ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

জমে উঠেছে প্রচার

হাসমত আলী || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৫৩, ২০ জুন ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
জমে উঠেছে প্রচার

নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর : গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন ফের জমে উঠেছে। উৎসবমুখর পরিবেশে প্রার্থীরা প্রচার চালাচ্ছেন।

সকাল থেকে শুরু করে রাত অব্দি চলছে সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং, প্রার্থীদের পথসভা। কাক ডাকা ভোর থেকে প্রার্থীরা ভোটাদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন। চায়ের স্টল থেকে অভিজাত এলাকা পর্যন্ত চলছে বিশ্বকাপ ফুটবল খোলার পাশাপাশি নির্বাচনী আলোচনা।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদাসহ নির্বাচন কমিশনাররা বুধবার গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সমন্বয় কমিটির বিশেষ আইনশৃঙ্খলা সভা ও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন।

নির্বাচনের অংশগ্রহণকারী প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আওয়ামী লীগের অ্যাডভোকেট মো. জাহাঙ্গীর আলম সিটি করপোরেশনের গাজীপুরা এলাকা থেকে এবং বিএনপির মুক্তিযোদ্ধা হাসান উদ্দিন সরকার ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের বাঙ্গালগাছ এলাকা থেকে প্রচার কাজ শুরু করেন।

আওয়ামী লীগ প্রার্থীর মিডিয়া সেল জানায়, জাহাঙ্গীর আলম মহানগরীর ৫০ নম্বর ওয়ার্ড টঙ্গীর গাজীপুরায় পথসভার মাধ্যমে প্রচার শুরু করেন। পরে  ৪৯, ৪৮, ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের এরশাদ নগরে তিনটি, হোসেন মার্কেটের সামনে, বনমালা হাউজ বিল্ডিং, নোয়াগাঁও এলাকায় পথসভা এবং গণসংযোগ করেন।

দুপুরে তিনি ৪৭, ৪৪, ৪৩, ৪৫, ৫৬, ও ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডের টিএন্ডটি বাজার, আমতলী মোড়, পাগাড়, সালাউদ্দিন গাজীর মার্কেটের সামনে, মধুমিতা রোড রেললাইন এলাকায় পথসভা ও প্রচার চালান। পরে বিকেলে বঙ্গতাজ অডিটরিয়ামে আয়োজিত নির্বাচন কমিশনের মতবিনিময় সভায় যোগ দেন তিনি।

পথসভায় প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বিএনপি শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টারের খুনির ভাইকে মনোনয়ন দিয়েছে। বিএনপি খুনির পরিবারকে প্রশ্রয় দিয়েছে। এতেই প্রমাণ হয় বিএনপি সংঘর্ষ এবং খুনের রাজনীতি করে। বিএনপি প্রার্থী পাঁচ বার জনপ্রতিনিধি হয়ে এলাকার উন্নয়ন করতে পারেননি। নিজের পরিবারের ভাগ্যের পরিবর্তন করেছেন।

তিনি আরো বলেন, রাজধানীর উত্তরার পরই টঙ্গী। নির্বাচিত হলে টঙ্গীর উন্নয়নে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেবেন। অতীতে বিএনপির প্রার্থী জনপ্রতিনিধি ছিলেন। অথচ টঙ্গীতে বড় রাস্তা নেই, ড্রেন নেই, রাস্তায় ফুটপাত নেই। জনগণের কর্মচারি হয়ে তিনি এসব কাজ করতে চান। তিনি আগামী ২৬ জুন নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করার আহ্বান জানান।     
 


পথসভায় মহানগর সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খান, প্রাক্তন এমপি কাজী মোজাম্মেল হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ফজলুল হক, মো. মতিউর রহমান মতি, মো. রজব আলী, কাজী ইলিয়াস আহমে, জাতীয় পার্টির থানা সভাপতি মো. বজলুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। দলের কেন্দ্রীয় নেতা শাহাজাদা মহিউদ্দিন, বলরাম পোদ্দার সকাল থেকে প্রার্থীর সঙ্গে টঙ্গীতে পথসভা এবং গণসংযোগ করেন।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ব্যারিস্টার মুহিবুল হাসান নওফেল মহানগরীর জয়দেবপুর শিমুলতলী পুজামন্ডপে সনাতন ধর্মের ভোটারদের সঙ্গে মতবিনিময় এবং গণসংযোগ করেন।  মহানগরীর ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে কেন্দ্রীয় নেতা অসীম কুমার উকিল, এস এম কামাল, গোলাম মোস্তফা কাজল, মহানগর নেতা মহিউদ্দিন মহি প্রচার চালান। এনামুল হক শামীম এবং ছাত্রলীগের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক মো. সাইফুর রহমান সোহাগ নগরীর ৪৫, ৪৬, ৫৫ ও ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডে বিভিন্ন মার্কেটে ঘুরে ভোট চান।

বিএনপি প্রার্থীর মিডিয়া সেল জানায়, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নগরীর ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের বাঙ্গালগাছ, নীলের পাড়া, কানাইয়া বাজার, বালুচাকুলি এলাকায় পথসভা ও গণসংযোগ করেন হাসান উদ্দিন সরকার। পরে বিকেলে তিনি বঙ্গতাজ অডিটরিয়ামে আয়োজিত নির্বাচন কমিশনের মতবিনিময় সভায় যোগ দেন।

পথসভায় হাসান সরকার বলেন, আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে নির্বিচারে মিথ্যা কথা বলছেন। আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যাকাণ্ড  নিয়ে তার মিথ্যাচার গাজীপুরের জনগণ কখনো বিশ্বাস করবে না। এটি একটি সেটেল্ট বিষয়। গাজীপুরবাসী ভালো করেই জানেন আহসান উল্লাহ মাস্টারকে কারা হত্যা করেছে। জাহাঙ্গীর এখন ভোটের লোভে যা ইচ্ছা তাই বলছেন।

হাসান সরকার আরো বলেন, আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করছেন। চীন ও জাপানের সহযোগিতায় গাজীপুর নগরী নিয়ে তিনি একটি মাস্টার প্ল্যান করেছেন এমন হাস্যকর প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। তিনি যে ‘গ্রীন সিটি, ক্লিন সিটি’র এই মাস্টার প্ল্যান করলেন, তাহলে রাজউকের ডিটেইলস্ এরিয়া প্ল্যানের (ড্যাপের) কী হবে? কালীগঞ্জের সন্তান জাহাঙ্গীর আলম গাজীপুর নগরীর অনেক এলাকাই তো এখনো চেনেন না, তাহলে এই নগরী নিয়ে মাস্টার প্ল্যান করলেন কীভাবে?

পথসভায় আরো বক্তব্য রাখেন দলের কেন্দ্রীয় নেতা ডা. মাজহারুল আলম, গাজীপুর সদর উপজেলা পরিষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আফজাল হোসেন কায়সার, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আহমেদ আলী রুশদী, জেলা মুক্তিযোদ্ধাদলের সভাপতি আব্দুস সামাদ মোল্লা, ৩০ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট মিলন উদ্দিন ভূইয়া প্রমুখ।

বিএনপির মেয়র পদপ্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা হাসান উদ্দিন সরকারের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারে নেমেছেন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী বেবী নাজনীন, শায়লা, শিবা শানু, মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ শিল্পী। তারা নগরীর হায়দরাবাদ, করমতলা, মাঝুখান, মিরের বাজারসহ পূবাইল অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় জেলা বিএনপির সভাপতি ও ধানের শীষ প্রতীকের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক ফজলুল হক মিলনের নেতৃত্বে গণসংযোগ করেন।

নগরীর ৫৭টি ওয়ার্ডে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা  প্রচারে অংশ নিয়েছেন। এর মধ্যে ৩ নম্বর ওয়ার্ডে রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ফরহাদ হালিম ডোনার, ৭ নম্বর ওয়ার্ডে শামসুজ্জামান দুদু, ৮ নম্বর ওয়ার্ডে অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান, ৯ নম্বর ওয়ার্ডে মীর শরাফত আলী সপু, ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে ফুটবলার আমিনুল হক, ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে নাজিম উদ্দিন আলম, ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে আমান উল্লাহ আমান, ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে জয়নুল আবেদীন ফারুক, ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে শামা ওবায়েদ, ৩ নম্বর ওয়ার্ডে আলতাফ হোসেন চৌধুরী, ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডে নিতাই রায় চৌধুরী, ৪০ নম্বর ওয়ার্ডে খায়রুল কবীর খোকন, ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে ডা. এ. জেড. এম জাহিদ হোসেন, ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডে মেজর অব. হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়াস কাদের চৌধুরী, ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডে শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, ৫১ নম্বর ওয়ার্ডে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ৫৪ নম্বর ওয়ার্ডে আব্দুল্লাহ আল নোমান এবং ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডে চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ প্রার্থীর পক্ষে গণ সংযোগ করেন।

 

 

রাইজিংবিডি/গাজীপুর/২০ জুন ২০১৮/হাসমত আলী/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়