ওয়ালটন অনূর্ধ্ব-১৮ ফুটবল
ফাইনালেও আবাহনীকে হারাতে চায় ফরাশগঞ্জ
ট্রফি হাতে আবাহনী ও ফরাশগঞ্জের অধিনায়ক || ছবি : মেহরাব হোসেন আসিফ
ক্রীড়া প্রতিবেদক : ওয়ালটন অনূর্ধ্ব-১৮ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের ‘ডি’ গ্রুপে ছিল আবাহনী লিমিটেড ও ফরাশগঞ্জ স্পোর্টিং ক্লাব। প্রথম দেখায় আবাহনীকে ১-০ গোলে হারিয়েছিল পুরান ঢাকার ক্লাবটি। অবশ্য আবাহনীর বিপক্ষের ম্যাচে ১৮ বছরের বেশি বয়সী খেলোয়াড় মাঠে নামানোর অভিযোগে ফরাশগঞ্জের পুরো ৩ পয়েন্ট কেটে নেয় টুর্নামেন্ট কমিটি।
এরপর মুক্তিযোদ্ধাকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে আসে ফরাশগঞ্জ। সেমিফাইনাল পেরিয়ে নিশ্চিত করে ফাইনালও। আর ফাইনালে আবারো প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়েছে আবাহনী লিমিটেডকে। আগামীকাল রোববার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে বিকেল সাড়ে চারটায় ফাইনালে মুখোমুখি হবে ফরাশগঞ্জ ও আবাহনীর যুবারা।
তার আগে আজ শনিবার বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপক্ষে ফাইনাল পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে হাজির হন আবাহনীর ম্যানেজার সত্যজিৎ দাস রূপু, অধিনায়ক মো. রফিকুল ইসলাম সুমন ও ফরাশগঞ্জ স্পোর্টিং ক্লাবের প্রধান প্রশিক্ষক আবু ফয়সাল আহমেদ, অধিনায়ক মো. নয়ন হোসেন। উভয় দলের অধিনায়ক ও কর্মকর্তাগণ সেরা খেলা উপহার দিয়ে শিরোপা জয়ের প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন গ্রুপের সিনিয়র অপারেটিভ ডিরেক্টর (গেমস এন্ড স্পোর্টস) এফএম ইকবাল বিন আনোয়ার (ডন), বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও পেশাদার লিগ কমিটির চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম মুর্শেদীসহ অন্যান্যরা।
ফরাশগঞ্জ স্পোর্টিং ক্লাবের অধিনায়ক মো. নয়ন হোসেন বলেন, ‘আমরা ধারাবাহিক ফুটবল খেলে ফাইনালে এসেছি। ফাইনালেও আমরা আমাদের সেরাটা দিয়ে খেলতে চাই। গ্রুপপর্বে আবাহনীকে হারিয়েছিলাম। ইনশাল্লাহ আগামীকালও আবাহনীকে হারিয়ে শিরোপা জিততে চাই। পাশাপাশি চাই এই টুর্নামেন্টে ভালো করে এক সময় জাতীয় দলে খেলতে।’
আবাহনীর অধিনায়ক মো. রফিকুল ইসলাম সুমন বলেন, ‘আমরা এই টুর্নামেন্টের আগে অল্প সময় পেয়েছিলাম প্রস্তুতির জন্য। তবে অল্প সময় হলেও আমাদের মধ্যে বোঝাপোড়া বেশ ভালো। আমাদের দলে ভালো পারফরমার আছে। আশা করছি আমরা আমাদের সেরাটা দিয়ে খেলতে পারব। প্রথম ম্যাচে ফরাশগঞ্জের কাছে হেরেছিলাম। সেই ম্যাচেও আমরা ভালো ফুটবল খেলেছিলাম। কিন্তু শেষ মুহূর্তে গোল খেয়ে হেরে যাই। আশা করছি তাদের বিপক্ষে আগামীকাল ভালো ফুটবল খেলে শিরোপা জিততে পারব।’
ওয়ালটন গ্রুপের সিনিয়র অপারেটিভ ডিরেক্টর (গেমস এন্ড স্পোর্টস) এফএম ইকবাল বিন আনোয়ার (ডন), ‘আমরা বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সঙ্গে নিয়মিত কাজ করছি। ফুটবলকে এগিয়ে নিতে সব ধরনের টুর্নামেন্টের সঙ্গেই সম্পৃক্ত হচ্ছি। আমাদের বিশ্বাস ছিল এই টুর্নামেন্টের মাধ্যমে প্রত্যেক ক্লাবই তাদের পাইপলাইনের জন্য ভালোভালো কিছু খেলোয়াড় পাবে এবং সেটা পেয়েছেও তারা। ফরাশগঞ্জ স্পোর্টিং ক্লাব ও আবাহনীর জন্য শুভকামনা। আশা করব হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে ফাইনালে। টুর্নামেন্টের সফল পরিসমাপ্তি কামনা করছি।’
আব্দুস সালাম মুর্শেদী ওয়ালটন গ্রুপকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘ওয়ালটন গ্রুপকে সব সময় আমরা পাশে পাই। সে জন্য তাদের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। তারা শুধু আর্থিকভাবে নয়, নানাভাবে আমাদের সাহায্য-সহযোগিতা করছে। পাশাপাশি অন্যান্য পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান ও সংবাদমাধ্যমের কাছেও আমরা কৃতজ্ঞ। এই টুর্নামেন্ট থেকে অনেক প্রতিভাবান খেলোয়াড় বাছাই করা হয়েছে। যা পরবর্তীতে বয়সভিত্তিক জাতীয় ফুটবল দল গঠনে সুবিধা হবে। আগামী বছর থেকে এই টুর্নামেন্টটি লিগ পদ্ধতিতে আয়োজন করব।’
ওয়ালটন অনূর্ধ্ব-১৮ ফুটবল টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন দল ৫ লাখ আর রানার্সআপ দল পাবে ৩ লাখ টাকা। এ ছাড়া ওয়ালটন গ্রুপের পক্ষ থেকে ফাইনাল ও টুর্নামেন্ট সেরা, সর্বোচ্চ গোলদাতাসহ চারজন খেলোয়াড়কে পুরস্কৃত করা হবে।
প্রিমিয়ার লিগে খেলা ১২টি দলের অনূর্ধ্ব-১৮ বছর বয়সী খেলোয়াড়দের নিয়ে ২৬ এপ্রিল মাঠে গড়ায় অনূর্ধ্ব-১৮ ফুটবল টুর্নামেন্ট। এবারের এই টুর্নামেন্টের নামকরণ করা হয় ‘ওয়ালটন অনূর্ধ্ব-১৮ ফুটবল টুর্নামেন্ট-২০১৭-১৮’ পাওয়ার্ড বাই প্রিমিয়ার ব্যাংক। প্রিমিয়ার লিগের ১২টি দলের যুব দলকে চারটি গ্রুপে ভাগ করে প্রথম পর্ব রাউন্ড রবিন লিগ পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে কোয়ার্টার ফাইনাল ও সেমিফাইনাল হয়।
টুর্নামেন্টের ‘এ’ গ্রুপে ছিল ব্রাদার্স ইউনিয়ন, শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র ও সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব। ‘বি’ গ্রুপে ছিল শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব, রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটি ও টিম বিজেএমসি। ‘সি’ গ্রুপে ছিল চট্টগ্রাম আবাহনী, আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। আর ‘ডি’ গ্রুপে ছিল ঢাকা আবাহনী, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র ও ফরাশগঞ্জ স্পোর্টিং ক্লাব।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/১২ মে ২০১৮/আমিনুল
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন