সারা জীবনের সঞ্চয় দিয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ
মুকুল || রাইজিংবিডি.কম
নিজস্ব প্রতিবেদক : নতুন প্রজন্মের কাছে ভাষা শহীদদের চেতনা ছড়িয়ে দিতে ব্যক্তিগত সঞ্চয় দিয়েই শহীদ মিনার তৈরি করলেন সুধীর কুমার রায় ও তার স্ত্রী বেলা রাণী রায়।
সাতক্ষীরার তালা উপজেলার খেশরা ইউনিয়নের এইচএমএস মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এ শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে।
৫০ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত হলেও এ বিদ্যালয়ে কোনো শহীদ মিনার নির্মাণ ছিল না। তাই শহীদ মিনার নির্মাণ করায় আনন্দের জোয়ারে ভাসছে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী।
মহান শহীদদের স্মৃতি নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার একটি মাধ্যম হলো শহীদ মিনার। প্রতি বছর শহীদ মিনারে বিভিন্ন জাতীয় দিবসে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।
এলাকাবাসী, বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের দীর্ঘ দিনের প্রাণের দাবি ছিল একটি শহীদ মিনার। কিন্তু প্রশাসনিক কোনো উদ্যোগ নেই শহীদ মিনার নির্মাণের। তাই তো হরিহরনগর গ্রামের ৮৫ বছরের প্রবীণ ব্যক্তি সুধীর কুমার রায় ও তার স্ত্রী বেলা রাণী রায়। এইচএমএস মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে একটা শহীদ মিনার নির্মাণের পণ নিয়ে নিজেদের খরচ বাঁচিয়ে দীর্ঘদিন ধরে টাকা জমাতে শুরু করেন তারা। কিন্ত জমানো টাকার পরিমাণ কম হওয়ায় শরণাপন্ন হলেন সন্তানদের। অবশেষে ছয় ছেলের কাছ থেকে বাকি টাকা নিয়ে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে নির্মাণ করলেন শহীদ মিনার।
সুধীর কুমার রায়
বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ভাষা শহীদদের জন্য শহীদ মিনার নির্মাণ করায় বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ও এলাকাবাসী আনন্দে উচ্ছ্বাসিত।
সুধীর কুমার রায় ও তার স্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে সাতক্ষীরা-১ আসনের সংসদ সদস্য মোস্তফা লুতফুল্লাহ ২০ ফেব্রুয়ারি এই শহীদ মিনারটি উদ্বোধন করেন।
সুধীর কুমার রায়ের ছোট ছেলে সত্যজিত রায় বলেন, দুই লাখ টাকার বেশি ব্যয়ে এটি নির্মাণ করা হয়েছে। এটি এই এলাকার প্রথম শহীদ মিনার। আমরা আশাকরি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনগুলো শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে পারবে।
ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুমন বলে, আমাদের এ বিদ্যালয়ে আগে শহীদ মিনার ছিল না। কোনো দিন ভাষা ও মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সম্মান জানানোর জন্য শহীদ মিনারে ফুল দিতে পারিনি। এখন শহীদদের সম্মান জানাতে পারব, এতেই আমার অনেক খুশি লাগছে।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/মুকুল/এসএন
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন