ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

মুক্তা মনি ভালো নেই

এম.শাহীন গোলদার || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:৫০, ২২ মে ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
মুক্তা মনি ভালো নেই

সাতক্ষীরা সংবাদদাতা: সাতক্ষীরার বহুল আলোচিত বিরল রোগে আক্রান্ত মুক্তা মনি (১২) ভালো নেই। তার রক্তনালীর টিউমারে আক্রান্ত হাতটি আরও ফুলে গেছে। রস ঝরছে ও বড় বড় পোকা বের হচ্ছে।

রোগটি ছড়িয়ে গেছে বুক, পেট আর পায়েও। অসহ্য যন্ত্রণায় কান্নাকাটি আর আর্তনাদে বাতাস ভারী হয়ে উঠছে প্রতিদিন। সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাঁশদাহ ইউনিয়নের দক্ষিণ কামারবায়সা গ্রামে পৈত্রিক বাড়িতে এখন অবস্থান করছে মুক্তা মনি।

মুক্তা মনির হাতটি আদৌ ভাল হবে কীনা বলতে পারছেন না কেউই। খারাপ দেখে সপ্তাহ দুয়েক আগে ডা. ঢাকা মেডিক্যালের সামন্তলাল সেনের সাথে ফোনে কথা বলেছিলেন বাবা ইব্রাহিম হোসেন। এ সময় সামন্ত লাল মুক্তা মনির দুটি ছবি পাঠানোর কথা বলেন। পরে দুটি ছবিও পাঠান তিনি।

এরপর সামন্তলাল ফোন করে মুক্তা মনির খোঁজ খবর নেন। তিনি রোজার পরে আবারও মুক্তা মনিকে ঢাকায় এনে আরও কিছু পরীক্ষা-নীরিক্ষা করবেন কথা জানান।

সারাদিন শুয়ে শুয়ে কেঁদেকেটে দিন কাটছে মুক্তা মনির। তার অনুরোধে মাঝে মাঝে হুইল চেয়ারে করে দাদার কবরের পাশে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। এসব দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে তার পরিবার। এলাকার ছেলে-মেয়েরা তার কাছে আর ভয়ে যেতে চায় না।

মুক্তামনির বাবা ইব্রাহিম হোসেন বলেন, ‘চিকিৎসকরা তো চেষ্টার কম করেননি। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীও দেখভাল করেছেন। আমরা সত্যি কৃতজ্ঞ। এখনো ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটের ডাক্তাররা ফোন করে খোঁজখবর নেন। আমরাও নানা সময়ে দরকার হলে ফোন করি। কিন্তু বর্তমানে তার হাতের অবস্থা আরও খারাপ। ফুলে গিয়ে রস ঝরছে ও বড় বড় পোকা বের হচ্ছে। ড্রেসিং করতে দেরি হলেই হাতে জন্মাচ্ছে সাদা পোকা। আর দুর্গন্ধ তো আছেই।’

ইব্রাহিম হোসেন বলেন, ‘বর্তমানে আর নতুন করে অপারেশন করার মতো অবস্থা নেই তার। কোন বিকল্প চিকিৎসা আছে কি না তাও জানি না। তার পুরো হাতটি পচে গেছে। আমরা আশা ছেড়ে দিয়েছি। এখন আল্লাহই একমাত্র ভরসা।’

কেমন আছে জানতে চাইলে মুক্তা মনির এক কথার জবাব, ‘ভাল না।’ হাতের অবস্থা কি? প্রশ্ন করলে, শুধু হাতের দিকেই তাকায় সে।

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর হইচই পড়ে মুক্তা মনিকে নিয়ে। প্রথমে স্বাস্থ্য সচিব তার চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। পরে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার চিকিৎসার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। এরপর ১১ জুলাই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। সেখানে মুক্তা মনির চিকিৎসায় গঠিত হয় বোর্ড। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ধরা পড়ে হাতে রক্তনালীর টিউমার। তারপর কয়েক দফা অস্ত্রপচার শেষে গত ২২ ডিসেম্বর এক মাসের ছুটিতে বাড়ি আনা হয় মুক্তা মনিকে। এরপর আর ঢামেকে যেতে রাজি হয়নি মুক্তা মনি।



রাইজিংবিডি/সাতক্ষীরা/২২ মে ২০১৮/এম.শাহীন গোলদার/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়