ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

কুষ্টিয়ায় এবার কচু চাষে লোকসান

কাঞ্চন কুমার || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৫১, ৮ আগস্ট ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
কুষ্টিয়ায় এবার কচু চাষে লোকসান

কাঞ্চন কুমার, কুষ্টিয়া : কুষ্টিয়ায় এ বছর কচু চাষ করে লোকসানে পড়েছেন চাষিরা। যে দামে কচু বিক্রি করছেন, তাতে কৃষকের শ্রমিক খরচই উঠছে না।

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার খলিসাকুন্ডি গ্রামের চাষি রাজীব আলী চলতি বছরে দুই বিঘা জমিতে কচুর চাষ করেছেন। তিনি জানালেন, কচু বিক্রির টাকা দিয়ে কয়েকটি কাজ করবেন বলে স্বপ্ন দেখেছিলেন, এখন দেখছেন লাভ তো দূরের কথা, শ্রমিক খরচই উঠছে না।

তিনি জানান, বীজ, জমি সেচ, সার, শ্রমিক খরচ দিয়ে বিঘাপ্রতি খরচ হয়েছে ১৫ হাজার টাকা। এর পরে কচু তোলার সময় খরচ আছে। এক বিঘা জমিতে ১০০ মণ কচু হবে। একজন শ্রমিক দিনে জমি থেকে দুই মণ কচু তোলে। তার মজুরি ২৫০ টাকা, এক মণ কচু পরিষ্কার করতে নেয় ৪০ টাকা, মাঠ থেকে বাজারে নিয়ে যেতে খরচ মণপ্রতি ২০ টাকা, বাজারে আড়ৎদারের দিতে হয় মণপ্রতি ৪০ টাকা, সেই সঙ্গে একমণ কচুতে ৩-৫ কেজি বেশি দিতে হয়। এক মণ কচু বিক্রি হয় মাত্র ৬০০ টাকায়। বেশি ভালো হলে ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা। এতে কৃষকের থাকল কী?

রাজীব আলী বলেন, ‘ভেবেছিলাম কচু বিক্রি করে এবার একটা গরু কিনব। তবে কচুর যে দাম, তাতে গরু তো দূরের কথা, ছাগল কেনাও হবে না।’ 

কৃষক আরব আলী বলেন, ‘কৃষক যেটা কিনতে যায় সেটারই দাম বেশি, আর বিক্রি করতে গেলে কম। আমরা তো লাভের আশায় চাষ করি। তবে লাভ দেখছি না। এবার কচুর যে বাজার দাম, তাতে লোকসান গুনতে হচ্ছে। কচুর দাম ৯০০ থেকে ১০০০ টাকা মণ হলে কিছুটা লাভ হবে।’ 

খলিসাকুন্ডি কাঁচা বাজারের ব্যবসায়ী বিশারত আলী জানান, তারা কৃষকের কাছ থেকে ৬০০-৭০০ টাকা মণে কচু ক্রয় করছেন। কেজিপ্রতি ৫০ পয়সা লাভে তারা ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলের বাজারে এগুলো বিক্রি করছেন। এখান থেকে প্রতিদিন চার/পাঁচ ট্রাক কচু দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যাচ্ছে।

এ ব্যাপারে দৌলতপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন জানান, দৌলতপুর উপজেলায় সবজির চাষ তুলনামূলকভাবে বেশি। তবে কচুর চাষ কম। উপজেলার মধ্যে খলিসাকুন্ডিতে কচুর চাষ বেশি। তবে কী পরিমাণ কচু চাষ হয়েছে, সেই তথ্য তার কাছে নেই।

কুষ্টিয়া জেলা কৃষি বিপণন অধিপ্তরের বাজার কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, ‘স্থানীয় খুচরা ও পাইকারি বাজারে কৃষকরা বেশি বিক্রি করেন। যার ফলে কৃষকরা ন্যায্য দাম পান না। তারা যদি আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন, তাহলে ন্যায্য দাম পেতে সার্বিক সহযোগিতা করব। এতে কৃষক লাভবান হবেন।’



রাইজিংবিডি/কুষ্টিয়া/০৮ আগস্ট ২০১৭/কাঞ্চন কুমার/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়