ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র

স্বজনের অভাবে ৪ বাকপ্রতিবন্ধীর বন্দিজীবন

বিএম ফারুক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৩৫, ১৬ জানুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
স্বজনের অভাবে ৪ বাকপ্রতিবন্ধীর বন্দিজীবন

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর : যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে বন্দি চার বাকপ্রতিবন্ধী শিশুর স্বজনদের সন্ধান মিলছে না। পরিবারের ঠিকানা শনাক্ত না হওয়ায় স্বজনদের কাছেও হস্তান্তর করতে পারছে না কর্তৃপক্ষ।

দেশের চারটি জেলা থেকে আদালতের মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে তাদের শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে নিরাপদ হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। দুই শতাধিক বন্দির সঙ্গে তাদের রাখা হয়েছে। কোনো অপরাধের অভিযোগ না থাকলেও শুধু স্বজনের সন্ধানের অভাবে তারা বন্দিজীবন যাপন করছে।

শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক মো. শাহাবুদ্দিন বলেন, বাকপ্রতিন্ধী চার শিশুকে আদালতের মাধ্যমে সহজেই স্বজনদের কাছে হস্তান্তর সম্ভব। কিন্তু স্বজনদের নাম-পরিচয় না পাওয়ায় বিপাকে পড়েছি। পরিবারের লোকজনের সন্ধান পেলে তাদের হাতে তুলে দেব। গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর পরিবার তাদের শনাক্ত করুক। যোগাযোগ করলে আইনি প্রক্রিয়ায় তাদেরকে পরিবারে ফিরিয়ে দিতে পারব।

জানা যায়, যশোর সদর উপজেলার পুলেরহাটে অবস্থিত বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র (বালক) অবস্থিত। কেন্দ্রটিতে চার বিভাগের ৩৭টি জেলার দুই শতাধিক শিশু রয়েছে। তাদের বিভিন্ন মামলা, অজ্ঞাত উদ্ধার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে। এদের মধ্যে চারজন বাকপ্রতিবন্ধী ছেলে শিশু রয়েছে।

তারা হলো- লালমনিরহাট থেকে আসা রুবেল (১১)। সে শুধু পিতার নাম মকেল উদ্দিন লিখতে পারে। নাচ, ক্রিকেট ও ফুটবল খেলায় পারদর্শী। কথা বলতে পারে না। গোপালগঞ্জ থেকে আসা ছেলে শিশু (১৫) বাকপ্রতিন্ধী। মুখে আওয়াজ করলেও কথা স্পষ্ট নয়। তবে কুচকাওয়াজে সে পারদর্শী। আকাশে বিমান কিংবা হেলিকপ্টার উড়তে দেখলে সালাম দিয়ে সম্মান জানায়। মাগুরা থেকে আসা নাঈম (১৫)। তবে  কেন্দ্রে আসার পর তার নামকরণ হয়েছে। সেটি আসল নাম নয়। অল্প কথা বলতে পারে। কিন্তু তার কথা স্পষ্ট নয়। পরিবারের ঠিকানাও বলতে পারে না। নওগাঁ থেকে আসা  ছেলে শিশু (১২)। ভাঙা ভাঙা কণ্ঠে কথা বলতে পারে। কিন্তু পরিবারের ঠিকানা তার জানা নেই।

শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের সাইকো সোস্যাল কাউন্সিলর মুসফিকুর রহমান বলেন, বাকপ্রতিন্ধী শিশুরা অন্য শিশুদের সঙ্গে থাকায় মানসিকভাবে তাদের নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। তাদের পরিবারের কিংবা বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠানে রাখলে মানসিকভাবে সুরক্ষা পাবে। তবে পরিবার হলো সবচেয়ে নিরাপদ স্থান। শিশুদের পরিবারে ফেরাতে পারলে তারা আরও নিরাপদ হতো।

যশোরের আইনজীবী সালেহা বেগম বলেন, পরিবারের সন্ধান পেলে তাদের স্বজনদের কাছে ফিরিয়ে দিতে আইনি সহায়তা দেওয়া হবে। পরিবারের সন্ধানে মিডিয়ার সহযোগিতা প্রয়োজন।



রাইজিংবিডি/যশোর/১৬ জানুয়ারি ২০১৮/বি এম ফারুক/মুশফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়