ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

জিল্লুর রহমানের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা নিবেদন

নৃপেন রায় || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:০৭, ২০ মার্চ ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
জিল্লুর রহমানের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা নিবেদন

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, ভাষাসৈনিক, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী আজ।

এ উপলক্ষে রাজধানীর বনানী কবরস্থানে মরহুমের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে আওয়ামী লীগ।

সোমবার সকালে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে দলের নেতারা সমাধিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ড. আব্দুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আফজাল হোসেন, ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, অসীম কুমার উকিল প্রমুখ।

শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘জিল্লুর রহমান একসময় আওয়ামী লীগের প্রাণভোমরা ছিলেন। আজ তাকে খুব মনে পড়ছে। তিনি আমাদের রাজনৈতিক আদর্শ ছিলেন। তাকে সামনে রেখেই আমরা রাজনীতি করেছি। তার শূন্যতা আমাদের এখনো ভোগায়।’

ভৈরবকে জেলা করার যে প্রক্রিয়া জিল্লুর রহমান শুরু করেছিলেন তা থেমে যায়নি, সময়মতো সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

জিল্লুর রহমান ১৯২৯ সালের ৯ মার্চ কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব উপজেলায় এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মেহের আলী মিঞা ছিলেন প্রখ্যাত আইনজীবী এবং তৎকালীন ময়মনসিংহ লোকাল বোর্ডের চেয়্যারম্যান ও জেলা বোর্ডের সদস্য। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে স্নাতকোত্তর এবং এলএলবি ডিগ্রিধারী জিল্লুর রহমান বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, বাষট্টির সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, ছেষট্টির ৬ দফা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান এবং একাত্তর সালের মুক্তিযুদ্ধসহ প্রতিটি গণ-আন্দোলনে অসামান্য ভূমিকা পালন করেন।

তিনি ১৯৫৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হল ছাত্র সংসদের সহসভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলা নির্বাচন পরিচালনা কমিটির ভাইস চেয়্যারম্যান ও তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর প্রধান হন। ১৯৫৬ সালে কিশোরগঞ্জ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছাড়াও ষাটের দশকে ঢাকা জেলা আইনজীবী সমিতির সম্পাদক, ১৯৭০ সালে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭২ সালে গণপরিষদ সদস্য হিসেবে সংবিধান প্রণয়নে অংশ নেন। একই বছর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং জিল্লুর রহমান সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর চার বছর কারাবন্দি ছিলেন মো. জিল্লুর রহমান। আওয়ামী লীগ পুনর্গঠনের পর ১৯৮৪ সালে তিনি আবারো দলের সাধারণ সম্পাদক হন। ১৯৯২ ও ১৯৯৭ সালের কাউন্সিলেও পরপর দুবার দলের সাধারণ সম্পাদক এবং ২০০২ সালের কাউন্সিলে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। জিল্লুর রহমান ১৯৭৩, ১৯৮৬, ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী ছিলেন তিনি। পাশাপাশি সংসদ উপনেতা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। একজন স্বেচ্ছাসেবক হয়ে রাজনৈতিক জীবন শুরু করে দীর্ঘ ৬২ বছরের রাজনৈতিক পথচলায় দেশের ১৯তম রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন মো. জিল্লুর রহমান। তার স্ত্রী আইভি রহমান মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ছিলেন। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানী ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় গুরুতর আহত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের বর্তমান সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন জিল্লুর রহমানের একমাত্র ছেলে। তার দুই মেয়ে হলেন তানিয়া ও ময়না। জিল্লুর রহমান ২০১৩ সালের ২০ মার্চ বার্ধক্যজনিত রোগে সিঙ্গাপুরের এক হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২০ মার্চ ২০১৭/নৃপেন/সাইফুল/এএন

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়