ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

বিমানের ইঞ্জিন অকার্যকর হওয়া মানেই কি দুর্ঘটনা?

মোখলেছুর রহমান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:২৬, ১৯ জুন ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বিমানের ইঞ্জিন অকার্যকর হওয়া মানেই কি দুর্ঘটনা?

প্রতীকী ছবি

মোখলেছুর রহমান : বিমানযাত্রা সব সময়ই আনন্দদায়ক যদি আপনি কোনো দুর্ঘটনার মুখোমুখি না হন। নিরাপদ বিমানযাত্রা সবাই প্রত্যাশা করেন যেন ইঞ্জিনে ত্রুটিজনিত বা ইঞ্জিন অকার্যকর হওয়ার ফলে তাদের কোনো দুর্ঘটনায় পড়তে না হয়।

কিন্তু ইঞ্জিন অকার্যকর হওয়া মানেই কি বিমানটি বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনার কবলে পড়তে যাচ্ছে- এমন ইঙ্গিত বহন করে? অভিজ্ঞ পাইলটরা কিন্তু তেমনটি মনে করেন না। তারা ইঞ্জিন অকার্যকর হওয়াকে দুর্যোগ বলতে নারাজ। তাদের মতে এমনকি সম্পূর্ণ ইঞ্জিন অকার্যকর হওয়ার পরও বিশাল বড় বড় এই বিমানগুলো দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। এর অর্থ হচ্ছে, ইঞ্জিন অকার্যকর হওয়ার পরেও একটি বিমানের রানওয়েতে অবতরণ করার সুযোগ থাকে।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক লং-হোল এর ক্যাপ্টেন ডেইলি মেইল অনলাইনে বলেন, ‘ইঞ্জিন অকার্যকর হওয়ার পরেও সাধারণত একটি জেট বিমান প্রতি ১ হাজার ফুট উচ্চতায় প্রায় দুই মাইল গতিতে ভ্রমণ করতে পারে যা গ্লাইডিং কৌশল নামে পরিচিত।’

তিনি আরো বলেন,  ‘পাইলটদের গ্লাইডিং কৌশলগুলোর বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, কিন্তু সবসময় যে এই কৌশল কাজে লাগবে তা কিন্তু নয়। ইঞ্জিন অকার্যকর হওয়ায় শক্তিহীন অবস্থায় ৪০ হাজার ফুট ওপর থেকে সফলভাবে নিচে নামাটা ঝুঁকিপূর্ণই বটে।

এছাড়াও ‘ককপিট কনফিডেনশিয়াল’ বইয়ের লেখক প্যাক্ট স্মিথও এ বিষয়ে কিছু কথা বলেছেন যা বিমানযাত্রীদের জন্য স্বস্তিদায়ক। তিনি লিখেছেন, ‘ইঞ্জিন অকার্যকর হলেও তাৎক্ষণিক বিপর্যয়ের কোনো আশংকা নেই। গাড়ির ইঞ্জিন বন্ধ করে দিলে যেমন এটি উঁচু স্থান থেকে নিচে নামতে পারে, প্লেনের ক্ষেত্রেও তাই ঘটে। যাত্রীবাহী জেট বিমানগুলো বেশিরভাগ যাত্রাতেই গ্লাইডিং কৌশল ব্যবহার করে। পাইলটরা বিমান অবতরণের জন্য এই কৌশল ব্যবহার করে।’

গত কয়েক বছরে বাণিজ্যিক পাইলটদের দ্বারা পরিচালিত বেশ কিছু জনপ্রিয় গ্লাইডিং রণকৌশলের কাহিনি প্রচলিত রয়েছে।

এর মধ্যে ২০০৯ সালে সংঘটিত ক্যাপ্টেন শিসলি কর্তৃক গ্লাইডিং এর কাহিনিটি সর্বাধিক আলোচিত, যেখান একটি পাখির সঙ্গে ধাক্কা লেগে সম্পূর্ণ ইঞ্জিন অকার্যকর হয়ে যাওয়ার পরেও নিউইয়র্কের হাডসন নদীতে এ-৩২০ বিমানটিকে সফলভাবে গ্লাইডিং করতে সক্ষম হয়েছিলেন তিনি। ফলে বিমানটির ক্রুসহ ১৫৫ জন যাত্রী জীবিত ছিল।

শিসলির এই কৃতিত্ব এতটাই চিত্তাকর্ষক ছিল যে, সম্প্রতি এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে একটি চলচ্চিত্রও নির্মিত হয়েছে, যেখানে টম হ্যাংকস শিসলির ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। এ ছাড়াও ১৯৮২ সালে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের ফ্লাইট ৯- এর জাকার্তাগামী একটি বোয়িং ৭৪৭ বিমান গন্তব্য থেকে প্রায় ১১০ মাইল দূরে আগ্নেয়গিরির কাছাকাছি একটি স্থানে সফলভাবে গ্লাইডিং করে।





রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৯ জুন ২০১৭/ফিরোজ/তারা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়