খুলনায় প্রাক্তন এমপি ও কাস্টমস কমিশনারের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা : প্রায় দুই কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগে নাটোর-১ আসনের জাতীয় পার্টির (এ) প্রাক্তন সংসদ সদস্য এম আবু তালহা ও মোংলা কাস্টমস কর্তৃপক্ষের প্রাক্তন কমিশনার মো. নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বৃহস্পতিবার বিকেলে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় খুলনার উপ-পরিচালক মো. আবুল হোসেন নগরীর খালিশপুর থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন।

মামলার বাদী দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় খুলনার উপ-পরিচালক মো. আবুল হোসেন জানান, আমদানিকারক নাটোর-১ আসনের প্রাক্তন সংসদ সদস্য এম আবু তালহা ২০০৫ সালের অক্টোবর মাস থেকে ২০০৬ সালের জুলাই মাসের মধ্যে বিদেশ থেকে বিভিন্ন প্রকার প্রসাধনী ও বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য (বিয়ার) আমদানি করেন। আমদানিকৃত মাদকদ্রব্য জাহাজের ক্রুদের মধ্যে বিক্রি করার কথা থাকলেও তা না করে বাইরে বিক্রি করেন। যার রাজস্বের পরিমাণ দাঁড়ায় ১ কোটি ৭৯ লাখ ৯৪ হাজার ৩৬০ টাকা। কিন্তু মোংলা কাস্টমসের প্রাক্তন কমিশনার মো. নুরুল ইসলামের যোগসাজশে ওই রাজস্ব কমিয়ে মাত্র দুই লাখ টাকা করেন। এ বিষয়ে মোংলা কাস্টমস কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। ওই কমিটির প্রতিবেদনেও রাজস্বের পরিমাণ দাঁড়ায় ১ কোটি ৭৯ লাখ ৯৪ হাজার ৩৬০ টাকা। এরপর ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। পরবর্তীতে দুদক তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পায়।

ফলে রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগে মোংলা কাস্টমস কর্তৃপক্ষের প্রাক্তন কমিশনার মো. নুরুল ইসলাম ও নাটোর-১ আসনের প্রাক্তন সংসদ সদস্য এম আবু তালহার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।

খালিশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমীর তৈমুর আলম ইলী মামলা দায়েরের সত্যতা স্বীকার করে জানান এখনও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।

এর আগে মানি লন্ডারিং আইনের মামলায় ২০১৬ সালের ১৬ অক্টোবর গ্রেপ্তার হন প্রাক্তন কাস্টমস কমিশনার মো. নুরুল ইসলাম। প্রাক্তন কাস্টমস কমিশনার মো. নুরুল ইসলাম, আমদানিকারক মেসার্স মিডিয়া এন্টারপ্রাইজের মালিক হুমায়ন কবীর, বরগুনার আমতলী থানার বাসিন্দা আবুল কালাম আজাদ, মেসার্স প্রফেসি শিপিং লাইন্সের মালিক জুলফিকার মালেক ও একই প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার আব্দুর রাজ্জাক ২০০৯ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর পারস্পরিক যোগসাজশে মিথ্যা ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে মেসার্স মিডিয়া এন্টারপ্রাইজের নামে পূবালী ব্যাংক লিমিটেড, খুলনা শাখায় এলসি খুলে ৪ হাজার ৫৫ দশমিক ৫৬ মার্কিন ডলার মূল্যের সাবান ও বডি স্প্রে জাতীয় প্রসাধনী পণ্য দুবাই থেকে আমদানি করে। কিন্তু মোংলা বন্দর দিয়ে ওই পণ্য আমদানির আড়ালে আসামিরা অবৈধভাবে ২৪ হাজার ২৪০ বোতল অনুমোদনবিহীন বিভিন্ন প্রকার বিদেশি মদসহ দুই কন্টেইনার ইলেক্ট্রনিক ও অন্যান্য পণ্য আমদানি করেন। এভাবে আসামিরা মোংলা বন্দর দিয়ে ঘোষণাবহির্ভূত মালামাল আমদানি করে ৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা অন্যায়ভাবে বিদেশে পাচার করে দেশের ক্ষতিসাধন করেছেন। এ ঘটনায় ২০১১ সালের ৪ জুলাই মোংলা (বাগেরহাট) থানায় নুরুল ইসলামসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দুদক।



রাইজিংবিডি/খুলনা/২৯ জুন ২০১৭/মুহাম্মদ নূরুজ্জামান/মুশফিক