ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

রাজধানীতে দুর্গাপূজা: কোথায় যাবেন?

ইসতিয়াক হোসেন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:১৫, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
রাজধানীতে দুর্গাপূজা: কোথায় যাবেন?

প্রতীকী ছবি

ইসতিয়াক হোসেন : দুর্গাপূজা বা দুর্গোৎসব হল হিন্দু দেবী দুর্গার পূজাকে কেন্দ্র করে প্রচলিত একটি উৎসব। দুর্গাপূজা সমগ্র হিন্দুসমাজেই প্রচলিত। তবে বাঙালি হিন্দু সমাজে এটি অন্যতম বিশেষ ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব। আশ্বিন বা চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষে দুর্গাপূজা করা হয়।

আশ্বিন মাসের দুর্গাপূজা শারদীয়া দুর্গাপূজা এবং চৈত্র মাসের দুর্গাপূজা বাসন্তী দুর্গাপূজা নামে পরিচিত। শারদীয়া দুর্গাপূজার জনপ্রিয়তা বেশি।

দুর্গাপূজা ভারত, বাংলাদেশ ও নেপাল সহ ভারতীয় উপমহাদেশ ও বিশ্বের একাধিক রাষ্ট্রে পালিত হয়ে থাকে। তবে বাঙালি হিন্দু সমাজের প্রধান ধর্মীয় উৎসব হওয়ার দরুন বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরা রাজ্যে দুর্গাপূজা বিশেষ জাঁকজমকের সঙ্গে পালিত হয়। এমনকি ভারতের অসম, বিহার, ঝাড়খণ্ড, মণিপুর এবং উড়িষ্যারাজ্যেও দুর্গাপূজা মহাসমারোহে পালিত হয়ে থাকে।

ভারতের অন্যান্য রাজ্যে প্রবাসী বাঙালি ও স্থানীয় জনসাধারণ নিজ নিজ প্রথামাফিক শারদীয়া দুর্গাপূজা ও নবরাত্রি উৎসব পালন করে। এমনকি পাশ্চাত্য দেশগুলোতে কর্মসূত্রে বসবাসরত বাঙালিরাও দুর্গাপূজা পালন করে থাকেন। ২০০৬ সালে গ্রেট ব্রিটেনের রাজধানী লন্ডনের ব্রিটিশ মিউজিয়ামের গ্রেট হলে ‘ভয়েসেস অব বেঙ্গল’ মৌসুম নামে একটি সাংস্কৃতিক প্রদর্শনীর অঙ্গ হিসেবে স্থানীয় বাঙালি অভিবাসীরা ও জাদুঘর কর্তৃপক্ষ এক বিরাট দুর্গাপূজার আয়োজন করেছিলেন।

সাধারণত আশ্বিন মাসের শুক্ল পক্ষের ষষ্ঠ থেকে দশম দিন পর্যন্ত শারদীয়া দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। এই পাঁচটি দিন যথাক্রমে ‘দুর্গাষষ্ঠী’, ‘মহাসপ্তমী’, ‘মহাষ্টমী’, ‘মহানবমী’ ও ‘বিজয়াদশমী’ নামে পরিচিত। আশ্বিন মাসের শুক্ল পক্ষটিকে বলা হয় ‘দেবীপক্ষ’। দেবীপক্ষের সূচনার অমাবস্যাটির নাম মহালয়া; এই দিন হিন্দুরা তর্পণ করে তাদের পূর্বপুরুষদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে। দেবীপক্ষের শেষ দিনটি হল কোজাগরী পূর্ণিমা। এই দিন হিন্দু দেবী লক্ষ্মীর পূজা করা হয়।

কোথাও কোথাও পনেরো দিন ধরে দুর্গাপূজা পালিত হয়। সেক্ষেত্রে মহালয়ার আগের নবমী তিথিতে পূজা শুরু হয়। পশ্চিমবঙ্গের বিষ্ণুপুর শহরের মৃন্ময়ী মন্দির এবং অনেক পরিবারে এই রীতি প্রচলিত আছে। পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরাতে মহাসপ্তমী থেকে বিজয়াদশমী পর্যন্ত (শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে মহাসপ্তমী থেকে কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা পর্যন্ত) চার দিন সরকারি ছুটি থাকে। বাংলাদেশে বিজয়াদশমীতে সর্বসাধারণের জন্য এক দিন সরকারি ছুটি থাকে।

১৯ সেপ্টেম্বর মহালয়া। এদিন মঙ্গলবার। আর পরের মঙ্গলবার ২৬ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠী। দশমী ৩০ সেপ্টেম্বর রোববার। বাংলাদেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পূজার তিন দিন ছুটি থাকে। বিজয়াদশমী বাংলাদেশের সরকারি ছুটির দিন।

শারদীয় দুর্গাপূজায় বরবারের মতো এবারো উৎসবের কেন্দ্রবিন্দু থাকবে ঢাকেশ্বরী মন্দির। এদিকে এবারো সব থেকে জাকজমকপূর্ণ সাজে সজ্জিত হচ্ছে বনানী পূজা মণ্ডপ। ভিভিআইপি ও বিদেশি অতিথিরাও আসবেন এখানে। এবারে ঢাকায় ২০০টির বেশি পূজা মণ্ডপ তৈরি হয়েছে। এক সময় ঢাকার দুর্গাপূজা সীমাবদ্ধ ছিল পুরান ঢাকার কোতোয়ালি এলাকায়।

বিগত কয়েক বছর ধরে পুরো ঢাকায় পূজা আয়োজন হচ্ছে মহাসমারোহে। শাঁখারীবাজার, তাঁতীবাজার, ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির, রামকৃষ্ণ আশ্রম, মিরপুর কেন্দ্রীয় মন্দির, ধানমন্ডি সর্বজনীন পূজা কমিটি, গুলশান বনানী সর্বজনীন পূজা উদযাপন পরিষদ, কলাবাগান সর্বজনীন পূজা উৎসব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলসহ বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে ও ব্যক্তিগতভাবে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে উৎসব মুখর পরিবেশে। গুলশান বনানী সর্বজনীন পূজা উদযাপন পরিষদ এবারও বনানী খেলার মাঠে জাঁকজমকভাবে পূজার আয়োজন করেছে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়