ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

গোপালগঞ্জে সংখ্যালঘুর বসত-ঘরে হামলা, আটক-২

বাদল সাহা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৩২, ২৩ এপ্রিল ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
গোপালগঞ্জে সংখ্যালঘুর বসত-ঘরে হামলা, আটক-২

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জমি দখলের জের ধরে তপন হাজরা নামে এক ব্যক্তির বসত-ঘর ভেঙে ফেলেছে প্রভাবশালীরা। পুলিশের উপস্থিতে ভাঙচুর হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ।

শনিবার সন্ধ্যায় টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাটগাতী বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। হামলার পর থেকে খোলা আকাশের নিচে আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে পরিবারটি।

তপন হাজরা জানান, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি একই উপজেলার মো. কামাল হোসেন নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে পৌনে ৪ লাখ টাকা দিয়ে সাড়ে ৬ শতাংশ জমি কিনেন। এরপর ওই জায়গায় দো-চালা টিনের ঘর তুলে বসবাস শুরু করেন।

বেশ কিছু দিন পর থেকে ওই জায়গা দখলের পায়তারা শুরু করে প্রভাবশালী ইয়াছিন খলিফা। এ নিয়ে আট দিন আগে শালিস বৈঠক করে ইয়াছিন ও তার লোকজন। এ সময় উপস্থিত টুঙ্গিপাড়া থানার এসআই মুজিবুর রহমানের সমানে চার দিন সময় দিয়ে বসত-ঘর ছেড়ে চলে যেতে বলে। টুঙ্গিপাড়া থানার এসআই মুজিবুর রহমানও তাদের এখান থেকে চলে যেতে বলেন।

এ নিয়ে গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় এসআই মুজিবুর রহমানের উপস্থিতে ইয়াছিন খলিফার নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন যুবক দেশীয়-অস্ত্র নিয়ে বসত-ঘরে হামলা চালায়। মালামাল পার্শ্ববর্তী ডোবায় ফেলে দেয়। এ ঘটনার পর থেকে আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটছে।

পরে খবর পেয়ে টুঙ্গিপাড়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ইয়াছিন খলিফা ও ফরিদ খলিফা নামে দুইজনকে আটক করে। এ ঘটনায় নয়জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।



ঘটনার পর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোখলেসুর রহমান সরকার ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইদুর রহমান খান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

জমির মালিক মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘২০১৬ সালের ১১ নভেম্বর আমি পাটগাতী গ্রামের মো. রবিউল বিশ্বাসের কাছ থেকে ওই জমির পাওয়ার অব অ্যাটর্নি নিই। এরপর পাওয়ার অব অ্যাটর্নির বলে তপন হাজরার কাছে বিক্রি করি। এরপর তপন হাজরা সেখানে বসবাস করছিলেন।’

মো. রবিউল বিশ্বাস বলেন, ২০১৫ সালের ১৩ আগস্ট আমি ইয়াছিন খলিফার চাচাতো ভাই মো. আরিফ ইসমত লিটন এবং দুই বোন সেলিনা বেগম ও লাকী বেগমের ৩৬ শতাংশ জমি কিনে বালু দিয়ে ভরাট করি। পরে এর মধ্যে সাড়ে ৬ শতাংশ জমি মো. কামাল হোসনকে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দিই। তিনি ওই জমি তপন হাজরার কাছে বিক্রি করেন।

তিনি আরো বলেন, ইয়াছিন খলিফা গংরা এ জমি তাদের বলে দাবি করে আসছিল। গতকাল শনিবার তার নেতৃত্বে পুলিশের উপস্থিতিতে তপন হাজরার বসত-ঘর ভেঙে ফেলে দেওয়া হয়েছে।

অভিযুক্ত টুঙ্গিপাড়া থানার এসআই মুজিবুর রহমান তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ঘটনার সময় আমি উপস্থিত ছিলাম না। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তা ঠিক না। ঘটনার পর টুঙ্গিপাড়া পৌরসভার মেয়র যেভাবে বলেছে আমি সে ভাবেই মামলাটি তৈরি করেছি।

গোপালগঞ্জসহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) আমীনুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় দুজকে আটক করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তার করার চেষ্টা চলছে। দোষীদের কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না।




রাইজিংবিডি/গোপালগঞ্জ/২৩ এপ্রিল ২০১৭/বাদল সাহা/এসএন

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়