ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

ভিকারুননিসায় ভর্তি নিয়ে বিপাকে অভিভাবকরা

আবু বকর ইয়ামিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:২৫, ২৯ জানুয়ারি ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ভিকারুননিসায় ভর্তি নিয়ে বিপাকে অভিভাবকরা

আবু বকর ইয়ামিন : শিক্ষাবর্ষের প্রথম মাস প্রায় শেষ। অথচ এখনও সন্তানকে ভর্তি করাতে পারেননি। এ নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা থাকলেও প্রতিকারের উপায় খুঁজে পাচ্ছেন না অভিভাবকরা। রাজধানীর বেইলি রোডে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রধান শাখায় গিয়ে এ চিত্র মিলেছে।

ভুক্তভোগী অভিভাবকরা জানান, স্কুল পর্যায়ে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের নিয়ে তারা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। তাদের অনেকের সন্তানই এ প্রতিষ্ঠানে প্রথম শ্রেণি থেকে অধ্যয়ন করছে। বিগত পরীক্ষাগুলোতে ফলাফল সন্তোষজনক হলেও যে কোন কারণেই হোক এবার কিছুটা খারাপ হয়েছে। অথচ এ সমস্যা সমাধানে তারা কোনো উপায় খুঁজে পাচ্ছেন না। এমনকি বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য কোনো শিক্ষকের সাক্ষাতও মিলছে না।

অভিভাবকদের অভিযোগ, সন্তান লেখাপড়ায় অমনোযোগী বা পিছিয়ে পড়ার বিষয়টি বিদ্যালয় থেকে কখনও অবহিত করা হয়নি। বছর শেষে পরীক্ষার ফলাফল দেখে তারা সন্তানের পরিণতি জানতে পারেন। তখন কিছুই করার থাকে না।

শিক্ষকদের বিরুদ্ধে একগুয়ে মনোভাবের অভিযোগ তুলে কয়েকজন অভিভাবক বলেন, দেশ সেরা বিদ্যাপীঠ হওয়ার কারণে এখানকার শিক্ষকদের মধ্যে অহংবোধ জেঁকে বসেছে। এ কারণে এই প্রতিষ্ঠানে সন্তান ভর্তি করাতে যতো কষ্ট, তার চেয়ে বেশি কষ্ট কোনো শিক্ষকের সাক্ষাত লাভ করার ক্ষেত্রে। কোনো কোনো শিক্ষকের বিরুদ্ধে রয়েছে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ। এমনকি শিক্ষার্থীর সমস্যা নিয়ে কথা বলারও সুযোগ নেই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন অভিভাবক জানান, বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর অনেকে তাদের সন্তানের পড়ার মান নিয়ে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলতে যান। কিন্তু শ্রেণি শিক্ষক, বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক কিংবা প্রধান শিক্ষক কারো দেখা পাননি। এমনকি ফটকও খোলা হয় না। ফটকে নিরাপত্তা কর্মীর সাফ জবাব, ‘প্রধান শিক্ষকের নির্দেশ রয়েছে।’ কেউ কৌশলে ভেতরে প্রবেশ করে শিক্ষকের দর্শন পেলেও অসৌজন্যমূলক আচরণ করে তাকে বিদায় দেওয়া হয়েছে। এমনকি কোন কোন অভিভাবকের উপস্থিতিতে নিরাপত্তা কর্মী-অফিস সহকারীকে ডেকে এনে ‘কীভাবে ভেতরে প্রবেশ করলো’ জানতে চেয়ে বকাঝকা করা হয়েছে।

বিদ্যালয়ের টেলিফোনটিও (নং ৫৮৩১০৫০০) অনেকদিন ধরে অচল। এর মধ্যে প্রধান শিক্ষক জিনাত আক্তারের বিরুদ্ধে অভিযোগ বেশি। মাসাধিককাল ধরেই তিনি নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসেন না। আর এলেও কিছু সময় থেকে চলে যান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই বলেছেন, প্রধান শিক্ষক তার অন্তঃস্বত্বা মেয়ের পাশে থাকার জন্য স্কুলের বাইরে বেশি সময়  কাটাচ্ছেন। আর এ জন্য শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের দুর্ভোগের অন্ত নেই। বিশেষ করে শিক্ষাবর্ষ শুরুর প্রথম দিকে ভর্তিসহ নানা আনুষ্ঠানিকতা থাকে। কিন্তু প্রধান শিক্ষক গরহাজির থাকায় সকলকে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।

অভিভাবকরা আরো বলেছেন, স্কুল পর্যায়ে বিভিন্ন শ্রেণির একাধিক শিক্ষার্থীর ফলাফল পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সব বিষয়ে তাদের ফলাফল ‘এ’ ‘এ মাইনাস’ গ্রেডের। কিন্তু কোনো একটি বিষয়ে অকৃতকার্য হয়েছে। এ কারণে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ওই শিক্ষার্থীকে পরবর্তী শ্রেণিতে উত্তীর্ণ করাচ্ছে না। এ অবস্থায় বছরের প্রথম মাস পেরিয়ে গেলেও অনিশ্চয়তায় ভুগছেন তারা। শিক্ষার্থীর এক বছর নষ্ট হওয়া ছাড়াও তার উপর মানসিক প্রভাব পড়ার বিষয়টি শিক্ষকদের সামনে তুলে ধরা হলেও শিক্ষকদের তরফ থেকে সেটিকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে না। এ ব্যাপারে অভিভাবকরা শিক্ষামন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৯ জানুয়ারি ২০১৭/ইয়ামিন/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়