ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

একজন সমাজহিতৈষী আবেদ মনসুর

শাহনেওয়াজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:১০, ১২ আগস্ট ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
একজন সমাজহিতৈষী আবেদ মনসুর

নিজস্ব প্রতিবেদক : সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি পাগলা নামে পরিচিত! তার কাজকর্মে পাগলামির ছাপ দেখে অনেকেই তাকে এই নামে বরণ করে নেন। এই ব্যক্তি আর কেউ নন; ভিনাইল ওয়ার্ল্ড গ্রুপের সিইও আবেদ মনসুর।

সংশ্লিষ্টরা জানান, তিনি নিজস্ব প্রায় একশ কোটি টাকা নিয়ে নেমে পড়েছেন এয়ারপোর্ট রোডের আধুনিকায়ন ও সৌন্দর্যবর্ধনের কাজে। নিজের টাকায় করে দিয়েছেন ১৫টি ফুটওভার ব্রিজের ছাউনি।

মানবদরদী হিসেবেও তার পরিচিতি আছে। তিনি  রাস্তায় কুড়িয়ে পাওয়া পিয়া নামের ৫ বছরের এক শিশুকন্যাকে বুকে তুলে নিয়েছেন। অনেক চেষ্টার পর সেই শিশুকে তুলে দিয়েছেন তার বাবার কোলে।

দরিদ্র বাবা তার মেয়ের বিয়ে দিতে পারছেন না- এমন খবর তার কানে পৌঁছালে সেই মেয়ের বিয়ের পুরো দায়িত্ব নিয়ে নেন নিজের কাঁধে।

এ ধরণের হিতৈষী কাজ করতে গিয়ে তাকে অত্যন্ত ঝামেলা পোহাতে হয়। তারপরও তার সরল স্বীকারোক্তি ‘এতেই আমার শান্তি।’

বয়সে তরুণ, সাদাসিধে আর সদালাপী ব্যবসায়ী আবেদ মনসুর। ছাত্রজীবনে বঙ্গবন্ধুর আর্দশে উজ্জীবিত হয়ে ছাত্র রাজনীতি করেছেন। দরিদ্রদের প্রতি সবসময়ই সহানুভুতিশীল, দুপুরের খাবার তিনি শ্রমিকদের সাথে বসেই খেয়ে নেন।

সাদা মনের এ মানুষটি সব সময় নিজেকে জড়িয়ে রাখেন নানা উন্নয়ন ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে। তারই অংশ হিসেবে এবার তার নিজস্ব অর্থায়নে পরিচালিত অলাভজনক সংগঠন ‘রিকভার’ থেকে কড়াইল ও সাততলা বস্তির হত-দরিদ্র বয়স্কদের পুনর্বাসনের জন্য তাদের হাতে বিনামূল্যে তুলে দিলেন ১২টি রিকশা।

সেই রিক্সা পেয়ে বারোটি মুখমণ্ডল যেন আনন্দে চিক চিক করে উঠলো। এই রিকশা বিতরণকে কেন্দ্র করে ১২ জনের পরিবার ও পুরো বস্তিতে বয়ে গেল খুশির বন্যা।

রিকশা যারা পেলেন তাদের একজন সাততলা বস্তির আব্দুর রহিম (৬৮)। রিক্সা পেয়ে তিনি আনন্দে কেঁদেই ফেললেন। কাঁপা গলায় বললেন, ‘দ্যাশের সব বড়লোক আর নেতারা যদি এই বাপজানের মতো পাগলা অইত!’

আব্দুর রহিম আরো বলেন, ‘মাইয়া বিয়া দেওনের পর কামের লাইগ্যা নানান জায়গায় ঘোরন দিয়া উষ্টা খাইছি। এহন নিজের রিক্সা চালামু, নিজে রোজগার করমু, কওনের কেউ নাই।’

সামাজিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণের বিষয়ে জানতে চাইলে আবেদ মনসুর বলেন, ‘জীবন তো একটাই, আমি মানুষের মাঝে বেঁচে থাকতে চাই; মৃত্যুর পরও মানুষ যেন আমার কথা মনে রাখে।’

তিনি বলেন, ‘আমি যা করি গরীব দুঃখী মানুষদের ভালোবেসেই করি। এ ধরণের কাজ করে আমি আনন্দ পাই।’

আগামীতেও তিনি সবসময় গরীব দুঃখী মানুষের পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১২ আগস্ট ২০১৭/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়