চলনবিলে অবাধে পাখি শিকার
নাটোর প্রতিনিধি : চলনবিলে আহার যোগাতে এসে ঝাঁকে ঝাঁকে শিকারিদের হাতে ধরা পড়ছে দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির পাখি।
এতে করে বিলের সৌন্দর্য্য ও জীব-বৈচিত্র্য হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। শিকারিরা পাখি শিকার করে প্রকাশ্যে হাট-বাজারে বিক্রি করলেও প্রশাসনের কর্মকর্তারা তা দেখেও যেন দেখছে না। অথচ পাখি শিকার আইন থাকলেও তা মানা হচ্ছে না।
চলনবিলের কলম ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক হারুন-অর রশিদ জানান, চলিত মৌসুমে চলনবিলের জমিতে অল্প পরিমাণে পানি থাকায় কিছু মাছও থাকে। আর এই মাছ খাওয়ার লোভে দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন পাখি বিলে ভিড় জমায়। এই সুযোগেই কিছু লোভী শিকারি বিভিন্ন ফাঁদ পেতে পাখি শিকার করেন।
চলনবিলের বিভিন্ন মাঠ থেকে পাখি শিকার করে বিলের দুর্গম বাজার বিশেষ করে ডাহিয়া, বিয়াশ, বিজয়নগর, কলম এলাকায় প্রকাশ্যে বিক্রি করছে। আর এই পাখির মাংসের স্বাদ পেতে অনেকেই তা কিনছে। প্রতিটি পাখির জোড়া ২০০/৩০০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়। অনেকেই আবার হোটেলে বিক্রির জন্য, কেউ বা আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে পাঠানোর জন্য পাখি কেনেন।
অবাধে পাখি শিকারের কারণে চলনবিলের জীববৈচিত্র্য হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে। স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি প্রকাশ্যে এয়ারগান দিয়ে দিন-রাত পাখি শিকার করেন।
বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফেডারেশনের (বিবিসিএফ) মিডিয়া সম্পাদক ও চলনবিল জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম জানান, কিছু পরিবেশবাদী সংগঠন ও স্থানীয় প্রশাসন চলনবিলের পাখি শিকার বন্ধে কাজ করছে। কিন্তু চলনবিলের তিন জেলার নয়টি উপজেলা নিয়ে গঠিত একটি বৃহৎ এলাকা হওয়ায় পাখি শিকার বন্ধে প্রশাসন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ সবার সমন্বিত পরিকল্পনা দরকার বলে জানান তিনি।
জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুন জানান, চলনবিলের পাখি শিকারিদের বিভিন্ন সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে সাজা দেওয়া হচ্ছে। দুর্গম এলাকায় আরো নজরদারি বাড়াতে তিনি প্রশাসনকে নির্দেশ দেবেন বলে জানান।
রাইজিংবিডি/নাটোর/১৭ মার্চ ২০১৭/এমএম আরিফুল ইসলাম/রিশিত
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন