ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

২০০৩ বিশ্বকাপ : অস্ট্রেলিয়ার দাপট, কেনিয়ার চমক

আমিনুল ইসলাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:১০, ২৫ মে ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
২০০৩ বিশ্বকাপ : অস্ট্রেলিয়ার দাপট, কেনিয়ার চমক

ক্রীড়া ডেস্ক : দিন তারিখের হিসেব ফুরিয়ে আর মাত্র কয়েক দিন পরেই মাঠে গড়াবে আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০১৯। অংশগ্রহণকারী দলগুলো ইতিমধ্যে পা রেখেছে আয়োজক ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসের মাটিতে। নতুন বিশ্বকাপে উন্মাদনায় ভেসে যাওয়ার আগে একবার ফিরে তাকানো যাক ২০০৩ বিশ্বকাপের দিকে।

এই বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়া তাদের তৃতীয় ও টানা দ্বিতীয় শিরোপা জিতে। অজিরা ১৯৮৭ সালে প্রথমবার ফাইনালে উঠেই শিরোপা জিতে নেয়। এরপর তারা কেবল ১৯৯২ সালে ফাইনালে উঠতে পারেনি। এরপর ২০০৭ পর্যন্ত টানা ফাইনালে উঠেছে। তার মধ্যে ২০০৩ সালে শিরোপা জিতে তারা হ্যাটট্রিক পূর্ণ করে।

এই বিশ্বকাপে চমক দেখিয়েছিল কেনিয়া। তারা উঠে গিয়েছিল সেমিফাইনালে! অবশ্য সবচেয়ে বেশি ম্যাচ আয়োজনের কারণে এখনো স্মরণীয় এই বিশ্বকাপটি। ২০০৩ বিশ্বকাপে মোট ম্যাচ হয় ৫৪টি। যা এখনো পর্যন্ত বিশ্বকাপের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ। এই বিশ্বকাপে বাংলাদেশও অংশ নিয়েছিল। কিন্তু শূন্যহাতেই ফিরতে হয়েছিল।

২০০৩ সালে বিশ্বকাপের অষ্টম আসরের আয়োজক ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা, জিম্বাবুয়ে ও কেনিয়া। ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৪ মার্চ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত এই বিশ্বকাপে মোট ১৪টি দল অংশ নেয়।



এই বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া ১৪টি দলকে দুই গ্রুপে বিভক্ত করা হয়। গ্রুপ পর্বে সবাই সবার সঙ্গে খেলে। সেখান থেকে পয়েন্টের ভিত্তিকে শীর্ষে থাকা তিনটি করে মোট ছয়টি দল সুপার সিক্সে জায়গা করে নেয়। সেখানে আবার সবাই সবার সঙ্গে খেলে। পয়েন্টের ভিত্তিকে শীর্ষে থাকা চারটি দল খেলে সেমিফাইনাল। এরপর ফাইনাল।

অবশ্য প্রতিযোগিতার আয়োজক দক্ষিণ আফ্রিকা, পাকিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং ইংল্যান্ডের মতো দল এই বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিয়েছিল। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে গ্রুপ পর্বে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেলতে অস্বীকৃতি জানায় ইংল্যান্ড। তাতে ওয়াক ওভার পায় জিম্বাবুয়ে। সেই সুবিধা কাজে লাগিয়ে শেষ পর্যন্ত সুপার সিক্সে উঠে যায় জিম্বাবুয়ে।

আর বিদায় নেয় ইংল্যান্ড ও পাকিস্তানের মতো দল। জিম্বাবুয়ের সঙ্গে ‘এ’ গ্রুপ থেকে সুপার সিক্স নিশ্চিত করে অস্ট্রেলিয়া ও ভারত। ‘বি’ গ্রুপ থেকে শ্রীলঙ্কা, কেনিয়া ও নিউজিল্যান্ড সুপার সিক্সে জায়গা করে নেয়। নিউজিল্যান্ড নিরাপত্তা ব্যবস্থার উপর সন্তুষ্ট হতে না পারায় কেনিয়ার বিপক্ষে খেলেনি গ্রুপ পর্বে। সেখানে কেনিয়া ওয়াকওভার পায়। সে কারণে তারাও টিকিট পায় শেষ চয়ের। অন্যদিকে বিদায় নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, বাংলাদেশ ও কানাডা।



সুপার সিক্সে মাত্র ১ ম্যাচ জিতে নিয়মের সুবিধা কাজে লাগিয়ে সেমিফাইনালে উঠে যায় কেনিয়া। সেবারই প্রথম ও শেষবারের মতো সহযোগী কোনো দেশ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠেছিল। ৩ ম্যাচের তিনটি জিতে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে অস্ট্রেলিয়া, সমান ম্যাচ জিতে ২০ পয়েন্ট নিয়ে ভারত, ১ ম্যাচ জিতে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে কেনিয়া ও ১ ম্যাচ জিতে ১১.৫ পয়েন্ট নিয়ে শ্রীলঙ্কা সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে। নিউজিল্যান্ড ও জিম্বাবুয়ে বিদায় নেয়।

সেমিফাইনালে শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হয় অস্ট্রেলিয়া। বৃষ্টি আইনে ৪৮ রানে জিতে চতুর্থবারের মতো ফাইনালে নাম লেখায় অজিরা। অপর সেমিফাইনালে রূপকথার জন্ম দিতে যাওয়া কেনিয়াকে ৯১ রানে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালে ওঠে সৌরভ গাঙ্গুলির ভারত।

২৩ মার্চ জোহানেসবার্গের ওন্ডারার্স স্টেডিয়ামে ফাইনালে মুখোমুখি হয় অস্ট্রেলিয়া ও ভারত। ফাইনালে রিকি পন্টিংয়ের অপরাজিত ১৪০, ডেমিয়েন মার্টিনের অপরাজিত ৮৮ ও অ্যাডাম গিলক্রিস্টের ৫৭ রানে ভর করে ২ উইকেট হারিয়ে ৩৫৯ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করে অস্ট্রেলিয়া। যা বিশ্বকাপের ফাইনালে এখন পর্যন্ত দলীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহ।



জবাবে ৩৯.২ ওভারে ২৩৪ রানে অলআউট হয় যায় ভারত। তাতে অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রথম দল হিসেবে তৃতীয় শিরোপা ঘরে তোলে। আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের পর টানা দুইবার শিরোপা জিতে নেয়।

২০০৩ বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হয়েছিলেন ভারতের শচীন টেন্ডুলকার। তিনি করেছিলেন ৬৭৩ রান। সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি ছিলেন শ্রীলঙ্কার চামিন্দা ভাস। ২৩ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি।

 


রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৫ মে ২০১৯/আমিনুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়