ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

মাথাব্যথা নিরাময়ে ঘরোয়া উপাদান

প্রকাশিত: ০৬:৩১, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
মাথাব্যথা নিরাময়ে ঘরোয়া উপাদান

প্রতীকী ছবি

মোস্তাফিজুর রহমান রুবেল : অনেক বিষয়ই আপনার মাথাব্যথা সৃষ্টি করতে পারে। ডেডলাইন, প্রতিশ্রুতি পূরণের চিন্তা, তর্ক, বসের ঝাড়ি, যানজট, এমনকি ভালো বিষয়ও আপনার মাথাব্যথা সৃষ্টি করতে পারে, যা ‘আইসক্রিম হেডেক’ নামে পরিচিত।

সাধারণ ভাবে বললে, মাথাব্যথা হল শারীরিক ও মানসিক ক্লান্তি বা স্ট্রেসের বহিঃপ্রকাশ। এই স্ট্রেস মাথা ও ঘাড়ের পেশীতে ক্রিয়া করে মাথাব্যথা তৈরি করে। অথবা এটা রক্তনালীকে সংকুচিত করে যা পরবর্তীতে মাইগ্রেন বা ভাসকুলার মাথাব্যাথা হওয়ার পথ তৈরি করে। যদি আপনার সাইনাস সংকুচিত বা আক্রান্ত হয় তাহলেও মাথাব্যথা হতে পারে। মাথাব্যথা যদিও খুব অস্বস্তিকর কিন্তু বেশিরভাগ মাথাব্যথা অস্থায়ী হয়, যা আপনি ঘরোয়া উপাদানের সাহায্য নিয়ে খুব সহজেই দূর করতে পারেন।

থাইম ও রোজমেরি তেল মালিশ

মাথাব্যথা থেকে মুক্তি পেতে, ১-২ ফোটা থাইম অথবা রোজমেরি এসেনশিয়াল তেল আপনার কপালে মালিশ করুন। হালকা করে মালিশ করে কিছুক্ষণ বসে থাকুন দেখবেন মাথাব্যথা বিদায় নিয়েছে। ২০১০ সালের এক গবেষণায় দেখা যায়, থাইম এবং রোজমেরি তেলে কার্ভাক্রল নামে এক ধরনের উপাদান আছে যা কক্স-২ কে বাধা দেয়, যেমনটা আইব্রুফেনের মতো ব্যাথানাশক ওষুধে থাকে।

ম্যাগনেসিয়াম গ্রহণ

যারা মাইগ্রেনের সমস্যায় ভোগেন তাদের ওষুধ বক্সে প্রয়োজনীয় মিনারেলগুলো রাখার পরামর্শ দিয়েছেন গবেষকরা। ম্যাগনেসিয়ামের ঘাটতি আছে এমন মানুষেরই বেশি মাইগ্রেনের সমস্যা পরিলক্ষিত হয়। আর মাথাব্যথার সময় তাদের শরীরে ম্যাগনেসিয়ামের পরিমাণ অনেক কমে যায়। প্লেসব্রো নিয়ন্ত্রিণ দুইটি ক্লিনিক্যাল গবেষণায় দেখা গেছে, যারা খাবারের সঙ্গে সম্পূরক হিসেবে ম্যাগনেসিয়াম গ্রহণ করেন তারা মাথাব্যথা থেকে মুক্ত থাকেন। বিশেষজ্ঞদের মতে ৪০০ মিলিগ্রাম চুষে খাওয়া ম্যাগনেসিয়াম বা ম্যাগনেসিয়াম অক্সাইড যা ওষুধের দোকানে সহজলভ্য, তা গ্রহণ করলে মাথাব্যথা দূর হবে।

সতর্কতা : কিছু মানুষের জন্য ম্যাগনেশিয়াম ওষুধ গ্রহণ ডায়রিয়ার কারণ হতে পারে। প্রাকৃতিক ভাবে কুমড়া বীজ, ম্যাকেরল, শুকনো ডুমুর, ডার্ক চকলেট প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেশিয়ামের উৎস।

* ভিটামিন বি ২

মাথাব্যথা কমাতে ভিটামিনে বি ২ বা রিবোফ্লাভিন কার্যকর। এক গবেষণায় দেখা গেছে, মাইগ্রেনে আক্রান্তদের মধ্যে ৩ মাস প্রতিদিন ৪০০ মিলিগ্রাম করে রিবোফ্লাভিন গ্রহণ করার ৫৯ শতাংশ রোগীর মাইগ্রেনের সমস্যা অর্ধেক ভালো হয়েছে। তাদের মধ্যে মাত্র ১৫ শতাংশ রোগী জানিয়েছে যে, হালকা মাইগ্রেন মাঝে মাঝে দেখা দেয়। কাজুবাদাম, তিলের বীজ, কিছু মাছ এবং শক্ত পনিরে ভিটামিন বি ২ প্রচুর বিদ্যমান।

* বাটারবার নির্যাস

মাইগ্রেট প্রতিরোধে বাটারবার নামক ঔষধি গাছ দারুন কার্যকরী। বিশেষজ্ঞরা প্রায়ই এই গাছ ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। অন্তত তিনটা গবেষণায় দেখা গেছে, এই গাছের নির্যাসে বিদ্যমান পেটাডলেক্স, ওভার-দ্য-কাউন্টার ওষুধ হিসেবে মাইগ্রেন অনেকাংশেই কমায়। মাইগ্রেন দূর করতে এর নির্দিষ্ট ডোজ প্রথম এক মাস ৭৫ মিলিগ্রাম করে দিনে দুইবার, তারপর ৫০ মিলিগ্রাম করে দিনে দুইবার প্রয়োগ করতে হবে।

* আদা চা

আদা প্রস্ট্যাগল্যান্ডিন সংশ্লেষণ দমন করে মাইগ্রেন থেকে রক্ষা করতে পারে। তাছাড়া আদা মাইগ্রেনের পাশাপাশি বমিভাবকে দূর করে। আপনি সকল কাজেই আদা ব্যবহার করে সুস্থাস্থ্যের সুবিধাগুলো নিতে করতে পারেন। কোয়ার্টার আকারে কাটা ৩ টুকরো আদা ২ কাপ পানিতে ফুটিয়ে পান করুন।

* ক্যামোমিল চা

ক্যামোমিল চায়ে থাকা উপাদান আপনার ব্যাথা কমিয়ে আরাম দিতে পারে।  ক্যমোমিলের একটা চা ব্যাগ গরম পানিতে দিন, ১০ মিনিট রেখে দিন। পছন্দ হলে হালকা মধুও মেশাতে পারে। আরামদায়ক স্থানে বসে সময় নিয়ে পান করুন।

* পিপারমিন্ট এবং ল্যাভেন্ডার তেল দিয়ে ফুটবাথ
ফুটবাথকে মাথাব্যথা নিরাময়ের অন্যতম একটা উপায় বলে ভেষক চিকিৎসকরা বিশ্বাস করেন। হালকা গরম পানিতে পা ডুবিয়ে রাখলে মাথা থেকে রক্তের চাপ পায়ের দিকে নিয়ে আসে। ফলে সহজেই মাথায় স্বাভাবিক রক্তপ্রবাহ ফিরে আসে। কয়েক ফোটা পেপারমিন্ট বা ল্যাভেন্ডার তেল হালকা গরম পানিতে যুক্ত করে কিছুক্ষণ পা ডুবিয়ে রাখুন, মাথাব্যথা দূর হতে পারে।

তথ্যসূত্র : রিডার্স ডাইজেস্ট



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়