নান্দনিক রূপে সাজছে পর্যটন নগরীর প্রবেশদ্বার
সুজাউদ্দিন রুবেল, কক্সবাজার থেকে : বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত শহর কক্সবাজার। যেখানে প্রতিবছর ১৫ লাখের অধিক দেশি-বিদেশি ভ্রমণ পিপাসুর আগমন ঘটে।
তাই দীর্ঘদিন পরে হলেও পর্যটন শহর কক্সবাজারের প্রবেশদ্বার কলাতলীকে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে আকৃষ্ট করতে সাজানো হচ্ছে নবরূপে।
ছায়া সুনিবিড় প্রাকৃতিক পরিবেশে অত্যাধুনিক সুবিধা ব্যবস্থায় প্রায় সাত কোটি টাকা ব্যয়ে দুটি ধাপে কলাতলীর মোড় থেকে সমুদ্র সৈকত পর্যন্ত সড়কটি সাজানো হচ্ছে নান্দনিক রূপে।
ইতিমধ্যে তিন কোটি টাকা ব্যয়ে প্রথমধাপের কাজ শুরু করেছে সড়ক ও জনপদ বিভাগ এবং জেলা পরিষদ। আগামী দুইমাসের মধ্যে শেষ হবে এ কাজ।
দ্বিতীয় ধাপে আরো প্রায় চার কোটি টাকা ব্যয় করা হবে এর সৌন্দর্য বর্ধনে। আর ওই ধাপের ছোঁয়াতেই বদলে যাবে কক্সবাজারের প্রবেশদ্বার। আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে মিল রেখে প্রবেশদ্বারে থাকছে অত্যাধুনিক ইন্টারনেট সুবিধা ও থ্রি ডি প্রযুক্তির সব ধরনের সেবা। দেশি-বিদেশি আগত অতিথিদের কাছে কক্সবাজারকে তুলে ধরতেই কলাতলীর সৌন্দর্য বর্ধন করা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, পর্যটন নগরীতে সড়কপথে আগত পর্যটকরা কলাতলী দিয়েই কক্সবাজারে প্রবেশ করে। তাই প্রবেশ মুহূর্তটিকে স্মরণীয় করে রাখতেই হাতে নেওয়া হয়েছে ‘কলাতলীর প্রাকৃতিক দৃশ্য ও সৌন্দর্যবর্ধন’ শীর্ষক প্রকল্পটি। এ বছরের শুরুতে হাতে নেওয়া প্রকল্পটির প্রথমধাপের কাজ এগিয়ে চলছে দ্রুতগতিতে। প্রকল্পের আওতায় সেখানে বিদ্যমান সড়কটি দুই লেনে উন্নীত করা হয়েছে। সড়কের দুই পাশে নির্মাণ করা হয়েছে প্রশস্ত ফুটপাত ও ড্রেন।
এ ছাড়া হাঁটার জন্য আলাদা একটি রাস্তাও করা হয়েছে। এরমধ্যে ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে বাগান নির্মাণের প্রাথমিক কাজ শেষ করেছে জেলা পরিষদ। এ ছাড়া দুই কোটি ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ে ফুটপাত, ড্রেনের কভার, দুই লেনের উন্নীতকরণসহ অন্যান্য কাজ করছে সড়ক ও জনপদ বিভাগ।
কক্সবাজার জেলা পরিষদের সহকারী প্রকৌশলী মো. সোহেল রানা জানান, কলাতলীর সৌন্দর্য বর্ধন প্রকল্পে ৯ ফুট প্রশস্তের ‘সাইডওয়াকওয়ে’ ও ৩ ফুট প্রশস্তের ‘ড্রেন’ নির্মাণ করেছে জেলা পরিষদ।
কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রানাপ্রিয় বড়ূয়া জানান ‘কলাতলীর সৌন্দর্য বর্ধনের প্রথম ধাপের কাজ চলছে।দুই কোটি ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ের প্রথমধাপের কাজ শেষ হবে আগামী অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহে। এইচকেসি এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান প্রথমধাপের কাজ বাস্তবায়ন করছে।
তিনি আরো জানান, ইতিমধ্যেই সড়কটি দুই লেনে উন্নীত করা হয়েছে। দুই লেনের মাঝখানে ডিভাইডার স্থাপন করা হয়েছে। নালা ও ফুটপাতের কাজও শেষ। তবে এখনো ফুটপাত ও নালার ডাকনা দেওয়া হয়নি। বর্তমানে সড়কটিতে মাটি ভরাট করা হচ্ছে। বর্ষা মৌসুম শেষ হলে সড়কটির বিটুমিন দিয়ে ঢালাই করা হবে। এ ছাড়া অন্যান্য আনুষাঙ্গিক কাজ শেষ করা হবে।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন জানান, বিশ্ব দরবারে কক্সবাজারকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতেই প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় সৈকতের দিকে এগুতেই হাতের বাঁপাশে দৃষ্টিনন্দন পার্ক করা হবে। সেখানে গাছের ছায়ায় বসে বিশ্রামের জন্য চেয়ার ও ছাউনির ব্যবস্থা থাকবে। পর্যটকরা ওই মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে বসেই সমুদ্র দর্শন করতে পারবেন। এ ছাড়া দুই লেনের মাঝখানে সৌন্দর্য বর্ধন করা হবে। পাশাপাশি উন্মুক্ত ওয়াইফাই সংযোজনসহ অত্যাধুনিক থ্রি ডি সুবিধা স্থাপন করা হবে। ওইসব কাজে ব্যয় হবে আরো প্রায় চার কোটি টাকা।
রাইজিংবিডি/কক্সবাজার/১৩ আগস্ট ২০১৭/সুজাউদ্দিন রুবেল/রুহুল
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন