ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

নগ্নতার ফাঁদে ফেলে ৩০ লাখ টাকা আদায়

মুহাম্মদ নূরুজ্জামান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৪৫, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
নগ্নতার ফাঁদে ফেলে ৩০ লাখ টাকা আদায়

গ্রেফতারকৃত দম্পতি

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা : খুলনায় নগ্ন ছবি ও ভিডিও ফুটেজ ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ৩০ লাখ টাকা আদায়ের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে প্রতারক দম্পতিকে।

মঙ্গলবার দুপুরে র‌্যাব-৬ খুলনার লবণচরাস্থ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানানো হয়। ব্রিফিং করেন স্পেশাল কোম্পানি কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. এনায়েত হোসেন মান্না।

গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে- নগরীর ছোট বয়রাস্থ করিম নগর এলাকার মৃত কাজী আব্দুর রউফের ছেলে কাজী আব্দুল মুনিম (৩৭) এবং তার স্ত্রী তানজিলা হাসান ঝুমা (২৪)।  এসময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ইন্টারনেটের পাঠানো কাগজপত্রের ৪০ পাতা ফটোকপি, প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন কোম্পানির ১৩ টি সিম, একটি মেমোরি কার্ড ও মোবাইল ফোন।

প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, একটি প্রতারক চক্র প্রায় চার বছর আগে ওয়াজেদ আলী নামক ব্যক্তিকে ব্যবসায়িক কাজের কথা বলে নগরীর সোনাডাঙ্গাস্থ আলী ক্লাবের  মোড়ে একটি তিনতলা বাড়ির নিচতলার কক্ষে নিয়ে যায়। সেখানে একটি মেয়েকে দিয়ে আপত্তিকর ছবি ও প্রায় ২০ মিনিটের ভিডিও ধারণ করে চক্রটি। ধারণকৃত ছবি ও ভিডিও ইন্টারনেটের মাধ্যমে ফেসবুকে ছেড়ে দেওয়ার ভয় দেখায় একটি চক্র। ওই চক্রকে আট লাখ টাকা দেওয়ার কথা বলে ওয়াজেদ আলীর ভায়রার ছেলে কাজী আব্দুল মুনিম তার কাছে থাকা চেক বইয়ে স্বাক্ষর করিয়ে ব্যাংক থেকে এ টাকা তুলে নেয়। কিছুদিন পর ওয়াজেদ আলীর ছেলে তৌহিদুজ্জামান সুমনের কাছ থেকে ২ লাখ টাকা আদায় করা হয়। এছাড়া ওয়াজেদ আলীর স্ত্রীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে তার কাছ থেকেও নেওয়া হয়  ২০ লাখ টাকা। এভাবে এ পরিবারটির কাছ থেকে তিন দফায় মোট ৩০ লাখ টাকা আদায় করা হয়। ১৮ সেপ্টেম্বর ওই প্রতারক চক্র আবারও ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। পরিবারটি বার বার টাকা দিতে পারবে না জানালে আরো ২০ লাখ টাকা দিলে বিষয়টি স্থায়ীভাবে সমাধান করা হবে বলে রেশমা নামে প্রতারকচক্রের এক সদস্য তাদের প্রতিশ্রুতি দেয়। এরপর তাদের দেওয়া দু’টি বিকাশ নম্বরে দু’ দফায় ২০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। এরপরও ৩০ হাজার টাকা দাবি করতে থাকে তারা। এছাড়া তারা ওয়াজেদ আলীর পুত্রবধূর ফেইসবুক পেজে অশালীন ভাষা এবং আপত্তিকর ছবি আপলোড দিয়ে ভিডিও ইউটিউবে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দিতে থাকে। এ ঘটনায় ওয়াজেদ আলী বাধ্য হয়ে ২০ সেপ্টেম্বর খুলনা সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।

র‌্যাব কর্মকর্তা এনায়েত হোসেন মান্নান জানান, র‌্যাব-৬ এর কাছে অভিযোগ দাখিল করা হলে তথ্য ও প্রযুক্তি ও বিকাশ কর্তৃপক্ষের সহায়তায় বিষয়টি অনুসন্ধান করা হয়। পুরো ঘটনার সঙ্গে ওয়াজেদ আলীর ভায়রার ছেলে কাজী আব্দুল মুনিম ও তার স্ত্রী তানজিলা হাসান ঝুমার সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়। এরপরই সোমবার তাদের গ্রেফতার করা হয়। তারা এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে। এছাড়া তাদের সঙ্গে আরও ১০-১২জনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। তাদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।



রাইজিংবিডি/ ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮/ খুলনা/মুহাম্মদ নূরুজ্জামান/শাহেদ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়