ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

‘সবচেয়ে বিলাসবহুল জীবনযাপন করেন গার্মেন্টস মালিকরা’

মামুন খান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৩৭, ২৪ মে ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘সবচেয়ে বিলাসবহুল জীবনযাপন করেন গার্মেন্টস মালিকরা’

নিজস্ব প্রতিবেদক : গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের  সভাপতি শ্রমিকনেতা অ্যাডভোকেট মন্টু ঘোষ বলেছেন, এই দেশে সবচেয়ে বিলাসবহুল জীবনযাপন করেন গার্মেন্টস মালিকরা। কিন্তু শ্রমিকদের পাওনার কথা আসলে তারাই সবচেয়ে বিত্তহীন হয়ে যান।

শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ২০ রোজার মধ্যে বেসিকের সমপরিমাণ ঈদ বোনাস ও মে মাসের সম্পূর্ণ মজুরিসহ সকল বকেয়া পরিশোধের দাবিতে আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলে এ কথা বলেন তিনি।

মন্টু ঘোষের সভাপতিত্বে এবং শ্রমিকনেতা এমএ শাহীনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শ্রমিকনেতা জলি তালুকদার, কার্যকরি সভাপতি কাজী রুহুল আমীন, কেন্দ্রীয় নেতা সাদেকুর রহমান শামীম, দুলাল সাহা, দিলীপ নাথ, জালাল হাওলাদার, কে এম মিন্টু, মঞ্জুর মঈন, জয়নাল আবেদীন, কালিয়াকৈর আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি আমিনুল ইসলাম, রানা প্লাজা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ইমদাদুল ইসলাম, কারখানা শ্রমিক রীনা আক্তার, বাবুল হোসেন, মালেকা বেগম, শামীম আহমেদ প্রমুখ।

মন্টু ঘোষ বলেন, মালিকরা ঈদ উপলক্ষে কানাডা-আমেরিকা-মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান কেনাকাটা ও ঈদ উদযাপনের জন্য। প্রতি বছর ঈদ উৎসবের সময় গার্মেন্ট শ্রমিকরা উৎসব বোনাস থেকে বঞ্চিত হয়। ২০ রোজার মধ্যে বেতন বোনাস পরিশোধ করা না হলে ঈদের আগে শ্রমিকদের অনিশ্চয়তার মধ্যে ঠেলে দেওয়া হবে।

তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, বেসিকের সমান বোনাসের দাবি অন্যান্য বছরের মত এবারও যাতে সর্বত্র উপেক্ষিত না হয়। আগামী জাতীয় বাজেটে গার্মেন্ট শ্রমিকদের আবাসান, রেশনিং ও স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, যে শ্রমিকদের উদয়অস্ত শ্রমে আর অবদানে দেশের অর্থনীতি সচল আছে তাদের জন্য আজ পর্যন্ত কোনদিন পৃথক বরাদ্দ দেওয়া  হয়নি। অথচ মালিকরা কর রেয়াত, শুল্ক অবকাশসহ সকল প্রণোদনা ভোগ করেন।

জলি তালুকদার বলেন, কিছু কারখানায় বোনাস দেওয়া হলেও তা নামমাত্র, কখনো কখনো দান-খয়রাতের মত বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। দেশে জনপ্রশাসন ও সেবা খাতে এবং সরকারি-বেসরকারি নির্বিশেষে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী মূল মজুরির সমান উৎসব ভাতা পেয়ে থাকেন। অথচ সিংহভাগ রপ্তানি  আয়ের কারিগর, সর্ববৃহৎ উৎপাদন খাত গার্মেন্ট শিল্পের শ্রমিকরা বরাবরই বঞ্চিত।

তিনি আরো বলেন, একদেশে দুই নিয়ম চলতে পারে না। তিনি আগামী ২০ রোজার মধ্যে সকল গার্মেন্ট কারখানায় এক মাসের মূল মজুরির সমপরিমাণ ঈদ বোনাস পরিশোধের দাবি জানান। একই সাথে শ্রমিকরা যাতে কোনভাবেই বঞ্চিত না হয় সেজন্য সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠান সমূহকে তাদের দায়িত্ব অনুযায়ী সচেষ্ট হওয়ার দাবি জানান।

তিনি বলেন, গাজীপুরের ইন্ট্রামেক্স, ওয়ার্কফিল্ড, নারায়ণগঞ্জে এ আর জেড, কুমিল্লায় আসিফ গার্মেন্ট ও সিডি এক্রোলিক, রামপুরায় ড্রাগন সোয়েটার, নন্দীপাড়ায় সিসিলি, উত্তরায় অনলি ওয়ান ফ্যাশন, ম্যাডলেফ এপারেলস, পলমল গার্মেন্ট, টিআরজেড, রেভেনট্রেক, টপ জিন্স, ব্লু ঈগল, সুপারটেক্স এবং আশুলিয়ায় স্প্রিং সোয়েটার, সেঞ্চুরি গার্মেন্ট, ডং লেয়ার, পিএমএফ, মদিনা প্যাল ফ্যাশন কারখানাসহ কয়েকশ কারখানায় ইতোমধ্যে নতুন মজুরি কাঠামো বাস্তবায়ন না করা এবং কয়েক মাসের বকেয়া মজুরি নিয়ে শ্রমিক অসন্তোষ চলছে। তিনি ২০ রমজানের মধ্যে বেসিকের সমান ঈদ বোনাস ও মে মাসের সম্পূর্ণ মজুরিসহ সকল বকেয়া পরিশোধের দাবিতে শিল্পাঞ্চলসমূহে কর্মসূচি ঘোষণা করেন।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৪ মে ২০১৯/মামুন খান/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়