ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

যে প্রতিষ্ঠানের সকল কর্মীই অটিস্টিক!

মোখলেছুর রহমান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৪২, ৬ জানুয়ারি ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
যে প্রতিষ্ঠানের সকল কর্মীই অটিস্টিক!

মোখলেছুর রহমান : আমেরিকার লস অ্যাঞ্জেলেস ভিত্তিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ‘অটিকন’। লস অ্যাঞ্জেলেসের সমুদ্র তীরবর্তী শহর সান্তা মনিকাতে অবস্থিত এই প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানটি একটি অভূতপূর্ব দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। আর তা হলো, এই কোম্পানিটির সকল কর্মীই অটিস্টিক।

কোম্পানিটি মূলত সফটওয়্যার টেস্টিং এবং সফটওয়্যার এর ত্রুটি শনাক্তকরণের কাজ করে থাকে।

পূর্বে এটি ‘মাইন্ড স্পার্ক’ নামে পরিচিত ছিল যা পরবর্তীতে জার্মান ভিত্তিক কোম্পানি অটিকন কিনে নেয়। ২০১৩ সালে গ্রে বেনোইস্ট নামের এক আমেরিকান নাগরিক কোম্পানিটি চালু। গ্রে নিজেও দুই জন অটিস্টিক সন্তানের পিতা। তার দুটি ছেলেই জন্ম থেকেই অটিস্টিক। অটিস্টিক সন্তানের পিতা হিসেবে গ্রে খুব কাছ থেকেই দেখেছেন এ সমস্ত বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মানুষদের কর্মক্ষেত্রে কতটা প্রতিবন্ধকতার শিকার হতে হয়। কর্মক্ষেত্রে তাদের সুযোগ সুবিধা কতটা অপ্রতুল।

মূলত কর্মক্ষেত্রে নিজের সন্তানদের এ সমস্ত প্রতিবন্ধকতা থেকে দূরে রাখতেই গ্রে এই কোম্পানিটি খোলার উদ্যোগ নিয়েছিলেন।

বর্তমানে কোম্পানিটিতে ১৫০ জন কর্মী কাজ করছে। গ্রে’র বড় ছেলে বর্তমানে কোম্পানিটির ফিন্যান্স টিমে কাজ করছে। 
 


গ্রে নিজের এই উদ্যোগ সম্পর্কে বিবিসিকে বলেন, ‘অটিস্টিক হওয়া সত্ত্বেও আমার দুটি ছেলেই অবিশ্বাস্যরকম স্মার্ট এবং কার্যক্ষম। তাই আমার মনে হলো তাদেরকে এই অসাধারণ মেধা এবং কর্মক্ষমতা প্রকাশ করার সুযোগ দেয়া উচিৎ। আমি অনুভব করেছিলাম কর্মক্ষেত্রে অটিস্টিকদের সুযোগ সুবিধার এই সীমাবদ্ধতা দূর করতে আমার নিজেকেই কিছু করতে হবে। আসলে আমার কাছে এটি করা ছাড়া কোনো উপায়ও ছিল না। তাই কারো ভরসায় না থেকে নিজেই এই কোম্পানিটি দাঁড় করাই। আমার একমাত্র উদ্যেশ্য ছিল সমাজের এমন একটি অংশকে কর্মক্ষম করে তোলা যারা বিভিন্ন দিক থেকে প্রতিনিয়ত বঞ্চিত হচ্ছে। আমি চেয়েছিলাম অটিস্টিক শিশুরাও সমাজ এবং দেশের উন্নয়নে অবদান রাখুক।’

কোম্পানিটিতে কাজ করা পিটার নামের একজন অটিস্টিক যুবক জানান, এখানকার কাজের পরিবেশ খুবই ভালো। তারা এখানে শান্ত কিন্তু মজার এক পরিবেশে কাজ করেন। এখানে সমাজের অন্যান্য অংশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলার জন্য কোনো চাপ নেই।

অটিকোনের কর্মীরা শব্দ সংবেদনশীলতা এড়িয়ে চলতে চাইলে হেডফোন ব্যবহার করতে পারেন। তারা চাইলে অন্ধকার কক্ষে বসেও তাদের কাজ করতে পারেন। এমনকি যদি তারা না চায় তবে তাদের লাঞ্চ বিরতি না নিলেও কোনো সমস্যা নেই। কোনো কর্মী যদি অন্যদের সঙ্গে মৌখিকভাবে যোগাযোগ করতে সক্ষম না হন তবে ম্যাসেজিং অ্যাপ ব্যবহার করে টেক্সট বার্তা প্রেরণ করার মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারে।

তথ্যসূত্র : বিবিসি




রাইজিংবিডি/ঢাকা/৬ জানুয়ারি ২০১৯/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়