ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

রামেক হিমঘরে পুলিশের এসি সরফরাজের লাশ

তানজিমুল হক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৫৯, ২৯ এপ্রিল ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
রামেক হিমঘরে পুলিশের এসি সরফরাজের লাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী : রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) অফিসার্স মেস থেকে সহকারী কমিশনার (এসি) সাব্বির আহমেদ সরফরাজের লাশ রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের হিমঘরে নিয়ে রাখা হয়েছে।

শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করার পর মেস থেকে তার লাশ নিয়ে যাওয়া হয়।

এর কিছুক্ষণ আগে একটি প্রাইভেট কারে চড়ে সরফরাজের বাবা পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত ডিআইজি ওবায়দুল্লাহ হক ও মা ফাতেমা বেগমসহ পরিবারের সদস্যরা মেস থেকে বেরিয়ে যান। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল্লাহ হক বলেন, ‘সরফরাজের আত্মহত্যার কোনো কারণ নেই।’

তাকে খুন করা হয়েছে কী না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সেটা বলতে পারবো না। ময়নাতদন্তের পরই বিষয়টি বলা যাবে।’

এদিকে লাশ নিয়ে যাওয়ার পর আরএমপির কমিশনার শফিকুল ইসলামও সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘এসি সরফরাজ মাঝে মাঝে এই মেসে এসে বিশ্রাম নিতেন। শুক্রবার রাতে তিনি অভিযান শেষ করে ৩টার দিকে মেসে যান। এরপর জানালার গ্রিলের সঙ্গে গলায় রশি পেঁচানো অবস্থায় তার মৃতদেহ পাওয়া যায়।’

এদিকে সকাল থেকে পুলিশের ওই অফিসার্স মেসে গণমাধ্যমকর্মীদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। ফলে কেউ তার লাশ দেখতে পাননি। তবে মেসের ভেতরে ঢুকেছিলেন নিকটাত্বীয়দের কেউ কেউ।

তাদের মধ্যে থেকে একটি সূত্র দাবি করেছে, এসি সরফরাজের লাশ জানালার গ্রিলের সঙ্গে ফাঁস দেওয়া থাকলেও তার দেহের প্রায় অংশ ছিল সোফায়। বুকের কাছে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে।

অফিসার্স মেস থেকে লাশ বের করার পর এসি সরফরাজের এক চাচাতো বোন দাবি করেন, তারা সরফরাজের আত্মহত্যা করার মতো কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না। শুক্রবারও তিনি পরিবারের সঙ্গে স্বাভাবিক আচরণ করেছেন। তার দাম্পত্য কলহও ছিল না।

এসি সরফরাজ আরএমপির রাজপাড়া থানা জোনের সহকারী কমিশনার পদে কর্মরত ছিলেন। শনিবার সকালে অফিসার্স মেসের ১০৯ নম্বর কক্ষে তার লাশ পাওয়া যায়। স্ত্রী ও চার বছর বয়সী কন্যাকে নিয়ে তিনি নগরীর উপশহর এলাকায় থাকতেন। তার বাবা ওবায়দুল্লাহ হক আরএমপির কমিশনার ছিলেন। ডিআইজি হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে তিনি অবসরে যান। তাদের গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার বাবুপুরে।

সরফরাজের মা ফাতেমা বেগম রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের (রাকাব) প্রাক্তন মহাব্যবস্থাপক ছিলেন। ছোট ভাই মার্কিন দূতাবাসে কর্মরত। আর এসি সরফরাজ ৩১তম বিসিএসে উত্তীর্ণ হয়ে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন।

 



পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সরফরাজের লাশ পাওয়া গেলেও পরিবারের অনুরোধে তারা না আসা পর্যন্ত লাশ নামানো হয়নি। বিকেলে আকাশপথে পরিবারের স্বজনরা ঢাকা থেকে রাজশাহী আসেন। এরপর তারা অফিসার্স মেসে গেলে কক্ষের দরজা ভেঙে সরফরাজের লাশ নামানো হয়।

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কর্মকর্তারা অফিসার্স মেসের ভেতরে পরিদর্শন করেন। পরে সন্ধ্যায় লাশ বের করে রামেকের হিমঘরে নিয়ে যাওয়া হয়।

এর আগে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আতিফের উপস্থিতিতে পুলিশ লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে বলে জানিয়েছেন আরএমপির মুখপাত্র ইফতেখায়ের আলম।

তিনি জানান, লাশের ময়নাতদন্ত করার সম্ভাবনা আছে। তার মৃত্যুর ঘটনায় রাজপাড়া থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলাও করা হবে। তবে বাদী কে হবে তা ঠিক হয়নি।

লাশের ময়নাতদন্তের জন্য মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হবে কী না জানতে চাইলে ইফতেখায়ের আলম বলেন, ‘এ বিষয়টিও ঠিক হয়নি। বিষয়টি মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের ওপর নির্ভর করছে।’



রাইজিংবিডি/রাজশাহী/২৯ এপ্রিল ২০১৭/তানজিমুল হক/রুহুল/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়