ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

মুস্তাফিজ-জাদুতে রাজশাহীর দুর্দান্ত জয়

আবু হোসেন পরাগ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৪২, ১৩ জানুয়ারি ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
মুস্তাফিজ-জাদুতে রাজশাহীর দুর্দান্ত জয়

ক্রীড়া প্রতিবেদক, মিরপুর থেকে : দুই দলের অধিনায়কই ব্যাটিংয়ে ইনিংস ওপেন করতে নামলেন। রানের খাতা খুলতে পারলেন না কেউই। লো স্কোরিং ম্যাচে উত্তেজনা ছড়াল শেষ ওভারে। যেখানে স্নায়ুর চাপ ধরে রাখলেন মুস্তাফিজুর রহমান। অসাধারণ বোলিংয়ে রাজশাহী কিংসকে দুর্দান্ত এক জয় এনে দিলেন বাঁহাতি পেসার।

বোলারদের নৈপুণ্যে বিপিএলে মাশরাফি বিন মুর্তজার রংপুর রাইডার্সকে ৫ রানে হারিয়েছে মেহেদী হাসান মিরাজের রাজশাহী। মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে রোববার আগে ব্যাট করতে নেমে ৮ উইকেটে ১৩৫ রান করেছিল রাজশাহী। জবাবে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৩০ রান করতে পারে রংপুর।

শেষ ওভারে জয়ের জন্য রংপুরের দরকার ছিল ৯ রান। মুস্তাফিজ দেন মাত্র ৩ রান। 

টস হেরে ব্যাট করতে নেমে রাজশাহীর শুরুটা ভালো হয়নি। মুমিনুল হকের সঙ্গে ওপেন করতে নেমে গোল্ডেন ডাক মেরে ফেরেন মেহেদী হাসান মিরাজ। মাশরাফিকে ফ্লিক করতে গিয়ে শর্ট ফাইন লেগে শফিউল ইসলামের দারুণ এক ক্যাচে পরিণত হন রাজশাহীর অধিনায়ক।

দ্বিতীয় উইকেটে দলকে ৩৩ পর্যন্ত টেনে নিয়েছিলেন মুমিনুল ও সৌম্য সরকার। কিন্তু ৩ রানের ব্যবধানে সাজঘরে ফেরেন দুজনই। সোহাগ গাজীকে ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে গিয়ে স্টাম্পড হয়েছেন মুমিনুল (১৬ বলে ১৪)। মাশরাফিকে উড়াতে গিয়ে লং অনে ক্যাচ দেন আরেক বাঁহাতি সৌম্য (১৩ বলে ১৮)।



চতুর্থ উইকেটে ৫৭ রানের জুটি গড়েছিলেন জাকির হাসান ও মোহাম্মদ হাফিজ। কিন্তু হাফিজের (২৯ বলে ২৬) রান আউটে এ জুটি ভাঙার পর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানোয় রাজশাহীর রানের গতিও আর বাড়েনি।

৩৬ বলে ২ চার ও এক ছক্কায় সর্বোচ্চ ৪২ রানে অপরাজিত ছিলেন তরুণ উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান জাকির। প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা রায়ান টেন ডেসকাট ছক্কা হাঁকিয়ে শুরু করলেও রান আউট দুর্ভাগ্যের শিকার হয়েছেন তিনিও (১০ বলে ১৪)।

চার ওভারে ২২ রানে ২ উইকেট নিয়েছেন মাশরাফি। এবারের বিপিএলে পাঁচ ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়ে এখনো পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি উইকেটের মালিক রংপুরের অধিনায়ক। দুই ওভারে ১৭ রানে ২ উইকেট নেন ফরহাদ রেজা। শফিউল ও সোহাগ নেন একটি করে উইকেট।

ওপেনার ব্যাটসম্যান মেহেদী মারুফের জায়গায় এদিন স্পিনার নাহিদুল ইসলামকে খেলিয়েছে রংপুর। লক্ষ্য তাড়ায় সবাইকে চমকে গিয়ে ক্রিস গেইলের সঙ্গে ওপেন করতে নামেন মাশরাফি। তবে রানের খাতা খুলতে পারেননি রংপুর অধিনায়ক। প্রথম ওভারে কামরুল ইসলাম রাব্বীর হঠাৎ লাফিয়ে ওঠা বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান।

ঝড় তুলেছিলেন গেইল। কিন্তু সে ঝড় বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। তৃতীয় ওভারে রাব্বীর প্রথম পাঁচ বলে ২টি করে চার ও ছক্কা হাঁকান ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যান। শেষ বলে তাকে ফিরিয়ে প্রতিশোধ নেন রাব্বী। স্লোয়ার ফুলটস উড়াতে গিয়ে লং অনে সৌম্যর হাতে ধরা পড়েন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান (১৪ বলে ২৩)। তখন ৩১ রানে নেই রংপুরের ২ উইকেট।



তৃতীয় উইকেটে ৪০ রানের জুটি গড়েছিলেন মোহাম্মদ মিথুন ও রাইলি রুশো। একাদশ ওভারে প্রথমবার আক্রমণে এসে এ জুটি ভাঙেন হাফিজ। অফ স্পিনারকে উড়াতে গিয়ে লং অনে লরি ইভানসের দারুণ এক ক্যাচে ফেরেন মিথুন (৩১ বলে ৩০)।

হাফিজ নিজের পরের ওভারে এসে তুলে নেন আরেকটি উইকেট। এবার বোল্ড হয়ে ফেরেন রবি বোপারা (১)। হাফিজের পরের ওভারে বিনি হাওয়েল দুই রান নিতে গিয়ে রান আউট হয়ে গেলে বিপদেই পড়ে যায় রংপুর। তখনো জয়ের জন্য ৩৩ বলে ৪৪ রান দরকার তাদের, হাতে ৫ উইকেট।

শেষ চার ওভারে রংপুরের দরকার ছিল ৩২ রান। হাফিজের করা ১৭তম ওভারে নাহিদুলের এক ছক্কায় আসে ১১ রান। পরের ওভারে মুস্তাফিজ মাত্র ৪ রান দিয়ে আবার জমিয়ে তোলেন ম্যাচ। ১৯তম ওভারে উদানা প্রথম পাঁচ বলে ৮ রান দিলেও শেষ বলে ফেরান নাহিদুলকে।

শেষ ওভারে ৯ রানের প্রয়োজনে মুস্তাফিজের প্রথম বলে এক রান নিয়েছিলেন রুশো। কিন্তু পরের তিন বলে ব্যাটই ছোঁয়াতে পারেননি ফরহাদ রেজা! পঞ্চম বলেও ব্যাট ছোঁয়াতে পারেননি তিনি, বাই থেকে আসে এক রান। শেষ বলে ৭ রানের প্রয়োজনে রুশো নিতে পারেন শুধু এক রান।

কোনো উইকেট না পেলেও চার ওভারে মাত্র ১৭ রান দেন মুস্তাফিজ। চার ওভারে ২২ রানে ২ উইকেট নেন হাফিজ। রাব্বী দুই ওভারে ২২ রানে নেন ২ উইকেট। উদানা চার ওভারে ২২ রানে নেন একটি উইকেট।



বৃথা গেছে রুশোর ৪৫ বলে অপরাজিত ৪৪ রানের ইনিংস। ৩৬ বলে অপরাজিত ৪২ রান করে রাজশাহীকে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দেওয়া জাকির জিতেছেন ম্যাচসেরার পুরস্কার।

চার ম্যাচে এটি রাজশাহীর দ্বিতীয় জয়। হারে শুরুর পর দ্বিতীয় ম্যাচে জিতেছিল তারা। পাঁচ ম্যাচে তৃতীয় হার রংপুরের। হার দিয়ে শুরুর পর টানা দুই জয়, এরপর টানা দুই ম্যাচ হারল মাশরাফির দল।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৩ জানুয়ারি ২০১৯/পরাগ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়