ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

ধর্ষণের মামলায় ২ যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

অদিত্য রাসেল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৫৩, ২৩ আগস্ট ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ধর্ষণের মামলায় ২ যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার নওগাঁ ইউনিয়নের মহিষলুটি এলাকায় এক কিশোরী (১৬) ধর্ষণের ঘটনায় দুই যুবলীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে তাড়াশ থানা পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- উপজেলার নওগাঁ ইউনিয়ন যুবলীগের তথ্য বিষয়ক সম্পাদক মো. মহির উদ্দিন ও একই ইউনিয়নের ৬নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সহ-সভাপতি আনিছুর রহমান আনিছ। এদের মধ্যে মহির উদ্দিন সাকুয়াদিগি গ্রামের সাইদুর রহমানের ছেলে ও আনিছ একই এলাকার আবু তালেবের ছেলে।

তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মঞ্জুর রহমান জানান, বুধবার দুপুর ১২টার দিকে মহিষলুটি এলাকায় অভিযান চালিয়ে মহির ও আনিছকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার রাতে ধর্ষণের পর স্থানীয়রা কিশোরীকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে পুলিশের হেফাজতে দিলেও ঘটনার সময় তার সঙ্গে থাকা ১০ বছর বয়সী ছোট ভাইকে উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। গ্রেপ্তার দুই যুবলীগ নেতাকে বহিষ্কারের সিদ্বান্ত নিয়েছে উপজেলা আওয়ামী যুবলীগ।

রাত সাড়ে ৮টার দিকে মহিষলুটি-নওগাঁ আঞ্চলিক সড়কের বিদ্যাধর গ্রামের ফাঁকা বাড়িতে ধর্ষণের শিকার কিশোরী নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার মশিন্দা ইউনিয়নের বাসিন্দা।

রাতে থানা হেফাজতে থাকা অবস্থায় ধর্ষিতা কিশোরী গণমাধ্যমকর্মীদের জানায়, তিন দিন আগে ছোট ভাইকে নিয়ে তাড়াশ উপজেলার মান্নান নগর এলাকায় বড় বোনের বাড়িতে আসে সে। মঙ্গলবার বিকেলে দু-ভাইবোন চলনবিল দেখতে মহিষলুটি আসে। পথে আনিছুর রহমান নামে তার দুলাভাইয়ের এক বন্ধু কৌশলে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় তাদের তুলে বিদ্যাধর এলাকার পরিত্যক্ত বাড়িতে নিয়ে আটকে রাখেন। সন্ধ্যার পর পরিত্যক্ত বাড়ি থেকে ছোট ভাইকে তারা অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যান। এরপর রাত সাড়ে ৮টার দিকে আনিছুর ও তার বন্ধু মহির তাকে ধর্ষণ করেন। চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন আসতে শুরু করলে তারা পালিয়ে যান।

নওগাঁ ইউনিয়নের ১নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি কোরবান আলী জানান, খবর পেয়ে তারা মেয়েটিকে উদ্ধার করে মহিষলুটি আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে রেখে থানায় সংবাদ দেন। পরে পুলিশ এসে তাকে নিয়ে যায়। তবে তার ছোট ভাইকে ঘটনাস্থলে পাননি।

তাড়াশ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ফজলে আশিক জানান, কিশোরীকে উদ্ধারের পর থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। রাতেই সে বাদী হয়ে মহির ও আনিছের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছে। কিশোরী ঘটনার সময় তার ছোট ভাই নিখোঁজ হয়েছে- জানালেও তাকে এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি। কিশোরীকে আজই (বুধবার) মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

নওগাঁ ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আব্দুল হাই বলেন, নওগাঁ ইউনিয়ন যুবলীগের তথ্য বিষয়ক সম্পাদক এবং মহিষলুটি হাটের টোল উত্তোলনকারী মহির উদ্দিন ও যুবলীগের ৬নম্বর ওয়ার্ডের সহ-সভাপতি আনিছ এ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত কি না, তা তিনি এখনো অবগত নন। ধর্ষণের বিষয়টি তিনি শুনেছেন।

তাড়াশ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন জানান, সংগঠনের জরুরি সভা ডেকে স্থানীয় যুবলীগ নেতা মহির ও আনিছকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে। এ জন্য ওই ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে ডেকে পাঠানো হয়েছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক সাচ্চু বিশ্বাস জানিয়েছেন, মেয়েটি তার বোনের স্বামীর যে ঠিকানা দিয়েছে, সেই গ্রামে ঠিকানা মোতাবেক তাদের খুঁজে পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, ওই কিশোরী ভুল তথ্য দিয়েছে।

 

 

রাইজিংবিডি/সিরাজগঞ্জ/২৩ আগস্ট ২০১৭/অদিত্য রাসেল/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়