ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

মুক্তিযোদ্ধা যাচাই: যশোর সদরের চূড়ান্ত তালিকা

বিএম ফারুক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৫৬, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
মুক্তিযোদ্ধা যাচাই: যশোর সদরের চূড়ান্ত তালিকা

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর : যশোর সদর উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাইয়ের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হয়েছে।

এতে বাংলাদেশ সরকারের সম্মানি ভাতাপ্রাপ্ত ৯ রাজাকারসহ ৫৭ জন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনাক্ত হয়েছে। যার মধ্যে ৪ জনের নাম ভারতীয় তালিকা লাল মুক্তিবার্তায় রয়েছে।

এ ছাড়া অনলাইনে আবেদন করা প্রায় ৮০০ জনের মধ্যে ৪২ জন নতুন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন।

১২ জানুয়ারি রাতে সদর উপজেলা কার্যালয়ের উপজেলা নোটিশ বোর্ডে এ তালিকা টাঙিয়ে দেওয়া হয়।

যাচাই বাছাই কমিটির সভাপতি ছিলেন জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার রাজেক আহমেদ, সদস্য সচিব উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) পঙ্কজ ঘোষ, সদস্য নজরুল ইসলাম চাকলাদার, আলী হোসেন মণি, আব্দুস সাত্তার ও মোহাম্মদ আলী স্বপন।

কমিটির সকল সদস্যের স্বাক্ষরে প্রকাশিত ওই তালিকা থেকে জানা গেছে, ১২ জন অভিযুক্তের মধ্যে লাল মুক্তিবার্তা থেকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সনাক্ত হয়েছেন চারজন।

এদের মধ্যে ভারতে এবং দেশের মধ্যে কোথাও প্রশিক্ষণ না নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা সেজেছেন লেবুতলা এনায়েতপুরের আব্দুল মতলেব (লালমুক্তি বার্তা নম্বর ০৪০৫০১০০৫৭), বাবার নামের জায়গায় চাচার নাম ব্যবহার করে জালিয়াতি করে মুক্তিযোদ্ধা সেজেছেন পৌরসভার শংকরপুরের নজরুল ইসলাম সুফি (লালমুক্তি বার্তা নম্বর ০৪০৫০১৯২৮), যশোর দৌলতদিহির খোজারহাটের দালাল আইন মামলায় অন্তর্ভুক্ত আসামির গাড়িচালক এএসএম আজিজুর রহমান (লাল মুক্তিবার্তা নম্বর ০৪০৫০১০৯৬৮) ও দালাল আইন মামলায় অন্তর্ভুক্ত এএফএম আব্দুর রশীদ (লাল মুক্তিবার্তা নম্বর ০৪০৫০১০৮৩৫)।

এ ছাড়া ১৯৭ জন অভিযুক্তের মধ্যে ৯ চিহ্নিত রাজাকার ও ৪৪ জন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনাক্ত হয়েছেন। ৯ রাজাকারের মধ্যে হৈবৎপুরের লাউখালির রহিম হাওলাদার (গেজেট নম্বর ৭৯৩), নিশ্চিন্তপুরের খোয়াজ উদ্দীন (গেজেট নম্বর ৭৭০), দৌলতদিহির মোশারফ হোসেন (গেজেট নম্বর ৯৬০), বারান্দীপাড়ার নাছিম আহমেদ (গেজেট নম্বর ৭১৯), লেবুতলার মনোয়ারুল ইসলাম (গেজেট নম্বর ৮০৮), খোজারহাটের সাকাত আলী (গেজেট নম্বর ৯৫০), লেবুতলার সিরাজুল ইসলাম (গেজেট নম্বর ১০২), সমসপুরের ইসলাম গাজী (গেজেট নম্বর ৭৬৯) ও  শ্যামনগরের মোশাররেফ (গেজেট নম্বর ৯৬৫)।

৪৪ জন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে যশোর পৌরসভার ১১ জন। এরা হলেন- যশোর পূর্ব বারান্দিপাড়ার সিরাজুল ইসলাম (গেজেট নম্বর ৩১৯), আব্দুল ওয়াদুদ, (গেজেট নম্বর ৭১৩), পৌরসভা ঢাকা রোডের ২ নম্বর সেক্টরের মৃত মহিউদ্দীন আহমেদ, (গেজেট নম্বর ৭৩২), ডাক্তার মমতাজ (গেজেট নম্বর ৭৩৭), ঘোপ জেল রোডের সৈয়দ মোস্তাক আলী (গেজেট নম্বর ২১৮৪), লোন অফিস পাড়ার রবিউল ইসলাম (গেজেট নম্বর ২১৮২), বুক প্যালেস দড়াটানার বজলুর রহমান (গেজেট নম্বর ২৭৯৫),  আশরাফ আলী (গেজেট নম্বর ৭৩৫), পূর্ব বারান্দীপাড়ার অধির কুমার বিশ্বাস (গেজেট নম্বর ৭৫০), শহীদ শেখ আবু তালেব সড়ক কাজী পাড়ার সেলিম সরদার (গেজেট নম্বর ২১০৪) ও জেল রোডের সোহরাব হোসেন।

যশোর সদর উপজেলার ৩৩ জনের মধ্যে হৈবতপুর বালিয়াঘাটার রবিউল হক (গেজেট নম্বর ২৭৮৬), নওয়াপাড়া কাশিমপুরের আমজাদ আলী (গেজেট নম্বর ৯৪৭), নতুন উপশহরের মৃত শফিয়ার রহমান (গেজেট নম্বর ৮৯৭), নওয়াপাড়ার স্বপন কুমার (গেজেট নম্বর ৯২৩), নওদাগ্রামের আহম্মদ আলী (গেজেট নম্বর ৮৮১), মৃত আশরোপ আলী (গেজেট নম্বর ৮৮১), বাহাদুরপুরের আতিয়ার মোল্যা (গেজেট নম্বর ৯১৭), বিরামপুরের লিয়াকত আলী (গেজেট নম্বর ৯২২), নওদাগ্রামের আব্দুল জলিল (গেজেট নম্বর ৯১২), বাহাদুরপুরের সামছুল ইসলাম (গেজেট নম্বর ৮৭৭), নুরজাহান, আবু জাফর, তালবাড়িয়ার ফসিয়ার রহমান (গেজেট নম্বর ৯০০), মৃত আবু বকর সিদ্দিক, হাশিমপুরের মৃত আব্দুল মতলেব (গেজেট নম্বর ৮৪৩), নওদাগ্রামের কেএম হারুন অর রশিদ (গেজেট নম্বর ৮৯৪), জহুরপুর গোবরার বদর উদ্দীন (গেজেট নম্বর ৮১৩), দলেননগরের আবু তালেব বিশ্বাস (গেজেট নম্বর ৮০১), শর্শনাদহের মোমিন উদ্দীন, লেবুতলার আব্দুল খালেক (গেজেট নম্বর ৮১১), লেবুতলা ফুলবাড়ির ওয়াজেদ আলী (গেজেট নম্বর ৭৯৯), লেবুতলার আতিয়ার রহমান (গেজেট নম্বর ৮২৩), নওয়াব আলী, আজাহার আলী, ফতেপুর হামিদপুরের মৃত আলতাফ হোসেন (গেজেট নম্বর ১০৮৪), মৃত আকবর আলী (গেজেট নম্বর ১০৬৭), চাঁচড়া গোয়ালদাহের আরশাদ আলী (গেজেট নম্বর ২০৯৮), চাঁচড়ার মৃত মিজানুর রহমান (গেজেট নম্বর ১০৫৫), তালবাড়িয়ার গোলাম সরোয়ার (গেজেট নম্বর ৮৯৬), ডাকাতিয়ার হাবিবুর রহমান (গেজেট নম্বর ৯৫২), শ্যামনগরের মৃত মোজাহার আলী (গেজেট নম্বর ৯৬৪) ও নতুন উপশহরের গোলাম মোস্তফা (গেজেট নম্বর ২১৪৩)।

মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নতুন এসেছেন নীলগঞ্জের শওকত আলী, ষষ্টীতলার মৃত সৈয়দ রবিউল হক, মিশনপাড়ার আফসার উদ্দীন, সার্কিট হাউজ পাড়ার হোসনে আরা বেগম, বেজপাড়া পিয়ারীমোহন রোডের ডাক্তার রেজাউল করিম, শহীদ মশিউর রহমান সড়কের মৃত শামছুর রহমান, আব্দুল আজিজ রোডের শামাসুন নাহার, নীলগঞ্জ তাতীপাড়ার আব্দুর রহিম, রাজারহাটের মৃত আব্দুল মালেক, কাজী পাড়ার আলতাফ হোসেন, নাজির শংকরপুরের আব্দুল ওহাব, ঢাকারোড ঘোষ পাড়ার আলমগীর হোসেন, ষষ্টীতলা পাড়া পিটিআই রোডেরঅসীত কুমার রায়, কাজীপাড়ার সাইফুজ্জামান পিকুল, বগচরের বিকাশ রঞ্জন দে, আরবপুর ইউনিয়নের খোলাডাঙ্গার শেখ রবিউল ইসলাম, তালবাড়িয়ার আকরাম হোসেন, উপশহরের আব্দুল হান্নান, নওয়াপাড়া বোলপুরের মৃত আমজেদ হোসেন, রাজারহাটের আলাউদ্দীন বিশ্বাস, কচুয়া দেয়া পাড়ার কাজী ফারুক শাহী, নুরপুরের ছিদ্দিক হোসেন, আবু বকর সিদ্দিক, চুড়ামনকাঠি দোগাছিয়ার রওশন আলী, ছাতিয়ান তলার কওছার আলী, চান্দ আলী, দোগাছিয়ার আব্দুল মান্নান, কমলাপুর গ্রামের আমজাদ হোসেন, ছাতিয়ান তলার মৃত আনোয়ার হোসেন, চুড়ামনকাঠির কার্তিক চন্দ্র রায়, নওদাগ্রামের বাবর আলী, সলুয়া বাজারের আবু বক্কার সিদ্দিক, ছাতিয়ান তলার মৃত আব্দুল গণি, নতুন উপশহরের মৃত কামরুজ্জামান, ছাতিয়ান তলার অরবিন্দ বিশ্বাস, হৈবৎপুরের নাটুয়াপাড়ার দুধু মল্লিক মন্ডল, দেয়াড়ার হালসা গ্রামের ইছাহক আলী, দেয়াড়া ফরিদপুরের সুলতান আহমেদ মোড়ল, হালসা গ্রামের সোহরাব হোসেন, নরেন্দ্রপুরের বলরামপুরের এমএম আকরাম হোসেন ও বড় হৈবৎপুরের আব্দুল বারী।

জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার রাজেক আহমেদ জানান, সদর উপজেলার উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে ২৭ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এ কার্যক্রমের মাধ্যমে যশোর সদর উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই সম্পন্ন এবং চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ হয়েছে।

তিনি বলেন, ভারতীয় তালিকা বা লাল মুক্তিবার্তা তালিকার বাইরে শুধুমাত্র গেজেটভুক্ত বা সরকারি চাকরি গ্রহণের সময় ঘোষণা প্রদানকৃত বা শুধুমাত্র সাময়িক সনদপ্রাপ্ত এবং বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল কর্তৃক প্রদত্ত প্রধানমন্ত্রীর প্রতিস্বাক্ষরিত সনদপত্রধারীদের যাচাই বাছাই কার্যক্রম পরিচালিত হওয়ার পর এ তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, কমিটি কর্তৃক সর্বসম্মতিক্রমে এ তালিকা চূড়ান্ত হয়েছে। যা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।



রাইজিংবিডি/যশোর/১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭/বি এম ফারুক/রুহুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়