ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

কক্সবাজারে সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপনের উদ্যোগ

সুজাউদ্দিন রুবেল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৪২, ২ আগস্ট ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
কক্সবাজারে সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপনের উদ্যোগ

সুজাউদ্দিন রুবেল, কক্সবাজার থেকে : পরিবেশ বিপর্যয় থেকে পর্যটন শহর কক্সবাজারকে রক্ষা করতে সেন্ট্রাল সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপন করতে যাচ্ছে সরকার।

সাগরে ভাসমান এ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপনে নরওয়ের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করবে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ।

পরিবেশ দূষণের অভিযোগে হোটেল-মোটেলের বিরুদ্ধে পরিবেশ অধিদপ্তর কঠোর অবস্থান নেওয়ায় উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এ প্রকল্প হাতে নেয়।

মাত্র আড়াই বর্গ কিলোমিটারের কক্সবাজার শহরের লোকসংখ্যা প্রায় পাঁচ লাখ। তার সঙ্গে প্রতি বছর যুক্ত হয় অন্তত ১৫ লাখ পর্যটক। পর্যটকদের সুবিধার্থে এখানে গড়ে উঠেছে সাড়ে চারশ’ হোটেল-মোটেল-রিসোর্ট ও কটেজ। বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতে বিনোদনের জন্য প্রতি বছরই পর্যটকের সংখ্যা বাড়ছে।

আর সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে স্থাপনার পরিমাণও। এতে প্রতিদিনই সৃষ্টি হচ্ছে শত শত টন বর্জ্য। কিন্তু পর্যটন শহর হলেও এখানে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কোনো সিস্টেম নেই বললেই চলে। সমস্ত বর্জ্য বিভিন্ন ড্রেন এবং খাল হয়ে মিশছে সাগরের পানিতে।

কক্সবাজার নগর পরিকল্পনাবিদ প্রকৌশলী বদিউল আলম বলেন, পর্যটন নগরী কক্সবাজারে অবশ্যই উন্নত ড্রেনেজ ব্যবস্থা থাকা একান্ত প্রয়োজন। ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নত হতে হলে মাটির নিচ দিয়ে এর ব্যবস্থা করতে হবে। যাতে দেশ-বিদেশ থেকে আগত পর্যটকরা না দেখে।

সবশেষ সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপন না করা এবং পরিবেশ দূষণের অভিযোগে চলতি মাসে অন্তত ৩শ' হোটেলকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর। এ অবস্থায় পরিবেশ রক্ষায় সেন্ট্রাল সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপনের কাজ শুরু করেছে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ।

কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ চেয়ারম্যান লে. কর্নেল অব. ফোরকান আহমেদ বলেন, সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপনে কোনো জায়গা লাগবে না। বাঁকখালী নদীতে একটি জাহাজের মধ্যে করা হবে। ময়লার সুয়ারেজগুলো খাওয়ার পানিতে পরিণত হয়। আর যেগুলো সলিড ওয়েস্টগুলো থাকবে সেগুলো ফার্টিলাইজার মাধ্যমে বিক্রি করতে পারব।

কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ সরোয়ার উদ্দিন আহমেদ বলেন, এটা যেহেতু একটি বিদেশি প্রতিষ্ঠান আর তারা যখন বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে আর সরকার যদি এটাকে নিয়ে একটু খতিয়ে দেখে তাহলে এটা সুফল আসবে।

পরিবেশ অধিদপ্তরের শোকজ নোটিশ পাওয়ার পর হোটেল ব্যবসায়ীদের মধ্যে যে অস্থিরতা শুরু হয়েছিল, সরকারের এ পরিকল্পনায় আশার আলো দেখছেন তারা।

কক্সবাজার হোয়াইট অর্কিড ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুরাদ চৌধুরী বলেন, এটা যদি করা হয় খুবই ভাল হয়। আর আমরা পরিবেশসহ সব কিছু ভাল রাখতে পারব।

কক্সবাজার হোটেল-মোটেল-রিসোর্ট মালিক সমিতি সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার বলেন, পর্যটকসহ এখানের অধিবাসীদের জন্য এটা জরুরি।

হোটেল-মোটেল এবং রিসোর্টের সমস্ত ময়লা-আবর্জনা পাইপ লাইনের মাধ্যমে সাগরে অবস্থানরত ভাসমান পন্টুনে গিয়ে জমা হবে। সেখানে রি-সাইক্লিং শেষে তরল বর্জ্য ফেলা হবে সাগরে আর কঠিন বর্জ্য সার হিসেবে বিক্রির ব্যবস্থা করা হবে।

পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কক্সবাজারের এখনও সব কিছু শেষ হয়ে যায়নি। বরং সময় হয়েছে নতুন করে শুরু করার। এ জন্য যত দ্রুত সম্ভব সেন্ট্রাল সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপন করা যাবে তত দ্রুতই রক্ষা পাবে এখানকার পরিবেশ।

 

 

রাইজিংবিডি/কক্সবাজার/২ আগস্ট ২০১৭/সুজাউদ্দিন রুবেল/রুহুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়