ছেঁউড়িয়ায় এখন সাধু-ভক্তদের ভিড়
কুষ্টিয়া সংবাদদাতা: কুষ্টিয়ার কুমারখালীর ছেঁউড়িয়ায় এখন সাধু, বাউল শিল্পী ও লালনভক্তদের ভিড়। গতকাল সোমবার থেকে দলে দলে এদের আগমন অব্যাহত রয়েছে।
ফকির লালন সাঁইজির ১২৮ তম তিরোধান দিবস উদযাপনকে ঘিরে লালন আঁখড়াবাড়ি এখন উৎসবমূখর। কানে ভেসে আসছে সাধু-ভক্তদের কন্ঠে লালনের নানা গান। একতারা-দোতারা খোল-করতাল দেশীয় বাদ্যযন্ত্রে যে যার মতো গেয়ে চলেছে। এ এক অন্যজগত যেন।
ছেঁউড়িয়ায় আজ মঙ্গলবার শুরু হচ্ছে লালন সাঁইজির তিরোধান দিবস উপলক্ষ্যে ৩দিন ব্যাপি আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও গ্রামীন মেলা। শুরুর আগেই সাধু-ভক্তদের মিলন মেলায় পরিনত হয়েছে লালনের আঁখড়াবাড়ি। এখানে-ওখানে বসেছে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বাউলা গানের জমজমাট আসর ।
কেউ গুরুর মুখে শুনছে দেহতত্বের কথা, কেউ জানার চেষ্টা করছে মানবজীবন সম্পর্কে, কেউ আপন মনে গেয়েই চলেছে। ‘সর্বসাধন সিদ্ধ হয় তার/মানুষ গুরু নিষ্ঠা যার’, ‘জাত না গেলে পাইনে হরি/কিছার জাতের গৌরব করি’, ‘বাড়ির কাছে আরশিনগর..’, ‘আমার ঘর খানায় কে বিরাজ করে..’- চারদিকেই গানের ঢেউ বয়ে যাচ্ছে।
সোমবার সকালে লালন আঁখড়াবাড়িতে দেখা গেল কাঙালিনী সুফিয়াকে। প্রায় ৬০ বছরের এই বাউল শিল্পী তার গানের সুরের মধ্য দিয়ে মাতিয়ে রেখেছেন ক্ষুদ্র গানের আসরকে। তার এই গানের আসরকে ঘিরে থ মেরে শুনছেন ভক্তরা। কাঙালিনী সুফিয়ার বয়স বেড়েছে, গায়ের তেজটাও নেই আগের মতো। এরপরও গাইছেন। যতটা সাধ্য তার।
দেশের দুর-দুরান্ত থেকে সাধুরা এসেছেন লালন আঁখড়াবাড়ীতে। এসে গাইছেন সাঁইজির গেয়ে যাওয়ার অমর সব গান। সাধু ফকির হাবিল উদ্দিন বলেন, ‘এখানে আমরা আসি আত্মার টানে। লালন তিরোধান দিবসের উৎসব শুরু হবে মঙ্গলবার তবে আমরা রোববার এসেছি। সাঁইজির গেয়ে যাওয়া অমর গান গাইছি, ভক্তরা সেগুলো শুনছে। আমরা গানের অর্থ বুঝিয়ে দিচ্ছি।’
ফকির নাদিম শাহ বলেন, ‘সাঁইজির গান গাওয়ার কোন সময় হয়না। যে কোন সময় সাঁইজির গান গাওয়া যায়। এর জন্য আনুষ্ঠানিকতার প্রয়োজন পড়ে না বাউল ভক্তদের। মুল বিষয় হলো সাঁইজির বাণী থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা এবং বাস্তবে কাজে লাগানো।’
লালন শাহ’র তিরোধান দিবস উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে লালন ৩দিন ব্যাপি অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন হবে। অনুষ্ঠান চলবে ১৮ অক্টোবর বৃহস্পতিবার পর্যন্ত।
রাইজিংবিডি/কুষ্টিয়া/১৬ অক্টোবর ২০১৮/কাঞ্চন কুমার/টিপু
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন