শতাধিক ইয়াবা ব্যবসায়ী টেকনাফে, আত্মসমর্পণের অপেক্ষা

কক্সবাজার প্রতিনিধি : আত্মসমর্পণের জন্য তালিকাভুক্ত শতাধিক ইয়াবা ব্যবসায়ীকে কক্সবাজারের টেকনাফ আনা হয়েছে।

শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় পাঁচটি বাসে করে তাদেরকে টেকনাফ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে আনা হয়। দুপুরে তাদের আত্মসমর্পণ করার কথা রয়েছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ও চিহ্নিত কক্সবাজারের শতাধিক ইয়াবা ব্যবসায়ী 'স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে এই আনুষ্ঠানিক আত্মসমর্পণ করতে যাচ্ছেন।

এ অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. জাবেদ পাটোয়ারী ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিনসহ প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।

আত্মসমর্পণকারী এসব ইয়াবা ব্যবসায়ীদের মধ্যে গত বছর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তৈরি সর্বশেষ তালিকায় শীর্ষ গডফাদার হিসেবে চিহ্নিত ৭৩ জনের অন্তত ৩০ জন রয়েছেন বলে পুলিশসহ সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

শনিবার সকালে টেকনাফ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সরকারের বিশেষ উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব ইয়াবা ব্যবসায়ীরা আত্মসমর্পণ করবেন জানান কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেন।

এসপি বলেন, ‘নিজেদের উদ্যোগে নিরাপদ হেফাজতে আসা তালিকাভুক্ত ও চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়ীদের আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠান আয়োজনে সার্বিক প্রস্তুতি শেষ হয়েছে।’



তিনি বলেন, ‘আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠান সফল করতে পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা গত এক সপ্তাহ ধরে কক্সবাজার অবস্থান করে সার্বিক প্রস্তুতির তত্ত্বাবধান করেছেন। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। এ ছাড়া, পুলিশের আইজিপি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব ও র‍্যাবের ডিজিসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।’

এসপি বলন, ‘ইয়াবা ব্যবসায়ীদের আত্মসমর্পণের মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার সম্মতি জানানোর পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বিশেষ উদ্যোগে জেলা পুলিশও তৎপরতা শুরু করে। এতে অনেক ইয়াবা ব্যবসায়ী সাড়া দিয়ে নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে নিরাপদ হেফাজতে আসে।’

তিনি বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত কক্সবাজারের ১ হাজার ১৫১ জন ইয়াবা ব্যবসায়ীর মধ্যে ১০২ জন আত্মসমর্পণে সম্মত হয়ে নিরাপদ হেফাজতে আসেন। সরকারি তালিকার শীর্ষ গডফাদার হিসেবে চিহ্নিত ৭৩ জনের মধ্যে ৩০ জনের বেশি ইয়াবা ব্যবসায়ী রয়েছেন আত্মসমর্পণকারীদের তালিকায়।’

প্রতীকী কিছু ইয়াবা জমা দিয়ে এসব ইয়াবা ব্যবসায়ী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আত্মসমর্পণ করবেন বলে জানান এসপি।

এসপি মাসুদ বলেন, ‘আত্মসমর্পণকারী ইয়াবা ব্যবসায়ীদের মধ্যে যাদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে সেগুলো স্বাভাবিক আইনের প্রক্রিয়ায় চলবে। যাদের কাছে অবৈধ সম্পদ আছে তাদের ব্যাপারে দুদকসহ সংশ্লিষ্টরা খতিয়ে দেখবেন। এ ছাড়াও আত্মসমর্পণকারীদের ব্যাপারে আরো কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ।’

ইয়াবা ব্যবসায় জড়িতরা যত প্রভাবশালীই হোক না কেন কেউ পার পাবে না বলে জানান এসপি।

রাইজিংবিডি/কক্সবাজার/১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯/সুজাউদ্দিন রুবেল/সাইফুল