‘সুখ’ নামক অলীকবস্তু নিয়ে রচিত। মানব জাতির কাছে গূঢ়তম তত্ত্ব উপস্থাপিত হয়েছে এ কবিতাটির মধ্য দিয়ে। কবিতায় রাজা ও ভিখারির কথোপকথনের ভেতর দিয়ে প্রকাশ পায় প্রকৃত সুখের মন্ত্র। শত্রুকে পরাস্ত করে রাজা মহাসুখী। তার প্রসাদ নতুন সাজে সজ্জিত। রত্নখচিত সোনার সিংহাসনে তিনি উপবিষ্ট হন। বিজয়ের উল্লাসে মাতোয়ারা রাজা সভাসদ নিয়ে বসেন। নিজের মতো সুখী এ পৃথিবীতে আর যেন কেউ নেই। এমন সময় সেখানে উপস্থিত হয় এক ভিখারি। তার গায়ে কাপড় নেই। এই দেখে রাজা তাকে কাপড় অর্থ ও কাপড় দিতে চান। কিন্তু আত্মশ্লাঘায় সেই ভিখারি তা নিতে অস্বীকৃতি জানায়। কোনো কিছু না-থেকেও যে ভালো থাকা যায়, কোনো প্রাপ্তি না-রেখেও যে সুখী হওয়া যায়, তাই প্রকাশ করতে যেন এই ভিখারির আবির্ভাব। কবিতাটির শেষ পঙ্ক্তিগুলো কবির আত্মবিশ্লেষণ-
‘অনেকেই ভাবে তৃপ্তি ধনে মানে হয়,
কিছুতে নাশিতে নারে অতৃপ্তি দুর্জয়!
তৃপ্তি লভিবার তরে এটা সেটা লাভ করে,
এ শুধু মনের ভ্রম আর কিছু নয়।
তৃপ্তি বিধাতার দান, তৃপ্তি দিয়ে যে পরাণ
বিধি তুষিয়াছে- তৃপ্তি সেইখানে রয়।’
‘নলিনী ও কুমুদ’ কবিতাটিতে ‘নলিনী’ জীবন-বিষাদগ্রস্ত, মৃত্যুপ্রত্যাশী। অন্যদিকে ‘কুমুদ’ প্রাণময়, উচ্ছল জীবনের অধিকারী। নলিনীর কাছে জীবন অর্থহীন, কুমুদের কাছে অর্থবহ। নলিনী মৃত্যুর দিন গোনে, কুমুদ তাকে বাঁচার প্রেরণা জোগায়।
‘নলিনী।
দুর্বল হৃদয় পারে না বহিতে দারুণ যন্ত্রণা হেন;
জীবন-সর্বস্ব হারায়েছি যদি, পরাণ যায় না কেন?
শরীর-পিঞ্জর এ প্রাণ-বিহগ থাকিতে চাহে না আর,
এস মৃত্যু। ত্বরা কর বিদূরিত দুঃসহ জীবন-ভার।
কুমুদ।
সখি! কি অপূর্ব শোভা স্বভাবের, দেখ দেখি, খোল আঁখি!
নলিনী।
দেখেছি অনেক, কি দেখিব আর, এখন মরণ বাকি।
কুমুদ।
কৌমুদী-স্নাত বিশ্ব-চরাচর! যেন ডুবিয়াছে সব
রজত-সাগরে। এ পূর্ণিমা-শশী, আ মরি। কি অভিনব!
কোথা বা মালঞ্চ মধুর হাসিছে আনন্দে শতেক ফুল;
সুধাকর প্রেম-সুধা পান হেতু ব্যাকুল চকোর-কুল।’
‘স্বার্থপরতা’ কবিতায় কবি বলতে চেয়েছেন, সত্যিকার অর্থে পৃথিবীর সবাই স্বার্থপর। আত্মতুষ্টিই আসল কথা। এ তুষ্টির জন্যই সংসারে মানুষ যাবতীয় কাজ করে যায়। কেবল রুচির ভিন্নতায় তারতম্য দেখা দেয় আত্মসুখের। মন্দ লোক যেমন নেতি কাজ করে আনন্দ পায়, ভালো মানুষ তেমনই ইতি কাজ করে সুখভোগ করে। পরার্থপরতা বলতে চূড়ান্ত অর্থে কিছু নেই।
‘দস্যু অপরের সর্বস্ব লুটিয়া
যথা পুলকিত হবে
দানবীর তথা সর্বস্ব বিলায়ে
পরম আনন্দ লভে।
শুধু বল, রুচি যেমন যাহার
তাঁর সুখ সেই মত।
কোন রোগী জল দেখি’ হয় ভীত
কেহ জলে সুখী কত!
...
গুবরে পোকা যত ভালবাসে শুধু
ঘৃণিত দুর্গন্ধভার।
মধুপ ভ্রমর ভালবাসে ফুল,
ফুলের অমিয় ধারা।
তাই বলি, রুচি যেমন যাহার
সেইরূপ সুখ তার
সবে স্বার্থপর, “পরার্থপরতা”
কথা শুধু ছলনার।’
গিরি কাঞ্চনজঙ্ঘা নিয়ে কবি একই নামকরণে লিখেছেন দুটি কবিতা। দুই কবিতায় প্রকাশ পেয়েছে অপার সৌন্দর্যময় কাঞ্চনজঙ্ঘার অবর্ণনীয় রূপের মহিমা। তবে দ্বিতীয় ‘কাঞ্চনজঙ্ঘা’ কবিতাটির নিচে দেখা যায় কবির লেখা একটি ছোট্ট পাদটীকা। সেখানে লেখা: ‘‘ঈগেলস ক্রগ’ নামক পর্ব্বত-শিখর হইতে (আকাশ নির্ম্মল থাকিলে) প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য যেরূপ দেখায় তদবলম্বনে রচিত। গিরি কাঞ্চনজঙ্ঘা প্রায় সর্বদা মেঘের অন্তরালে লুক্কায়িত থাকে, সুতরাং তাহার দর্শন-লাভ সাধারণ ব্যাপার নহে।’’
প্রথম লেখা ‘কাঞ্চনজঙ্ঘা’ কবিতাটি শুরু হয় পরিতৃপ্তি আলোকে ব্যক্ত ধ্বনি দিয়ে এভাবে-
‘আহা!
কি শান্তির কোলে নীরবে ঘুমাও রানী।
তুষার অম্বরে ঢাকি মোহন মূরতিখানি।
নাই কি তোমার রাজ্যে জনতার কোলাহল,
গাহে না কি কলকণ্ঠ মুখর বিহগ দল?
নাই কি কুসুম তথা,-অলির ঝঙ্কার নাই?
নির্বিবাদে শিশু হেন নিদ্রিত রয়েছে তাই।’
শেষ পঙ্ক্তিতে এসে দেখা যায় এমন সৃষ্টির সৃষ্টিকর্তাতে কবি প্রণাম জানাতে। এমন বিস্ময়াভূত শিল্পকর্মের শিল্পীকে কবি উপায়িত করেছেন ‘মহাশিল্পী’ বলে। তাই কাঞ্চনজঙ্ঘাকে উদ্দেশ্য করে কবি বলেন-
‘তোমার স্রষ্টারে আমি করি শত নমস্কার,
তোমা হেন গিরিকাব্য অতুল রচনা যাঁর।
ধন্য সেই মহাশিল্পী, করি তাঁরে পরণাম,
যাহার কৃপায় মম পূর্ণ হল মনস্কাম।’
অপর ‘কাঞ্চনজঙ্ঘা’ কবিতার এক জায়গায় গুণমুগ্ধ কবি উচ্চারণ করেন-
‘ওকি ও অনেক দূরে উত্তর-গিরির চূড়ে
স্তূপাকার মুক্তা হেন ও কি দেখা যায়?
ও বুঝি কাঞ্চনজঙ্ঘা? তাই ত কাঞ্চনজঙ্ঘা।
কি হেতু “কাঞ্চন” নাম কে দিল উহার?
ও ত স্বর্ণবর্ণ নয়, মুক্তা-নিভ সমুদয়
ধবল তুষার-স্তম্ভ অতি মনোহর!
মরি! কিবা সমুজ্জ্বল রবি-করে ঝলমল
করে! কত মনোরম প্রাণমুগ্ধকর!’
‘প্রবাসী রবিন ও তাহার জন্মভূমি’ কবিতাটি মূলত বাধ্য হয়ে প্রবাসে বসবাসকারী হাজারও মানুষের স্বদেশের প্রতি ভালোবাসার কবিতা। রবিন সেইসব পীড়িত, ক্ষুব্ধ অথচ প্রেমময় প্রবাসী মানুষের একজন প্রতিনিধি মাত্র। তাই তো রবিন উচ্চারণ করে-
“বড় জ্বালা মাতঃ বিদেশে এসেছি,
বড় দুঃখে জননী গো। তোমায় ত্যাজেছি।”
এই লাইনটির পরেই ব্যক্ত হয় নিজ দেশের প্রতি ভালোবাসার প্রকাশ-
“তেমন মুখর স্থান কোথা কি দেখেছি?
কি যে সুখ ছিল তায় বলিতে পারি না হায়।
ওই মাতৃকোলে বসে স্বরূপ তুলেছি।
পেয়ে ঐ মাতৃবুক ভুলেছি বেদনা দুখ,
কুটীরে থাকিয়া মাগো! প্রাসাদ ভেবেছি।
জনম ভূমিরে হায়! সহজে কি ছাড়া যায়?
স্বর্গাধিক গরীয়সী তোমারে জেনেছি।”
‘আমি ও মন’ কবিতায় দেখা যায় মনের সাথে মানুষের কথা বলা। এখানে ‘মন’ ঈশ্বরকে খুঁজে ফিরে, আর মনকে খুঁজে ফিরে মানুষ। এখানে ‘আমি’র সাথে তুলনা করা হয়েছে মানুষের আমিত্বকে। কবি তাঁর নিজের আমিকে প্রকাশ করতে প্রয়াস করেননি এ কবিতায়। বরং সমগ্র মানবজাতির আমিকে একত্রিত করতে চেয়েছেন। চঞ্চল মন কেবল ছুটে বেড়ায়, আর মানুষ তাকে কেবলই খুঁজে যায়। মনকে সে কোনোভাবেই বাঁধতে পারে না। তাই তো মানুষ বলে-
“আত্মহারা মন! তুমি কোথায় কোথায়?
ঘুরিয়া বেড়াও তুমি কিসের আশায়?”
মন তখন উত্তর দেয়-
“সোনার পিঞ্জরে ধরে রেখো না আমায়
আমারে উড়িতে দাও দূর নীলিমায়।”
তবে ঈশ্বরের সন্ধান পাওয়ার ব্যাকুলতা তীব্রভাবে প্রকাশ পেয়েছে কবিতার বিভিন্ন ছত্রে।
‘দেখা দাও প্রেমময়! রয়েছ কোথায়?
কোথা আছ প্রেম-সিন্ধু জগত-ঈশ্বর?’
বা
‘দেখা দাও প্রেমসিন্ধু জগৎ ঈশ্বর!’
বা
‘দেখা দাও দীনবন্ধু! থাক হে কোথায়?’
ইত্যাদি পঙক্তি তার সাক্ষর বহন করে। কবিতার উপসংহারে এসে এ কথায় উপনীত হয়, অন্য কোথাও নয়; মনের মাঝেই ঈশ্বরের আশ্রম।
‘সওগাত’ কবিতাটি আহ্বানের কবিতা। কবি বাঙালিদের জেগে ওঠার ডাক দেন। সকলের উদ্দেশে আশার বার্তা নিয়ে বলেন-
‘জাগো বঙ্গবাসী!
দেখ, কে দুয়ারে
অতি ধীরে ধীরে করে করাঘাত।
ঐ শুন শুন!
কেবা তোমাদের
সুমধুর স্বরে বলে : ‘সুপ্রভাত!’
এখানে ‘সুপ্রভাত’ই ডালা ভরে নানা উপহার নিয়ে আসে সকলের জন্য। ‘আপীল’ কবিতায় নব্য জমিদারদের চাটুকারিতাকে ব্যঙ্গরূপে উপস্থাপন করা হয়েছে। কবি তাদেরকে ‘লেজধারী’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। নিজেদের উপাধি হারানোর ভয়ে ত্রস্ত এসকল জমিদারেরা ইংরেজদের প্রসাদ লাভের আশায় কী করে নিপীড়িত, বঞ্চিত সাধারণ জনগণের বিদ্রোহ দমন করতে সচেষ্ট হয়েছিল, তার প্রচ্ছায়া এ কবিতায় পরিলক্ষিত হয়। ‘নিরুপম বীর’ কবিতায় কবি মৃত্যুকে তুচ্ছজ্ঞান করা বীরদের স্তূতি গেয়েছেন। নিজের জীবনকে উৎসর্গ করে যে পরের জীবন রক্ষা করতে সচেষ্ট হয়, তার কাছে ফাঁসির আদেশ কোনো ভীতিকর বস্তু নয়। কেননা সে মরে গিয়ে অমর হয়ে থাকতে চায়। কবিতায় ‘কানাই’ বা ‘শ্যাম’ যেন নিরন্তর সংগ্রামে রত বিপ্লবী মানুষের অন্য নাম।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/৮ ডিসেম্বর ২০১৮/তারা
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন