ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

ফারুক হত্যা : সাক্ষ্যগ্রহণ পেছাল

শাহরিয়ার সিফাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৪৯, ১৮ অক্টোবর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ফারুক হত্যা : সাক্ষ্যগ্রহণ পেছাল

সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন নাহার আহমেদ

নিজস্ব প্রতিবেদক, টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইলের মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলার আসামি ঘাটাইল-৩ আসনের সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা আদালতে হাজির না হওয়ায় সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়নি।

আজ বুধবার সকালে পূর্বনির্ধারিত সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ থাকায় বাদীপক্ষ আদালতে হাজির থাকলেও অসুস্থতাজনিত কারণে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-১ থেকে এমপি রানাকে হাজির না করায় আগামী ১ অক্টোবর পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ ধার্য করেছেন আদালত।

‘কোমরে ব্যথার’ কারণে এমপি রানা ভ্রমণ করতে পারবেন না- তাই তাকে আদালতে হাজির করা সম্ভব হয়নি বলে আদালতকে জানিয়েছে কাশিমপুর কারা কর্তৃপক্ষ।

মামলার অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি মনিরুল ইসলাম খান জানান, সকাল ১১টায় টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক আবুল মনছুর মিয়া এজলাসে উঠেন। প্রথমে চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলা ডাকা হয়। রাষ্ট্রপক্ষ সাক্ষী দেওয়ার জন্য মামলার বাদী নিহত ফারুক আহমেদের স্ত্রী নাহার আহমেদ, ছেলে আহমেদ মজিদ সুমন ও মেয়ে ফারজানা আহমেদ মিথুনকে আদালতে হাজির করে। কারাগারে আটক আসামি আনিসুল ইসলাম রাজা, মোহাম্মদ আলী, মো. সমির এবং জামিনে থাকা আসামি মাসুদুর রহমান, ফরিদ ও নুরুকেও হাজির করা হয়। কিন্তু আদালতের কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর কারাগার থেকে একটি চিঠি আদালতে পৌঁছায়। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র কারা তত্ত্বাবধায়ক জাহাঙ্গীর কবির স্বাক্ষরিত চিঠিতে জানানো হয়, মামলার প্রধান আসামি এমপি রানা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তিনি কোমরের ব্যথায় আক্রান্ত। তার শারীরিক অবস্থা ভ্রমণ উপযুক্ত নয়। তাই তাকে আদালতে হাজির করা সম্ভব হচ্ছে না। পরে বিচারক মো. আবুল মনসুর মিয়া সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ১ নভেম্বর পরবর্তী তারিখ ঘোষণা করেন।

চাঞ্চল্যকর এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের দিন থাকায় সকাল থেকে আওয়ামী লীগের বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী আদালত চত্বরে উপস্থিত হন। সাক্ষ্যগ্রহণ না হওয়ায় তারা রানা ও তার ভাইদের বিচারের দাবিতে মিছিল বের করেন। মিছিল আদালত এলাকা প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে। এতে বক্তব্য রাখেন মামলার বাদী ও নিহত ফারুক আহমেদের স্ত্রী নাহার আহমেদ, পৌর কাউন্সিলর আমিনুর রহমান প্রমুখ।

এ সময় নাহার আহমেদ বলেন, এমপি রানাকে হাজির না করে বিচার প্রক্রিয়া বিলম্বিত করার চেষ্টা চলছে। এর আগে অসুস্থতার অজুহাতে রানাকে আটবার আদালতে হাজির করা হয়নি। তাই মামলার অভিযোগ গঠন করতে প্রায় ১০ মাস নষ্ট হয়েছে। মামলার তারিখ এলে রানা অসুস্থ হয়ে পড়েন। এখন সাক্ষ্যগ্রহণের সময়ও তারা একই কৌশল নিয়েছেন।

এ সময় অন্যদের মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুজ্জামান সোহেল, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সোলায়মান হাসান, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মাতিনুজ্জামান খান, বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির মহাসচিব গোলাম কিবরিয়া, ঘাটাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক শহীদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ফারুক আহমেদের গুলিবিদ্ধ লাশ তার কলেজপাড়ার বাসার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনার তিন দিন পর তার স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ২০১৪ সালের আগস্টে গোয়েন্দা পুলিশের তদন্তে এ হত্যায় এমপি রানা ও তার ভাইদের নাম বের হয়ে আসে। ২০১৬ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় গোয়েন্দা পুলিশ।



রাইজিংবিডি/টাঙ্গাইল/১৮ অক্টোবর ২০১৭/শাহরিয়ার সিফাত/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়