ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

ময়নাতদন্ত সম্পন্ন, মেলেনি হত্যার আলামত

তানজিমুল হক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:৩২, ৩০ এপ্রিল ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
 ময়নাতদন্ত সম্পন্ন, মেলেনি হত্যার আলামত

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী : রাজশাহী মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (এসি) সরফরাজের লাশের ময়নাতদন্তে তাকে হত্যার কোনো আলামত পাওয়া যায়নি।

ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে এমন কথা জানানো হয়েছে।

রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের মর্গে এসি সরফরাজের লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়। রোববার সকাল ১০টা থেকে দুপুর প্রায় ১২টা পর্যন্ত ময়নাতদন্ত চলে। ময়নাতদন্ত করার জন্য গঠন করা হয় তিন সদস্যের  মেডিক্যাল দল।

বারিন্দ মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান সহকারী অধ্যাপক মনসুর রহমানকে প্রধান করে এই মেডিক্যাল দল গঠন করা হয়। দলের অন্য দুই সদস্য হলেন রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের সহকারী অধ্যাপক এনামুল হক ও ইসলামী ব্যাংক মেডিক্যাল কলেজের অধ্যাপক এমদাদুর রহমান।

ময়নাতদন্ত শেষে দলের প্রধান মনসুর রহমান বলেন, ‘সন্দেহভাজন দিকের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য সব আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। যেমন- পাকস্থলিতে বিষ আছে কি না, কোনো ড্রাগ আছে কি না- এগুলো জানতে ভিসেরা সংগ্রহ করা হয়েছে। রক্তের নমুনা নেয়া হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনেই সব ফলাফল জানানো হবে।’

হত্যার কোনো আলামত পেয়েছেন কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে অধ্যাপক মনসুর রহমান বলেন, ‘না’। তাহলে এটা হত্যার দিকে যাবে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কখনোই নয়’। লাশের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।

শনিবার সকালে আরএমপির অফিসার্স মেসের নিচতলার একটি কক্ষে এসি সরফরাজের লাশ দেখতে পান সহকর্মীরা। জানালার গ্রিলের সঙ্গে গলায় রশি পেঁচানো অবস্থায় তার লাশ ছিল। বিকেলে পরিবারের সদস্যরা সেখানে গেলে কক্ষের দরজা ভেঙে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর লাশ রামেক হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছিল।

এসি সরফরাজ ৩১তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। মৃত্যুর আগে তিনি আরএমপির রাজপাড়া থানা জোনের এসি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার বাবা এম ওবাইদুল্লাহ পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত ডিআইজি এবং একসময় আরএমপির কমিশনার ছিলেন। তাদের গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার বাবুপুরে।

এসি সরফরাজের চার বছরের একটি মেয়ে আছে। তার স্ত্রী সুলতানা নাসরিন সূচনা একজন চিকিৎসক। আরএমপি সদর দপ্তরের সামনের এলাকায় সূচনার বাবার বাড়ি। তবে নগরীর উপশহরে নিজেদের বাসায় থাকতেন এই দম্পতি। পুলিশ বলছে, এসি সরফরাজ মাঝে মাঝে বিশ্রাম নিতে যেতেন অফিসার্স মেসে। শুক্রবার রাত সাড়ে ৩টায় ডিউটি শেষে সেখানে গিয়েছিলেন। এরপর তার মৃতদেহ পাওয়া যায়।

এদিকে শনিবার ময়নাতদন্তের পর লাশ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে লাশ নেয়া হয় রাজশাহী মহানগর পুলিশ লাইনে। সেখানে নামাজে জানাজা শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বিকেলে দ্বিতীয় জানাজা শেষে নগরীর টিকাপাড়া গোরস্থানে তাকে দাফন করা হবে বলে জানিয়েছেন তার নিকটাত্মীয়রা।

রাজপাড়া থানার কর্তব্যরত অফিসার তসলিমা খাতুন জানিয়েছেন, এসি সরফরাজের মৃত্যুর ঘটনায় এই থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। শুক্রবার রাতে মামলাটি দায়ের হয়। সংবাদদাতা হিসেবে এসি সরফরাজের বাবা এম ওবাইদুল্লাহর নাম রয়েছে। শনিবার বিকেলে এম ওবাইদুল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, ‘সরফরাজের আত্মহত্যার কোনো কারণ নেই।’




রাইজিংবিডি/রাজশাহী/৩০ এপ্রিল ২০১৭/তানজিমুল হক/এসএন/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়