ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলা

১৪ বছরের অপেক্ষার অবসান হতে যাচ্ছে

মাকসুদুর রহমান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:২১, ৯ অক্টোবর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
 ১৪ বছরের অপেক্ষার অবসান হতে যাচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জনসভায় নৃশংস গ্রেনেড হামলা করে জঙ্গিরা। এরপর মামলা ও তদন্ত শেষে বিচারের রায়ের জন্য দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান হতে যাচ্ছে।

চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায়ের জন্য বুধবার দিন নির্ধারণ করেছেন আদালত। এই গ্রেনেড হামলায় দলের ২৪ জন নেতাকর্মী নিহত হন।

সিআইডি পুলিশ জানায়, ঘটনার পর মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফারুক হোসেন, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল জলিল ও সাবের হোসেন চৌধুরী বাদী হয়ে মতিঝিল থানায় পৃথক তিনটি মামলা করেন। তদন্তের প্রথমদিকেই জঙ্গিরা যে হামলা করেছে এবং এর সঙ্গে কারা জড়িত তার প্রাথমিক ধারণা পাওয়া যায়। তবে মামলা স্থানান্তর হওয়ায় এর বাইরে কিছু বলতে পারেননি তৎকালীন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।

মামলার সর্বশেষ তদন্ত কর্মকর্তা ও তৎকালিন সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার আব্দুল কাহার আকন্দ রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘একটি নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমেই আদালতে চার্জশিট দেওয়া হয়। সেখানে হামলা, হামলা পরবর্তী যা ঘটেছে এবং যারা জড়িত তাদের বিষয়ে স্পষ্ট করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে যারা দোষী তাদের উপযুক্ত শাস্তি হবে বলে আশা করছি।’

সিআইডি পুলিশ জানায়, সর্বশেষ তদন্তে এ মামলায় আসামি করা হয় ৫২ জনকে। তবে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মামলার অন্যতম আসামি প্রাক্তন মন্ত্রী ও জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ ও ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল মুফতি হান্নান ও তার সহযোগী শরীফ শাহেদুল ওরফে বিপুলের ফাঁসি হয়। এ কারণে তাদের আসামি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।  আর ৪৯ আসামির মধ্যে ৮ জন জামিনে, ১৮ জন পলাতক ও ২৩ জন কারাগারে আছেন। জামিনে আছেন খালেদা জিয়ার ভাগ্নে লে. কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক, প্রাক্তন আইজিপি মো. আশরাফুল হুদা, শহিদুল হক ও খোদা বক্স চৌধুরী এবং সাবেক তিন তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার রুহুল আমিন, সিনিয়র এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমান, এএসপি আব্দুর রশীদ ও সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার আরিফুল ইসলাম। আর প্রাক্তন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুসহ ২৩ জন কারাগারে বন্দি আছেন। পলাতক রয়েছেন বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, বিএনপির প্রাক্তন এমপি কাজী শাহ মোফাজ্জেল হোসেন কায়কোবাদসহ ১৮ আসামি।

আসামিপক্ষের আইনগত বিষয়ে যুক্তি উত্থাপন শেষে পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত ঢাকার এক নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন মঙ্গলবার রায়ের এ তারিখ ধার্য করেন। এদিন কারাগারে থাকা ২৩ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। হাজির ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ভাগ্নে লে. কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক, প্রাক্তন আইজিপি মো. আশরাফুল হুদা, শহিদুল হক ও খোদা বক্স চৌধুরীসহ জামিনে থাকা ৮ আসামি। মামলায় ৫১১ সাক্ষীর মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষে ২২৫ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন।

উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ট্রাকের মঞ্চে জনসভায় ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা করে জঙ্গিরা। হামলায় আওয়ামী লীগের তৎকালীণ মহিলা বিষয়ক সম্পাদিক ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৯ অক্টোবর ২০১৮/মাকসুদ/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়