ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

কেসিসি নির্বাচন

পোস্টার-ব্যানারে নজর কাড়ার চেষ্টা

মুহাম্মদ নূরুজ্জামান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:০৫, ২২ নভেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
পোস্টার-ব্যানারে নজর কাড়ার চেষ্টা

মুহাম্মদ নূরুজ্জামান, খুলনা : আসন্ন খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আলহাজ অ্যাডভোকেট এস এম শফিকুল আলম মনাকে মেয়র পদে দেখতে চাই’, ‘অ্যাডভোকেট মো. সাইফুল ইসলামকে খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে দেখতে চাই’- এমন প্রত্যাশা সম্বলিত পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন এখন খুলনা নগরজুড়ে। নগরীতে মাসাধিকাল ধরে চারটি রাজনৈতিক দলের অর্ধ ডজন সম্ভাব্য প্রার্থীর নামে এই প্রচারণা চলছে।

প্রত্যেক সম্ভাব্য প্রার্থীর পোস্টারে ‘প্রচারে নগরবাসী, খুলনাবাসী’ ইত্যাদি শব্দ লেখা রয়েছে। এভাবে নিজের নাম সামনে আনার চেষ্টা করছেন প্রার্থীরা।

কেসিসি নির্বাচনের মেয়র পদের জন্য জাতীয় পার্টির (জাপা) নগর আহ্বায়ক এস এম মুশফিকুর রহমান ‘লাঙ্গল’ প্রতীক নিয়ে রীতিমত ভোট চাইতে শুরু করেছেন। এ ক্ষেত্রে তিনি নিজেকে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে পোস্টারে উল্লেখ করেছেন।

নগরীতে অনুসন্ধান চালিয়ে দেখা গেছে, চারটি রাজনৈতিক দলের অর্ধ ডজন সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য আগাম সরব হয়েছেন। মাসাধিকাল ধরে তারা পোস্টার, ফেস্টুন ও ব্যানার দিয়ে নিজেদের প্রার্থিতা জানান দেওয়ার চেষ্টা করছেন। নগরবাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ এবং নিজেদের পরিচিতি করার চেষ্টা করছেন। এ ক্ষেত্রে সবাই প্রচারণায় ‘নগরবাসী’র নাম ব্যবহার করছেন।

এর মধ্যে জেলা বিএনপি সভাপতি অ্যাডভোকেট এস এম শফিকুল আলম মনা, সদর থানা আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট মো. সাইফুল ইসলাম, সদর থানা আওয়ামী লীগ নেতা সিদ্দিকুর রহমান বুলু বিশ্বাস, মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আনিছুর রহমান পপলু, জাতীয় পার্টির (জাপা) নগর আহ্বায়ক এস এম মুশফিকুর রহমান এবং জাতীয় পার্টির (জেপি) নগর শাখার সাধারণ সম্পাদক কাজী মাসুদ আহমেদ নগরবাসীর নজরে এসেছে। প্রত্যেকেই নিজ নিজ প্রচারণায় ‘নগরবাসী তাকে মেয়র হিসেবে দেখতে চান’ মর্মে দাবি করেছেন।

সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী হিসেবে কেসিসির বর্তমান মেয়র ও নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনি, সাবেক মেয়র ও খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি তালুকদার আব্দুল খালেক, সদর থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আজমল আহমেদ তপনের নাম শোনা গেলেও তাদের প্রকাশ্য প্রচারণা চোখে পড়েনি। তবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মহানগর শাখার সভাপতি মাওলানা মুজ্জাম্মিল হককে দলীয় মেয়র প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছে দলটি। তিনিও প্রচারে পিছিয়ে নেই।

২০১৩ সালের ১৫ জুন খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) সর্বশেষ নির্বাচন হয়। সেই হিসাবে আগামী বছরের ১৫ জুন বর্তমান পরিষদের পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হবে। ফলে করপোরেশনের পরবর্তী নির্বাচন ২০১৮ সালের প্রথম দিকে হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

কেসিসি নির্বাচনের পরের বছর ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি তালুকদার আব্দুল খালেক বাগেরহাট-৩ (রামপাল-মংলা) আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী হিসাবে দলীয় নেতা-কর্মীদের আলোচনায় এগিয়ে আছেন তিনি। তবে শেষ পর্যন্ত তালুকদার খালেককে মেয়র প্রার্থী করা না হলে কে পাবেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন তা নিয়ে দলীয় কর্মীদের মধ্যে ধোঁয়াশা রয়েছে।

বিএনপির দলীয় মনোনয়নে নির্বাচিত মেয়র ও মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনি ফের প্রার্থী হিসেবে এগিয়ে থাকলেও জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এস এম শফিকুল আলম মনা এবার মেয়র প্রার্থী হিসেবে আগে-ভাগে প্রচার শুরু করেছেন। তিনি ২০১৩ সালের নির্বাচনেও মেয়র প্রার্থী হিসেবে দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন। তবে দলীয় সিদ্ধান্তের কারণে সেটি প্রত্যাহার করেছিলেন। ইতোমধ্যে তার পক্ষে নগরবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন তার কর্মী-সমর্থকরা।

বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির মহাসচিব শেখ আশরাফ-উজ-জামান বলেন, নির্বাচিনী প্রচারণায় নগরবাসীর সম্পৃক্ততা নেই। এটি প্রার্থীদের নিজস্ব ব্যাপার। তারা নিজ নিজ উদ্যোগে প্রচার চালিয়ে থাকেন। নির্বাচন কমিশন প্রতীক বরাদ্দ না করা পর্যন্ত প্রতীক ব্যবহার করে ভোট চাওয়া ঠিক নয়। এতে সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়।

নগরবাসী বলছেন, কেসিসি নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক হওয়ার আগেই সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীরা তৎপরতা শুরু করেছেন। নগরজুড়ে পোস্টার, ব্যানার দিয়ে নিজেদের প্রার্থিতা জানান দিচ্ছেন। তবে নির্বাচনী মাঠে লড়তে কোন দল কাকে মনোনীত করবে এবং শেষ পর্যন্ত কয়জন টিকে থাকবেন, সেটিই দেখার বিষয়।

২০১৩ সালের ১৫ জুন কেসিসি নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ নাগরিক ফোরামের প্রার্থী মনিরুজ্জামান মনি (আনারস) ১ লাখ ৮১ হাজার ২৬৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ সমর্থিত সম্মিলিত নাগরিক কমিটির প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক পেয়েছিলেন ১ লাখ ২০ হাজার ৫৮ ভোট। প্রায় ১৫ লাখ জনসংখ্যা অধ্যুষিত খুলনা মহানগরীর ভোটার ছিল ৪ লাখ ৪০ হাজার ৫৬৬ জন। আসন্ন নির্বাচনে ভোটার বাড়বে।



রাইজিংবিডি/খুলনা/২২ নভেম্বর ২০১৭/মুহাম্মদ নূরুজ্জামান/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়